সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ভাই ফোন করে বলেছিল, ওরা আমাকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে! হ্যাঁ, কথাগুলো বলার সময় শুধু মনের মধ্যে অসহায়তা আর চোখের জল ঠেলে বেরচ্ছিল মুজিবুর শেখের। জানা গেল, তিনি মেহবুব শেখের ভাই, যাকে সমস্ত ডকুমেন্ট থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারী (Bangladeshi Infiltrator) সন্দেহে ওপার বাংলায় পাঠিয়ে দিয়েছে পুলিশ! কিন্তু আসল ঘটনাটি কী? কেনই বা তাকে মিথ্যা সন্দেহে ঠেলে ওদেশে পাঠানো হল?
কে এই মেহবুব শেখ?
খোঁজ নিয়ে জানা গেল, মুর্শিদাবাদের ভাগবনগোলা ব্লকের মহীষাস্থলী গ্রাম পঞ্চায়েতের হোসেইননগর গ্রামের বাসিন্দা মেহবুব শেখ। তার বয়স 36। তিনি পেশায় একজন মিস্ত্রি। গত দুই বছর ধরে কর্মসূত্রে মহারাষ্ট্রের থানে জেলার মীরা রোড এলাকায় তিনি থাকতেন বলে খবর। সাধারণভাবেই তিনি জীবন কাটাচ্ছিলেন। স্ত্রী আর তিন সন্তানকে নিয়ে সুখের সংসার ছিল তার।
ঘটনার শুরু এক চায়ের দোকান থেকে
গত 11 জুন, বুধবারের ঘটনা। মেহবুব শেখ প্রতিদিনের মতো এক স্থানীয় দোকানে চা খাচ্ছিলেন। হঠাৎ করেই মীরা রোড থানার পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তিনি নাকি বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারী! এমনকি তিনি বাড়িতে ফোন করে বিষয়টি জানান। সঙ্গে সঙ্গে তার ভাই মুজিবুর শেখ ও স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান, প্রশাসন এমনকি রাজ্যের অভিবাসী কল্যাণ বোর্ড সেখানে উপস্থিত হয়।
তার পরিবার জানায়, তার কাছে বৈধ ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, রেশন কার্ড, পঞ্চায়েত স্বীকৃত সার্টিফিকেট, সবই আছে। এমনকি তিনি পুলিশকে সবকিছু দেখানও। সবই ছিল মেহবুবের ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণ। তবুও তাকে বরদাস্ত করা হল না!
এর পরের ঘটনা জানলে শিউরে উঠবেন
ঘটনার দু’দিন পর অর্থাৎ, 13 জুন পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ জানতে পারে মেহবুবকে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর হেফাজতে রাখা হয়েছে। তাও শিলিগুড়ির একটি ক্যাম্পে। সেখানে গিয়ে পরিবারের সদস্যরা অনুরোধ করলেও বিএসএফ তাদের কথা নাকি পাত্তাই দেয়নি। আর ঠিক তার পরের দিন অর্থাৎ, 14 জুন, শনিবার ভোরবেলা মেহবুব নিজেই ফোন করে বলেন, আমাকে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ আদানির নির্ভরতা কমাতে নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করবে বাংলাদেশ, ভরসা সেই ভারত
সূত্র মারফত খবর, তিনি নাকি ওপার বাংলার অজানা এক গ্রামে আশ্রয় নিয়ে কাঁদতে কাঁদতেই ফোন করছিলেন। এমনকি তিনি বলেন, আমি এখন কি করবো! ওখানে আমার কেউ নেই, আমি ভারতীয়। আমার তিন সন্তান এবং স্ত্রী ভারতে রয়েছে!
তবে এই ঘটনা নিয়ে মীরা রোড থানার সিনিয়র ইন্সপেক্টর মেঘনা বুরাডে বলেছেন, আমরা আধার বা প্যান কার্ডকে নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে বিবেচনা করি না। কারণ এগুলো জাল করাও সম্ভব। মেহবুব তার জন্ম সার্টিফিকেট বা অন্য কোনও প্রমাণপত্র দেখাতে পারেনি। আর সেকারণেই তাকে ওপারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে!
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |