সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ভারতের সামনে বিরাট অর্থনৈতিক আশঙ্কা! হ্যাঁ, আমেরিকার সঙ্গে নতুন বাণিজ্য চুক্তি (India US Trade) না হলে দেশের রপ্তানি খাতে প্রায় 4.1 লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতি হতে পারে বলে দাবি করছে বেশ কিছু রিপোর্ট। তবে প্রশ্ন হচ্ছে, কেন এই আশঙ্কা? এর পেছনে কী কারণ রয়েছে? ভিয়েতনামের সঙ্গে আমেরিকার নতুন ট্রেড চুক্তি? সবটা জেনে নেব আজকের প্রতিবেদনে।
আমেরিকার বাজারে ভারতের সঙ্গে টেক্কা দিচ্ছে ভিয়েতনাম
হিসাব বলছে, 2023 সালে ভারত আমেরিকায় রপ্তানি করেছিল মোটামুটি 76 বিলিয়ন ডলারের পণ্য। আর এর মধ্যে 5.4 বিলিয়ন ডলারের পণ্য এমন, যেগুলি ভিয়েতনামও আমেরিকার পাঠায়। অর্থাৎ, প্রত্যক্ষভাবে ভারতের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় কাঁধে কাঁধ মিলিয়েছে ভিয়েতনাম।
তবে সমস্যা হল, এই 5.4 বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্যগুলির ক্ষেত্রে ভিয়েতনামকে সম্পূর্ণ শুল্ক ছাড় দিয়েছে আমেরিকা, যেটা ভারতের সঙ্গে হয়নি। ফলত ভারতের তুলনায় তারা এখন সস্তায় সেই জিনিসগুলি বিক্রি করতে পারছে। আর তার জেরেই আন্তর্জাতিক বাজারে মুখ থুবড়ে পড়ছে দিল্লি।
সবথেকে বড় ধাক্কা চিংড়ি রপ্তানি থেকে
বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করছে, সবথেকে বেশি ক্ষতি হতে পারে ফ্রোজেন চিংড়ি রপ্তানি খাতে। ভারত যেখানে আমেরিকায় 2023 সালে 1.81 বিলিয়ন ডলারের চিংড়ির রপ্তানি করেছে, সেখানে ভিয়েতনাম ছিল মাত্র 290 মিলিয়ন ডলারে।
তবে হ্যাঁ, আগেই বললাম শুল্ক ছাড় পাচ্ছে ভিয়েতনাম। আর সেই আবহেই ওরা প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যাচ্ছে। তবে শুল্কের চাপে ভারতের এই রপ্তানি কমে মাত্র 224 মিলিয়ন ডলারের দাঁড়াতে পারে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞরা। মানে এক ক্যাটাগরিতেই ভারতের প্রায় 1.6 বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হতে পারে।
শুধু চিংড়ি নয়, বরং কিচেন ও বাথরুম লিনেন রপ্তানিতেও ভারতের ক্ষতি হতে পারে প্রায় 280 মিলিয়ন ডলার। পাশাপাশি জুয়েলারি খাতেও ক্ষতি হতে পারে 230 মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত। আর সবক্ষেত্রেই ভিয়েতনাম ভারতের থেকে এককাটি উপরে দাঁড়িয়ে লাভের গুড় খাচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ নয়া পেনশন স্কিমে কর ছাড়, সরকারি কর্মীদের জন্য নয়া বিজ্ঞপ্তি
ট্রাম্পের ঘোষণা ঘিরে শোরগোল
তবে সবথেকে বড় ধাক্কা এসেছে 2 জুলাই, যখন ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করে বসেন, আমি এটি জানাতে পেরে নিজেকে অনেক সম্মানিত মনে করছি যে, ভিয়েতনামের মতো সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের সাথে বাণিজ্য চুক্তি করতে পারছি। এমনকি চুক্তির মাধ্যমে ভিয়েতনামের রপ্তানি শুল্ক মাত্র 20% ধার্য করা হয়েছে।
অথচ ভারতের মতো দেশের ক্ষেত্রে এখনও 26%-র বেশি শুল্ক গুনতে হয়। কারণ, দিল্লির তরফ থেকে কোনও ট্রেড ডিল সই করা হয়নি। আর এই মুহূর্তে কোনও পণ্য যদি অন্য দেশ ঘুরে আমেরিকায় ঢোকে, তাহলে 40% পর্যন্ত শুল্ক জুড়তে পারে বলে জানা যাচ্ছে। আর ভিয়েতনাম সেই ঝুঁকি থেকে রক্ষা পেলেও ভারত এখনও বিপদের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে।
যদিও এখনও পর্যন্ত দিল্লির তরফ থেকে কোনো বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছে, ভারতের রপ্তানি খাতে প্রতিযোগিতা ধরে রাখতে চাইলে খুব তাড়াতাড়ি আমেরিকার সঙ্গে একটি ট্রেড ডিল করা প্রয়োজন। এখন দেখার, ভবিষ্যতে ভারতের অর্থনীতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |