প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ১৯৮৪ সালে ভারতের তরফ থেকে প্রথমবার মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিলেন রাকেশ শর্মা। বিজ্ঞানের ইতিহাসে এক অনন্য নজির গড়েছিলেন তিনি। এরপর দশকের পর দশক কেটে গেলেও দ্বিতীয় ভারতীয় মহাকাশচারী হিসেবে কাউকে দেখা যায়নি। অবশেষে সেই খরা কাটল। ১৪০ কোটির প্রতিনিধি হয়ে দ্বিতীয় ভারতের মহাকাশচারী হিসেবে নাম খণ্ডিত করলেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা (Shubhanshu Shukla)।
মহাকাশে পাড়ি ড্রাগনযান!
দীর্ঘ টালবাহানার পর শুভাংশু শুক্লা-সহ চার অভিযাত্রীকে নিয়ে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছে স্পেসএক্সের ‘ড্রাগনযান’। ভারতীয় সময় অনুযায়ী গত বুধবার, ২৫ জুন বেলা ১২টা বেজে ১ মিনিট আমেরিকার ফ্লরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে অবতরণ হয় ফ্যালকন ৯ রকেটের। এরপর প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর পরের দিন , বৃহস্পতিবার ভারতীয় সময় অনুযায়ী বিকাল ৪টা ০২ মিনিট নাগাদ আন্তর্জাতিক মহাকাশ ঘাঁটিতে পৌঁছে যায় শুভাংশুদের রকেট। আর এই আবহে প্রশ্ন উঠছে সেখানে তাঁদের কাজটি কী হবে।
কী কী গবেষণা হবে?
ISRO সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে মহাকাশে গবেষণা করতে চলেছে শুভাংশুর দল। সেখানে কেবলমাত্র গ্রুপ ক্যাপ্টেন হিসাবে শুভাংশু শুক্লা অন্যান্য দেশের বিজ্ঞানী তথা নভশ্চরদের শুধু পৌঁছে দেওয়াই তার কাজ হবে না। তাঁকেও গবেষণার কাজেও অংশগ্রহণ করতে হবে। আর এই গবেষণার মধ্যে অন্যতম হল ফসল ফলানো। কীভাবে মহাশূন্যের বুকে গাছের জন্ম দিতে পারে, সেই বিষয়টাই খতিয়ে দেখা হবে। তার জন্য পৃথিবী থেকে সায়ানো ব্যাকটেরিয়া নিয়ে গিয়েছেন শুভাংশুরা। জানা গিয়েছে এই ব্যাকটেরিয়া সালোকসংশ্লেষে সাহায্য করে থাকে।
তবে শুধু জীব বিজ্ঞান নয় মহাকাশে শারীরিক বিজ্ঞান নিয়েও হবে গবেষণা। কারণ অনেক সময় দেখা গিয়েছে, যে সকল নভশ্চররা মহাশূন্যে গিয়েছিলেন, তাঁরা যখন পৃথিবীতে ফিরে এসেছিল সেই সময় তাঁদের হাড়ে ক্যান্সার হওয়ার মতো ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত হতে দেখা গিয়েছিল। তাই এই অভিযানে সেই নিয়ে গবেষণা করা হবে যে কীভাবে মহাশূন্যে পেশি ও হাড়কে সচল ও সতেজ রাখা যায়। আর এই গবেষণায় বিপুল লাভ হবে ভারতেরও।
কী লাভ হবে ভারতের?
২০২২ সাল থেকেই মহাকাশে নভশ্চর পাঠানোর চেষ্টা চালাচ্ছে ISRO। সেই সূত্রেই ২০২৭ সালের মধ্যেই ভারতের প্রথম নিজস্ব মানব অভিযানে রওনা দেবে গগনযান। তখন সেই কাজে সাহায্য করতে পারবে অ্যাক্সিয়ম-৪ অভিযানের গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা (Shubhanshu Shukla)। তাঁর মহাকাশ সফরের অভিজ্ঞতাই হয়ে উঠবে ভারতের মহাকাশ সফরের মূল চাবিকাঠি। বর্তমানে মহাশূন্য একটিই স্পেস স্টেশন বা আন্তর্জাতিক মহাকাশ ঘাঁটি রয়েছে। এবার ভারতের টার্গেট ২০৪০ এর মধ্যে নিজস্ব স্পেস স্টেশন তৈরি করা।
আরও পড়ুন: টানা ৩২ ঘণ্টা ট্র্যাফিক জ্যাম! দমবন্ধ হয়ে মৃত তিন, ভয়াবহ অবস্থা মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে
বিপুল খরচ ISRO-র
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, শুভাংশু শুক্লাকে মহাকাশে পাঠানো থেকে পৃথিবীতে ফেরানো পর্যন্ত বিপুল টাকা খরচ করে ফেলেছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ISRO। এখনও পর্যন্ত পাওয়া হিসাব অনুযায়ী, এই গোটা অভিযানে ভারতের গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪১৩ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছিল।
এবং নয়া অর্থবর্ষ শুরু হতেই আরও ১৩৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছিল। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ৫৪৮ কোটি টাকা। তবে বিপুল অর্থ ব্যয়ের মধ্যে দিয়েই এবার ভারত বিজ্ঞানের দুনিয়ায় এক আশার আলো চাক্ষুষ করতে পারছে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |