প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: স্মার্ট মিটার (Smart Meter) স্থাপনের পর থেকেই বিভিন্ন জেলা থেকে বিদ্যুতের বিল কয়েকগুণ বেশি আসার অভিযোগ উঠে আসছিল। কিছুদিন আগেই হুগলির ব্যান্ডেলের এক গ্রাহকের বাড়িতে, স্মার্ট মিটার বসানোর পর তাঁর এক মাসের বিল ১ হাজার টাকা থেকে বেড়ে ১২ হাজার টাকা এসেছিল। এছাড়াও অনেকের বাড়িতেই এমন ধরনের নানা সমস্যা দেখা দিয়েছিল। যা নিয়ে রাজ্যে তীব্র শোরগোল শুরু হয়ে গিয়েছিল।
স্মার্ট মিটার নিয়ে তীব্র বিক্ষোভ
বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও সাধারণ মানুষের সঙ্গে গলা মিলিয়ে এই স্মার্ট মিটার ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে সরকারের সমালোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ দফতর ঘেরাও করে বিক্ষোভও দেখানো হয়েছে। আর সেই কারণে এবার বড় সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। জানা গিয়েছে রাজ্যে স্মার্ট মিটার বসানো নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে যে নানা বিতর্ক এবং তীব্র ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে তার জন্য বাধ্য হয়ে পিছু হটল রাজ্য বিদ্যুৎ দফতর। আপাতত স্মার্ট মিটার বসানো স্থগিত রাখতে চলেছে সরকার।
ইনস্টলেশন বন্ধের বিজ্ঞপ্তি রাজ্য সরকারের
সম্প্রতি রাজ্য বিদ্যুৎ দফতরের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে যে, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, সরকারি দফতর এবং টেলিকমিউনিকেশন টাওয়ারের মতো জায়গায় ‘সফল ভাবে’ স্মার্ট মিটার লাগানো হয়েছে। এমনকি তিন-চারটি জেলায় কিছু সংখ্যক উপভোক্তার বাড়িতেও পরীক্ষামূলক ভাবে স্মার্ট মিটার বসানো হয়। কিন্তু তা নিয়ে বেশ কিছু অভিযোগ পেয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার জন্য আপাতত উপভোক্তাদের বাড়িতে স্মার্ট মিটার বসানো বন্ধ রাখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা, কিছুতেই হচ্ছে না স্ক্যান! মেট্রোর QR কোডের টিকিটে বাড়ছে যাত্রী দুর্ভোগ
উল্লেখ্য, এই স্মার্ট মিটার বসানোর কাজ শুরু হয়েছিল কেন্দ্রের নির্দেশিকা মেনেই। বলা হয়েছিল, এই মিটারগুলি বিদ্যুৎ খরচ, ভোল্টেজ লেভেল ইত্যাদি রেকর্ড করে সরাসরি বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থার কন্ট্রোল রুমে পাঠিয়ে দেবে। এমনকী, এই মিটারগুলি প্রিপেইড পদ্ধতিতে কাজ করবে। আর তাতেই গ্রাহকদের উদ্বেগ আরও বেড়ে গিয়েছিল। রিচার্জ শেষ হয়ে গেলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার মতো বিষয়গুলিও গ্রাহকদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছিল।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই এই সিদ্ধান্ত!
প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই প্রায় ১ লক্ষ ৬০ হাজার স্মার্ট মিটার স্থাপন করা হয়েছে। যার মধ্যে প্রায় ৬৫ শতাংশ গৃহস্থ বাড়িতে বসানো হয়েছিল। অবশিষ্ট ৩৫ শতাংশ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু এই মিটারে অতিরিক্ত বিল আসার অভিযোগে কিছুদিন আগে বারাসাতের চাঁপাডালি মোড়ে স্মার্ট মিটার নিয়ে ওঠা অভিযোগ সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে পৌঁছয়। এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী বিদ্যুৎ দফতরকে দ্রুত এই বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করার নির্দেশ দেন এবং সেই কারণেই রাজ্যের বিদ্যুৎ দফতর এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করল।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।