সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: বিদ্যুৎ খাতে এবার বিরাট সিদ্ধান্ত নিল ওপার বাংলার (Bangladesh) সরকার। জানা গেল, নেপাল থেকে 500 মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির পরিকল্পনা আপাতত বাতিল হয়েছে। একই সঙ্গে ভারতের সাথে যৌথভাবে আন্তঃদেশীয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, সেটিও বাস্তবায়নের পথে এগোচ্ছে না ইউনূস সরকার।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু হঠাৎ করে কেন এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? এ নিয়ে বিতর্কের দানা বাঁধছে দেশের অন্দরমহলে। একদিকে আমদানির খরচ, আর অন্যদিকে ক্যাপাসিটি চার্জের বোঝা নিয়ে চাপের মধ্যে সরকার! আর ঠিক তখনই এরকম সিদ্ধান্ত! নেপথ্যে কারণ কী? চলুন জেনে নিই।
বিদ্যুৎ আমদানি থেকে পিছিয়ে আসার মূল কারণ কী?
ওপার বাংলার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মোঃ রেজাউল করিম এদিন জানিয়েছেন, বর্তমানে দেশে বিদ্যুৎ আমদানির ক্ষেত্রে বিশেষ ক্ষমতা আইন কার্যকর করা হচ্ছে না। আর এই আইন না থাকার ফলে আগের মত দায়মুক্তির সুবিধা নিয়ে মোটা অংকের বিদ্যুৎ আমদানির সিদ্ধান্ত আপাতত নেওয়া হচ্ছে না। তার মতে, এই আইনের অভাবে সরকার অতিরিক্ত খরচ করে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন তৈরি করতে চাইছে না। নাহলে দেশের অর্থনৈতিক খাতে বিরাট প্রভাব পড়বে।
বলে রাখি, 2019 সালে ভারতের জিএমআর গ্রুপের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিল বাংলাদেশ। পরিকল্পনা ছিল, নেপালের 900 মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে 800 মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশে আমদানি করতে হবে। এমনকি সেই বিদ্যুৎ আসার কথা ছিল ভারতের ট্রান্সমিশন লাইন ব্যবহার করে।
এদিকে 2023 সালের শেষের দিকে ত্রিপক্ষীয় এক চুক্তির হওয়ার কথা ছিল। আর সেখানে প্রতিনিধিত্ব করতো পিডিবি, ভারতের এনটিপিসি বিদ্যুৎ ভেপার নিগম এবং জিএমআর। কথা ছিল, এই চুক্তির মাধ্যমে 2030 সাল থেকে 25 বছরের জন্য বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। তবে সেসব কিচ্ছু হয়নি।
রাজনৈতিক পালা বদলের জেরেই এহেন অবস্থা?
সূত্র বলছে, ছাত্র আন্দোলনের জেরে ক্ষমতা পরিবর্তনের পর ওপার বাংলার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিতর্কিত বিষয় হিসেবে ক্ষমতা আইন বিলুপ্ত করে। তার ফলে যে সমস্ত প্রকল্প এই আইনের আওতায় চূড়ান্ত হয়েছিল, তা নতুন করে পর্যালোচনা করতে হয়। আর সে কারণেই ভারত-বাংলাদেশ সংযুক্ত বিদ্যুৎ তৈরীর পরিকল্পনা থমকে দিয়েছে।
আরও পড়ুনঃ মাধ্যমিক পাসে মিলবে ১০,০০০! শুরু হল কেন্দ্রের এই স্কলারশিপে আবেদন
জানিয়ে রাখি, বর্তমানে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় 28,000 মেগাওয়াট। অথচ দৈনিক গড় চাহিদা মাত্র 16,000 মেগাওয়াটের আশেপাশে। ফলে চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা তৈরি হয়েছে, যা সরকারের জন্য অতিরিক্ত বোঝা। তার জন্য সরকারকে প্রতিনিয়ত ক্যাপাসিটি চার্জও গুনতে হচ্ছে। এমনকি বিদ্যুৎ ব্যবহার না করেও বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির জন্য ভাড়া দিতে হচ্ছে কোটি কোটি টাকা।
এ নিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা জানিয়েছে, বর্তমানে ভারত থেকে প্রায় 2970 মেগাওয়াট এবং নেপাল থেকে 40 মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে। আর নতুন করে 500 মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করলে আর্থিক চাপ আরও বাড়বে। আর সেজন্যই এই বড়সড় সিদ্ধান্তের পথে হেঁটেছে ওপার বাংলা।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |