৭৫,০০০ টাকায় রাজপ্রাসাদ বিক্রি, শেষ জীবনে চালান রিকশা! জানেন এই রাজার গল্প?

Published on:

Brajaraaj Mahapatra

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: একসময় তার জীবন ছিল রাজপ্রাসাদের ঐশ্বর্যে মোড়া! ছিল 25টি বিলাসবহুল গাড়ি, খ্যাতি এবং সম্মান! আর শেষ জীবনে মাটির কুঁড়েঘরে দিন কাটাতে হচ্ছে! এমনকি দুই চাকার রিক্সা চালিয়ে করতে হচ্ছে জীবনযাপন। এমনই এক অবিশ্বাস্য বাস্তব গল্পের নাম ব্রজরাজ মহাপাত্র (Brajaraaj Mahapatra), যিনি উড়িষ্যার টিগিরিয়া রাজ্যের শেষ মহারাজা।

ইতিহাস কী বলছে?

খোঁজ নিয়ে জানা গেল, 1921 সালের 15 অক্টোবর ব্রজরাজ মহাপাত্র জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার পূর্বপুরুষ ছিলেন রাজস্থানে। পরে উড়িষ্যার টিগিরিয়াতে তাদের রাজ্য গড়ে তোলেন। জানা যাচ্ছে, ব্রজরাজ ছত্রিশগড়ের রাজকুমার কলেজে পড়াশোনা করেছেন। আর সেখানে রাজ পরিবারের সন্তানরাই শুধুমাত্র পড়তো।

1943 সালে বাবা সুদর্শন মহাপাত্রের মৃত্যুর পর মাত্র 22 বছর বয়সে তিনি রাজ সিংহাসনে বসেন। রাজত্বের সময় তার 25টি বিলাসবহুল গাড়ি, ব্যক্তিগত চালক, রাজপ্রাসাদে শত-শত কর্মচারীও ছিল। এমনকি তিনি কলকাতাতে নিজের গাড়ি চালিয়ে ঘুরতে ভালোবাসতেন। গাড়ির প্রতি তার ভালোবাসাও ছিল অবিরাম। দেশের বাজারে নতুন কোনও গাড়ি আসলেই তা চালিয়ে দেখতেন তিনি।

স্বাধীনতার পরেই বদলে গেল সবকিছু

1947 সালে ভারতের স্বাধীনতার পর ধীরে ধীরে রাজ শক্তি এবং জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হতে শুরু করে। তবে অন্যান্য রাজারা যেখানে রাজনীতি বা ব্যবসায় যোগ দিয়ে নিজেদের জায়গা পাকাপোক্ত করে নেন, সেখানে ব্রজরাজ মহাপাত্র সেই সমস্ত থেকে দূরে থাকেন। 

ইন্ডিয়াহুডের বিশেষ প্রতিবেদন

তিনি পুরনো ঐশ্বর্যের উপরেই ভরসা রাখেন। আর তাতেই গোলমাল হয়ে যায় সব। রাজস্ব ধীরে ধীরে কমে আসে, এমনকি সরকারি নিয়মে কাটা পড়ে রাজবংশের প্রিভিলেজ। অবশেষে 1960 সালে মাত্র 75 হাজার টাকায় নিজের রাজপ্রাসাদ সরকারের কাছে তিনি বিক্রি করে দেন, আর সম্পূর্ণ দেউলিয়া হয়ে যান।

আরও পড়ুনঃ শেষমেশ ‘গমচুরি’! বাংলাদেশের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ ইউক্রেনের, চাইছে নিষেধাজ্ঞা

রাজা থেকে রিকশাচালক

তবে এই বিলাসবহুল জীবনের একেবারে শেষ অধ্যায় এসে তিনি এক কুঁড়েঘরে বসবাস করতেন, রোজগার বলতে তার একমাত্র উপায় ছিল রিক্সা চালানো। যারা রাজত্বকালে মানুষ যাকে রাজার বদলে দাদা বলে ডাকত, সেই মানুষটা শেষ বয়সে দু’পয়সার জন্য শহরে ঘুরে ঘুরে রিক্সা টেনে বেড়িয়েছেন। 

বলে রাখি, 2016 সালে 95 বছর বয়সে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তবে তার শেষ ইচ্ছা ছিল, টিগিরিয়ার প্রতিটি মানুষ যেন তার সৎকারে 10 টাকা করে দেন। কিন্তু তার সেই অনুরোধটুকুও কেউ রাখেনি। অর্থাৎ, তার জীবনের শেষ ইচ্ছাটুকুও অপূর্ণ থেকে গেল।

গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্যJoin Group
চাকরির খবরের জন্যJoin Hood Jobs
রাশিফলের জন্যJoin Hood Rashifal
খেলার খবরের জন্যJoin Whatsapp
সঙ্গে থাকুন ➥