প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: এবার ছেলে মেয়ের মধ্যে বিভাজন তৈরি করতে চলেছে রাজ্য সরকার! বিবাহিত হলেই আইনি অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে মেয়েরা, রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে এবার সরাসরি প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। বাবা-মায়ের সম্পত্তিতে যেমন ছেলেমেয়ে সকলের সমান অধিকার রয়েছে, ঠিক তেমনই সরকারি সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রেও লিঙ্গ বিভাজন করা যায় না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন বিচারপতি। বিপাকে রাজ্য সরকার।
ঘটনাটি কী?
ঘটনা সূত্রে জানা গিয়েছে, বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পকে ঘিরে বেশ বিতর্ক তৈরি হয়েছিল জমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে। সেই সময় রাজ্য সরকার এই প্রকল্প রূপায়ণের জন্য জমি প্রদানকারীদের জন্য একাধিক পুনর্বাসন ও চাকরির পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল। সেই সময় রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছিল যে, জমিদাতার পরিবারে যদি কোনও বেকার সন্তান থাকেন, তবে তিনি ‘এক্সেম্পটেড কোটায়’ চাকরির জন্য নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন।
আইনি অধিকার নিয়ে মামলা উঠল হাইকোর্টে!
এদিকে রাজ্য সরকারের এই ঘোষণার পরেই এক বিবাহিত মহিলা, যিনি একজন জমিদাতার কন্যা, রাজ্যের শ্রম দফতরে চাকরির জন্য আবেদন করেন। কিন্তু দফতরের তরফে তাঁকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, কোটার সুবিধা শুধুমাত্র ছেলে ও অবিবাহিত মেয়েদের জন্যই প্রযোজ্য, বিবাহিত মেয়েরা এর আওতায় পড়বেন না।
তখন রাজ্যের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) মামলা করেন ওই মহিলা। সেই সময় হাইকোর্টের একক বেঞ্চ মামলাকারীর পক্ষে রায় দেয়। রাজ্য সরকারকে সরাসরি জানিয়ে দেওয়া হয় যে প্রশাসন কোনও ভাবেই লিঙ্গ বা বিবাহিত-অবিবাহিত বিভাজন করে সুযোগ-সুবিধা বণ্টন করতে পারে না।
কড়া ভর্ৎসনার মুখে রাজ্য সরকার!
এছাড়াও আদালতের তরফে আরও জানানো হয় যে বাবা-মায়ের সম্পত্তিতে যেমন ছেলে-মেয়ের সমান অধিকার থাকবে ঠিক তেমনই সরকারি কোটার ক্ষেত্রেও এই বৈষম্য গ্রহণযোগ্য নয়। এদিকে রাজ্য সরকার এই রায় মানতে অস্বীকার করে এবং ডিভিশন বেঞ্চে যায়। সেখানেও সরকারের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। এদিকে আদালতের রায় কার্যকর না হওয়ায়, মামলাকারী আদালত অবমাননার অভিযোগে নতুন মামলা দায়ের করেন। আর সেই মামলায় ফের বিচারপতির কড়া ভর্ৎসনার মুখে পড়ল মমতা সরকার।
আরও পড়ুন: স্কুলে দু’দিনের গরমের ছুটি নিয়ে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তে বিতর্ক, উঠল অন্য দাবি
সূত্রের খবর, গত বৃহস্পতিবার আদালত অবমাননার মামলার শুনানি ওঠে বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে। সেখানে মামলাকারীর সমস্ত অভিযোগ শোনার পর কড়া ভাষায় তিনি বলেন, “রাজ্য সরকার কি এবার নারী-পুরুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি করতে চাইছে? কেন বিবাহিত মেয়েদের বঞ্চিত করা হবে অধিকার থেকে? যুক্তি দেওয়া হোক।”
জানা গিয়েছে, আগামী ১০ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। সেদিনই ডিপার্টমেন্ট অফ এমপ্লয়েমেন্ট-এর সংশ্লিষ্ট আধিকারিককে সশরীরে হাজির হয়ে আদালতের কাছে ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |