প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: পেশায় তিনি একজন ডোমজুরের ছাপোষা কারখানার এক সাধারণ শ্রমিক। মাস গেলে তাঁর আয় মাত্র সাড়ে 9 হাজার টাকা। এক কথায় বলতে গেলে আজকের দিনে এই টাকায় সংসার চালানো একপ্রকার দুষ্কর। এদিকে কিছুদিন আগেই তিনি সদ্য বাবা হয়েছেন। স্ত্রী এখনও পুরোপুরি সুস্থ নন। অথচ সেই শ্রমিকের নামেই নাকি GST বিল এসেছে 7 কোটি টাকা (GST Raid In Domjur)! চোখ কপালে উঠল শ্রমিক সহ গোটা পরিবারের।
ঘটনাটি কী?
জানা গিয়েছে, ডোমজুড়ের খাটোরা এলাকার বাসিন্দা 25 বছরের কার্তিক রুইদাস সেখানকার এক জালান কমপ্লেক্সের ছোট কারখানায় কাজ করেন। মাসিক আয় মাত্র সাড়ে 9 হাজার টাকা। কোনো রকমেই এই টাকায় সংসার চলে তাঁর। কিন্তু এই সামান্য মাসিক আয় নিয়েও এবার উঠে এল বড় ঝটকা!
গত বৃহস্পতিবার কার্তিক যখন কারখানায় কাজ করছিলেন, তখন পরিবারের কাছ থেকে ফোনে খবর পান তাঁর বাড়িতে রাজ্য জিএসটি অফিসের ছয় সদস্যের একটি দল হানা দিয়েছে। আর এই খবর পাওয়া মাত্রই তড়িঘড়ি সাইকেলে চেপে কারখানা থেকে বেরিয়ে বাড়ির উদ্দেশে ছুটে যান কার্তিক।
প্রতি মাসে 36 কোটি টাকা আদানপ্রদান হয়!
এদিকে বাড়ি ফিরেই হতবাক হয়ে পড়েন কার্তিক রুইদাস। জিএসটি দফতরের ছ’জনের একটি টিম তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালাচ্ছে। বাড়ির প্রতিটি কোণা খুঁটিয়ে দেখছেন তাঁরা। তখনই জিএসটি আধিকারিকেরা কার্তিককে জানান, তাঁর নামে নাকি 7 কোটি টাকা GST বাকি রয়েছে। আর তাতেই মাথায় বাজ পড়ে এই কারখানার শ্রমিকের।
শুধু তা-ই নয়, কার্তিক নাকি কেডি এন্টারপ্রাইজ নামে একটি কোম্পানির মালিক। এবং তাঁর নামে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রতি মাসে 36 কোটি টাকা আদানপ্রদান হয়। এদিকে কার্তিকের বিরুদ্ধে এইরূপ অভিযোগ শুনে রীতিমত বাকরুদ্ধ গোটা পরিবার এবং প্রতিবেশী।
আরও পড়ুন: ‘নিজের মর্জিমাফিক কাজ করে তাহলে…’ রাজ্য সরকারের উপর ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট
জালিয়াতির ফাঁদে শ্রমিক!
তবে যার ভাঙা ঘর, রোজ দু’বেলা খাবার জোটাতে যিনি হিমশিম খান, তিনি যে কোটি কোটি টাকার ব্যবসায়ী হতে পারেন না, তা স্পষ্ট আন্দাজ করতে পেরেছেন GST আধিকারিকরা। এদিকে কার্তিকও আধিকারিকদের সামনে দাঁড়িয়ে বারবার বলছিলেন, তিনি তো কারখানায় কাজ করেন, তাঁর নামে কোনও কোম্পানি থাকার প্রশ্নই ওঠে না।
তখনই তদন্তকারীরা সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখে বুঝতে পারেন, যে GST পোর্টালে যেসব মোবাইল নম্বর দেওয়া রয়েছে, সেগুলি আসলে ভুয়ো। প্যান কার্ড, আধার, ঠিকানা সবই আসল থাকলেও, তথ্য দেওয়া মোবাইল নম্বর আলাদা। অর্থাৎ এর থেকেই স্পষ্ট, কার্তিকের পরিচয়পত্রের তথ্য ব্যবহার করে কেউ তাঁকে ফাঁদে ফেলেছে।
তদন্ত শুরু পুলিশের
অফিসারদের মুখে একের পর এক তাজ্জব কথা শুনে চোখ কপালে ওঠে কার্তিকের। তিনি সময় নষ্ট না করে সঙ্গে সঙ্গে ডোমজুড় থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এমনকি হাওড়া সিটি পুলিশের সাইবার সেলেও অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশের তরফে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
এই ঘটনার পিছনে কোনও সংঘটিত অপরাধ চক্র আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, মাস দেড়েক আগে কার্তিকের এক সন্তান হয়েছে। এর মধ্যে GST আধিকারিকদের হানায় আতঙ্কে গোটা পরিবার।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |