বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: মিয়ানমারে বিরাট ধাক্কা খেল চিন! আসলে ওদেশে সেনাবাহিনী ও বিরোধী গোষ্ঠীগুলির মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালীন আচমকা চিনা যুদ্ধবিমান গুলি করে মাটিতে নামায় মিয়ানমারের (Myanmar) বিরোধী গোষ্ঠীর সশস্ত্র বাহিনী। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে যা খবর, মিয়ানমার সেনার তরফে চিনা যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে বিরোধী গোষ্ঠীগুলির ওপর বোমাবর্ষণ করা হয়েছিল। তবে মঙ্গলবার বিরোধীপক্ষের সশস্ত্র বাহিনী সেনাবাহিনীর ওই চিনা বিমানগুলিকে গুলি করে ভূপাতিত করে। যার দাম ছিল কমপক্ষে 72 কোটি টাকা।
মিয়ানমারে বেহাল দশা চিনা যুদ্ধবিমানের
সম্প্রতি অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের তরফে পিপলস লিবারেশন আর্মির তরফে বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, মিয়ানমার সেনাবাহিনী চিনা যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির ওপর বোমাবর্ষণ করছিল। আর ঠিক সেই সময়ে চিনের ওই যুদ্ধবিমান গুলি করে মাটিতে নামিয়ে আনে মিয়ানমার সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। যদিও সে বিষয়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তরফে কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি আসেনি।
এতে চিনের ক্ষতি কোথায়?
পিপলস লিবারেশন আর্মির দাবি অনুযায়ী, তারা শুধুমাত্র মেশিনগান ও গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সাথে লড়াই করেছে। বর্তমানে তাদের কাছে কোনও রকম আধুনিক যুদ্ধাস্ত্র নেই। এমতাবস্থায়, আদতেই যদি লিবারেশন আর্মির সশস্ত্র বাহিনী চিনা যুদ্ধ বিমান ধংস করে থাকে, তবে সেক্ষেত্রে এই ঘটনা গোটা বিশ্বে চিনা অস্ত্রের বিশ্বাসযোগ্যতার ওপর বিরাট আঘাত হানবে।
বলা বাহুল্য, 2023 সালে মিয়ানমারকে 1 বিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে এই যুদ্ধাস্ত্র দিয়েছিল চিন। তবে শুধুই মিয়ানমার নয়, পাকিস্তান থেকে শুরু করে একাধিক দেশে অস্ত্র সরবরাহ করে ড্রাগনের দেশ। আর এখানেই উঠছে প্রশ্ন! বহু বিশেষজ্ঞ বলছেন, চিনের যুদ্ধবিমান যদি সাধারণ অস্ত্রের গুলিতেই ঘায়েল হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে চিনা অস্ত্রের ওপর বিশ্বাসযোগ্যতা কীভাবে থাকবে?
প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান
বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম সূত্রে যা খবর, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সাথে বিরোধী গোষ্ঠীগুলির সংঘর্ষ চলাকালীন চিনা যুদ্ধবিমানের ভূপাতিত হওয়ার ঘটনা বর্ণনা করেছেন এক প্রত্যক্ষদর্শী। স্থানীয় এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি জানান, শুধুমাত্র একটি মেশিনগান ব্যবহার করে চিনা যুদ্ধবিমানটিকে গুলি করে মাটিতে নামানো হয়েছে। ওই প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, 0.50 ক্যালিবার M2 ব্রাউন্ডিং মেশিনগান ব্যবহার করে বিমানটিকে মাটিতে নামিয়ে এনেছিল সশস্ত্র গোষ্ঠীর জঙ্গিরা।
অবশ্যই পড়ুন: প্রস্তুতি ম্যাচে পরাস্ত, হংকংয়ের কাছে হার! এশিয়ান কাপে বাংলাদেশের থেকেও পিছিয়ে ভারত
উল্লেখ্য, বেশ কয়েকটি রিপোর্ট অনুযায়ী, গত 4 জুন, সাগাইংয়ের পালি টাউনশিপে অবস্থিত কান ডাউক পুলিশ স্টেশন দখলের জন্য এক বিরাট অভিযান শুরু করেছিল লিবারেশন আর্মির সদস্যরা। আর ঠিক ওই সময়ে নাকি, চিনা যুদ্ধবিমান থেকে ভারী বোমাবর্ষণ করতে শুরু করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। আর সেই হামলার প্রতিশোধ হিসেবে শুধুমাত্র মেশিনগান ব্যবহার করে চিনের ওই যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা।