সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: সীমান্তের উত্তেজনা, কূটনৈতিক চাপ এবং রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যে ফের খেল দেখানো চিন (China on India)। একদিকে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলি যখন রপ্তানি চালিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে ভারতের জন্য বিশেষ সার রপ্তানির রাস্তা বন্ধ করে ফেলল বেজিং! সরকারের কোনোরকম নিষেধাজ্ঞা না থাকা সত্ত্বেও চিন প্রক্রিয়াগত বাঁধার মাধ্যমে রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ জানাচ্ছে দেশের সার আমদানিকারক সংস্থাগুলি।
কীভাবে বন্ধ করা হল সার রপ্তানি?
একাধিক সূত্র দাবি করছে, সরকারি আদেশে কোনোরকম নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও চিন এখন ভারতে সার রপ্তানির রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। মূলত ফ্যাক্টরি ইন্সপেকশনই করছে না তারা। ফলে সার প্রস্তুত থাকলেও সেগুলি রপ্তানির অনুমোদন মিলছে না। এ প্রসঙ্গে সলিউবল ফার্টিলাইজার ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট রাজীব চক্রবর্তী বলেছেন, বিগত কয়েক বছর ধরে চিন ধীরে ধীরে এই সার রপ্তানি কমাচ্ছিল। এবার সম্পূর্ণভাবে তা বন্ধ করে দিয়েছে।
ভারতের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ এই সার?
বলে রাখি, ভারতের কৃষিক্ষেত্রে ফল, সবজি, উচ্চমূল্যের ফসল উৎপাদনের জন্য এই সারের জুরিমেলা ভার। এই বিশেষ সারে রয়েছে ওয়াটার সলিউবল ফার্টিলাইজার, কন্ট্রোলড, স্লো রিলিজ সার, ফোলিয়ার স্প্রে, ন্যানো ফার্টিলাইজার, মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস, বায়োস্টিমুল্যান্টস। আর এই সার মূলত ফসলের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে ও উৎপাদন বাড়ায়।
সম্প্রতি এক রিপোর্ট বলছে, 2029 সালের মধ্যে মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস সারের বাজার প্রায় 1 বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়াবে। পাশাপাশি বায়োস্টিমুল্যান্টস পৌঁছবে প্রায় 734 মিলিয়ন মার্কিন ডলারে এবং ফার্টিলাইজার বাড়বে 1.3 বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সবথেকে বড় ব্যাপার, দেশের বাজারে এই বিপুল পরিমাণে সারের প্রায় 80 শতাংশই আমদানি হয় জিনপিং-র দেশ থেকে, যা এখন সম্পূর্ণ বন্ধ।
আরও পড়ুনঃ চাপে পড়ে পথে এল বাংলাদেশ! আদানির পকেটে ঢুকল ২৮,০৫,৬০,০০,০০০ টাকা
ভারতের হাতে এখন কি কোনও রাস্তা আছে?
বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ বলছে, চিনের উপর নির্ভরতা কমাতে ভারতের সামনে এখন মাত্র দুটি পথ খোলা রয়েছে। এক, নিজেদের উৎপাদন বাড়ানো এবং দুই, বিকল্প দেশ যেমন ইউরোপ, জার্মানি থেকে এই সার আমদানি শুরু করা। তবে এখানেও সমস্যা মাথাচাড়া দিয়ে দাঁড়াচ্ছে। কারণ এই পণ্যগুলো সময়মতো ভারতে না আসলে কৃষিক্ষেত্রে বিরাট প্রভাব পড়বে। কার্যত ফসল উৎপাদন বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
আসলে ভারতের সঙ্গে চিনের সাম্প্রতিক চলা দ্বন্দ্ব, চিনের বিনিয়োগের উপর নিয়ন্ত্রণ ও ভারত সরকার সম্প্রতি চিনের রেয়ার আর্থ এক্সপোর্টের বিরুদ্ধে যে পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছে, তার জেরেই হয়তো বেজিং এই সিদ্ধান্তের পথে হেঁটেছে বলে মনে করছে বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ। এখন শুধু দেখার, ভারত কীভাবে এই পরিস্থিতি সামাল দেয়।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |