সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: মেঘালয়ের মধুচন্দ্রিমায় ঘটে গেল এক ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড (Meghalaya Murder Case)! হ্যাঁ, মেঘালয়ের জঙ্গলে সদ্য বিবাহিত এক যুবকের দেহ উদ্ধার হয়েছে। কার্যত শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা এলাকায়। আসলে যে গল্পটা ভালোবাসা দিয়ে শুরু হয়েছিল, তা নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডে পরিণত হলো। আর তদন্তে উঠে এসেছে এক নারকীয় ষড়যন্ত্র। হ্যাঁ, খুনের পিছনে আর কেউ নন। তিনি ওই যুবকের সদ্য বিবাহিত স্ত্রী সোনম!
প্রেম থেকে পরকীয়া করে খুন
বেশ কয়েকটি সূত্র খতিয়ে জানা গেল, রাজা রঘুবংশী ইন্দোরের একজন সাধারণ যুবক ছিলেন। তিনি সোনম নামের 24 বছরের এক তরুণীকে বিয়ে করেছিলেন। বিয়ের পর হানিমুনের ঠিকানা হিসেবে মেঘালয়কে বেছে নিয়েছিলেন তারা। কিন্তু সেই সফরেই শেষ হয়ে যায় সবকিছু। মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, 23 মে হঠাৎ করেই নিখোঁজ হয়ে যান ওই নবদম্পতি।
এরপর পরিবার এবং পুলিশের তরফ থেকে তল্লাশি শুরু হয়। সন্দেহ দানা বাঁধে, হয়তো কোনও অপহরণ বা সীমান্ত পেরিয়ে পাচার হয়ে গিয়েছে। এমনকি কেউ কেউ বলছিল, জঙ্গলে হয়তো দুজন হারিয়ে গিয়েছে। তবে পুলিশ এবং স্থানীয় এক টুরিস্ট গাইডের বক্তব্যে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গিয়েছিল, সোনম এবং রাজা ছাড়াও সেদিন তাদের সঙ্গে আরও তিনজন পুরুষকে দেখা গিয়েছিল।
কীভাবে ফাঁস হল এই খুনের ঘটনা?
ঘটনার প্রায় 10 দিন পর অর্থাৎ 2 জুন, এক পর্যটক জঙ্গলের খাদে একটি মৃতদেহ দেখতে পায়। পরে জানা যায় যে, সেটি রাজারই মৃতদেহ। আর সোনমের কোনও হদিশ নেই। সন্দেহ যখন ক্রমশ বাড়তে থাকে, এমন সময় একটি ফোন কল আসে। হ্যাঁ, সোনম তার পরিবারকে ফোন করে উত্তরপ্রদেশের গাজীপুর থেকে।
আর সেই ফোনই হয়ে ওঠে তদন্তের মোড়। হ্যাঁ, সোনমের লোকেশন জানার পর ইন্দোর পুলিশ দ্রুত যোগাযোগ করেছিল গাজীপুর পুলিশের সঙ্গে। আর সেখান থেকেই সোনমকে গ্রেফতার করা হয় এবং ধীরে ধীরে হত্যার রহস্যে জাল বাইরে বেরিয়ে আসতে থাকে।
সোনমের স্বীকারোক্তি
পুলিশ যখন সোনমকে জেরা করে, তখন সে জানায়, বিয়ের আগেই রাজ কুশওয়াহা নামের এক যুবকের সঙ্গে তার অবৈধ সম্পর্ক ছিল। তবে পরিবারের চাপে রাজা রঘুবংশীর সঙ্গে তিনি সাত পাকে বাঁধা পড়েন। আর সেই সম্পর্ক তিনি মেনেও নিতে পারেনি। তাই স্বামীকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা সেরে ফেলেন মনে মনে।
আরও পড়ুনঃ ২৫ তারিখ ডেডলাইন! রেশন নিয়ে বিরাট সিদ্ধান্ত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের
মধুচন্দ্রিমার নাম করে মেঘালয়ে গিয়ে তিনি সেখানে ভাড়াটে খুনিদের সহায়তায় রাজাকে মেরে খাঁদে ফেলে দিয়েছিল। পুলিশের দাবি, এই কাজের জন্য তিনি মধ্যপ্রদেশ থেকে কন্ট্রাক্ট কিলারদের ভাড়া করে নিয়ে গিয়েছিল। শুধু তাই নয়, হত্যার কয়েকদিন আগে তারা একসঙ্গে স্বাভাবিক সময় কাটিয়েছে, যাতে কোনোরকম সন্দেহ না হয়।
পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যেই সোনম সহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মেঘালয় পুলিশের ডিজিপি জানিয়েছে, সোনম নিজেই এই হত্যাকাণ্ডের মূল চক্রী ছিল। নিজের প্রেমের সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে নিজের স্বামীকেই শেষ করেছে এই কুলাঙ্গার মেয়ে।