‘সরকারের দায়বদ্ধতা’, অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের পেনশন নিয়ে বড় রায় হাইকোর্টের

Published on:

Updated on:

Calcutta High Court

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ফের হাইকোর্টের ক্ষোভের মুখে পড়েছে রাজ্য সরকার! অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের পেনশন নিয়ে প্রশাসনের টালবাহানায় ক্ষুব্ধ বিচারপতি। আগামী ৮ সপ্তাহের মধ্যে কর্মীদের সমস্ত পেনশন বকেয়া বেতন মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিল আদালত। এদিকে হাইকোর্টের এই দৃষ্টান্তমূলক সিদ্ধান্তে বেশ খুশি অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা।

ঘটনাটি কী?

‘এইসময়’ এর রিপোর্ট অনুযায়ী মূলত ১৪৯ জন অবসরপ্রাপ্ত পৌর কর্মীর পেনশন সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে হাইকোর্টে মামলা করা হয়েছিল। নবদ্বীপ পুরসভার কর্মী স্বপন দেবনাথ ১৯৯০ সালে জঞ্জাল সাফাই বিভাগে চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন। মাসে মাসে বেতন পেতেন। সার্ভিস বুকও তৈরি হয়েছিল।

অথচ ২০১৭ সালে অবসরের পরে তিনি জানতে পারেন, তাঁর সার্ভিস নাকি রেগুলার হয়নি! ফলে তিনি পেনশন পাবেন না। ঠিক একই অবস্থা চুঁচুড়া পুরসভার অবসরপ্রাপ্ত কর্মী দিলীপ হাঁড়ির। যার দরুন এই কর্মীরা তাদের কর্মজীবনের শেষে এসেও পেনশন এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা থেকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত ছিলেন।

পেনশন বন্ধের অভিযোগ প্রশাসনের বিরুদ্ধে

মামলাকারীদের অভিযোগ ছিল পেনশন সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। কিন্তু একে অপরের উপর দোষ চাপিয়ে নিজেদের দায়িত্ব এড়াতে চেয়েছিল সকলেই। প্রত্যেকটি দফতরে দোরে দোরে ঘুরতে হয়েছিল পেনশন কর্মীদের।

ইন্ডিয়াহুডের বিশেষ প্রতিবেদন

যার ফলে এই বয়সে এসে চরম দুর্দশার মধ্যে পড়েন কর্মীরা। শুধুমাত্র প্রশাসনিক উদাসীনতার কারণে তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। আর তাতেই এবার ক্ষুব্ধ হলেন হাইকোর্টের বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্ত।

ক্ষুব্ধ বিচারপতি

এদিন হাইকোর্টে এই মামলা উঠল বিচারপতি কান্ত রাজ্য ও পুরসভার ভূমিকার প্রতি তীব্র সমালোচনা করেন। আদালতের বক্তব্য, একজন ব্যক্তি এত বছর সরকারের হয়ে সার্ভিস দিলেন। আর এখন কিনা সরকার তাঁর প্রাপ্য না দিয়ে তাঁকে আইনের দরজায় কড়া নাড়তে বাধ্য করছে! এক্ষেত্রে সরকার প্রযুক্তিগত কারণ দেখিয়ে তার দায়িত্ব এড়াতে কখনই পারে না।

যদি কোনো কর্মীর নিয়োগে কোনো ত্রুটি থেকেও থাকে, তার দায় কর্মীর উপর কিছুতেই চাপানো যায় না। তাই আদালত নির্দেশ দিয়েছে যে, আট সপ্তাহের মধ্যে ওই কর্মীর সমস্ত বকেয়া পেনশন এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা মিটিয়ে দিতে হবে

আরও পড়ুন: ঝড় জল বন্যার মাঝেই উচ্চ মাধ্যমিকের তৃতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষা! চিন্তায় পড়ুয়া থেকে পর্ষদ

এছাড়াও এদিন আদালত স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে যে, কর্মীদের পেনশন এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা সময়মতো প্রদান করতে হবে। এই রায় সেই সমস্ত অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের মনে নতুন করে আশা জাগিয়ে তুলবে, যারা দীর্ঘদিন ধরে তাদের অধিকারের জন্য লড়াই করছেন।

সবশেষে বলা যায় এই মামলা ফের প্রমাণ করে দিল যে বিচারব্যবস্থা সর্বদা সাধারণ মানুষের পাশে আছে এবং প্রশাসনিক গাফিলতির বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে।

গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্যJoin Group
চাকরির খবরের জন্যJoin Hood Jobs
রাশিফলের জন্যJoin Hood Rashifal
খেলার খবরের জন্যJoin Whatsapp
সঙ্গে থাকুন ➥