প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: রাত বাড়লেই ভয়ের উৎপাত। মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়েও একাধিক সমস্যা তৈরি হয়েছে। যার দরুন রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সুকান্তপল্লি নিল এক অভিনব উদ্যোগ। নিরাপত্তার খাতিরে এবার এগিয়ে এল নারী সংগঠন। লক্ষ্মীর ভান্ডারের (Lakshmir Bhandar) টাকায় এবার এলাকায় বসানো হল সিসিটিভি ক্যামেরা।
লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা দিয়ে সিসিটিভি!
সম্প্রতি রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সুকান্তপল্লি এলাকায় নিরাপত্তা বলয় তৈরি করতে এক নয়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রায় ১ লক্ষ টাকার খরচে বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। কেউ লক্ষ্মীর ভান্ডার থেকে টাকা জমিয়ে দিয়েছেন কেউ আবার জমানো পুঁজি থেকে।
এমনকি কেউ আবার চাকরি বাকরি এবং টিউশনির মাধ্যমে উপার্জিত অর্থ দিয়ে এই অভিনব উদ্যোগ নেওয়া হল। বাসিন্দাদের তরফে জানানো হয়েছে, এইমুহুর্তে মেইন রোড থেকে অলি গলি, এলাকার বিভিন্ন জায়গায় বসানো হয়েছে ১২টি আধুনিক মানের সিসিটিভি ক্যামেরা।
একনাগাড়ে নজর রাখা হচ্ছে ফুটেজে
জানা গিয়েছে, এই ১২ টি ক্যামেরার কন্ট্রোল রুম রাখা হয়েছে পাড়ারই একটি বাড়িতে। সেখানেই রয়েছে সিসিটিভি ফুটেজর সমস্ত রেকর্ড। এছাড়াও পাড়ায় প্রবেশের মুখে বড় বড় করে ফ্লেক্সে টাঙানো হয়েছে সতর্কবাণী, ‘আপনি সিসি ক্যামেরার নজরদারির আওতায় রয়েছেন।’ ইতিমধ্যেই সেই পাড়ার নারী ব্রিগেডের প্রত্যেকের মোবাইলে রয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরার লিঙ্ক। অর্থাৎ সেই ফুটেজে কেউ না কেউ একনাগাড়ে নজর রাখছেন।
কেন এই সিদ্ধান্ত?
এই প্রসঙ্গে এলাকার বাসিন্দা ঝর্না চক্রবর্তী নামে এক বৃদ্ধা জানিয়েছেন যে, ‘পাড়ার এই অসামান্য উদ্যোগে আমিও বার্ধক্য ভাতার টাকা দিয়েছি। যা আমার কাছে এই টাকার সবচেয়ে সঠিক ব্যবহার বলে মনে হচ্ছে। এখন রাস্তায় বেরোলে আর ভয় করে না।” একই সুর শোনা যায় অনন্যা নন্দী, জয়তী সাহাদের কথায়।
তাঁরা জানিয়েছেন, “আগে নানা ধরনের উটকো ঝামেলা লেগে থাকতো। এমনকি চুরির ঘটনায় ঘটেছে একদিন। সেক্ষেত্রে থানায় গিয়েও বিশেষ সমাধান হয়নি, উল্টে আরও বাড়তি ঝামেলা। তাই এই ভাবনা বা উদ্যোগ আমরা মহিলারা মিলেই করলাম।”
আরও পড়ুন: শিক্ষক থেকে পড়ুয়া, ছাতা মাথায় দিয়েই চলছে ক্লাসরুম! বেহাল দশা হুগলির স্কুলের
এদিকে নিজের এলাকায় মহিলাদের এই উদ্যোগে বেশ খুশি হয়েছেন এলাকায় কাউন্সিলর সন্দীপ নস্কর। তিনি বলেন, মূল রাস্তায় সিসিটিভি বসানো গেলেও অলিগলিতে নজর দেওয়া সত্যিই অনেক সময় কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। সেক্ষেত্রে পাড়ার মহিলারাই যে এই উদ্যোগ নিয়েছে তা নিঃসন্দেহে সত্যিই প্রশংসনীয়।