প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর অবশেষে মিলল ত্রিপুরার কলেজছাত্রীর দেহ। ৬দিন ধরে নিখোঁজ থাকার পরে ১৩ জুলাই, রবিবার রাতে দিল্লিতে একটি উড়ালপুলের নীচে যমুনা নদীতে ভাসতে দেখা যায় উনিশ বছর বয়সি ত্রিপুরার স্নেহা দেবনাথের দেহ। ইতিমধ্যেই দেহ শনাক্ত করেছে পরিবার। প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হয়েছে, আত্মহত্যা করেছেন ওই তরুণী। তবে ঠিক কী কারণে এই সিদ্ধান্ত এখনও তা স্পষ্ট নয়। ইতিমধ্যেই ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে দেহ।
খোঁজ মিলল স্নেহার!
The Times Of India-র রিপোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল অর্থাৎ রবিবার, দিল্লির গীতা কলোনির একটি ফ্লাইওভারের কাছে ভাসমান অবস্থায় দেখা যায় তাঁর দেহ। উদ্ধার করে সেই দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানিয়েছে, স্নেহা একটি হ্যান্ডনোট রেখে গিয়েছিলেন, যেখানে আত্মহত্যার ইঙ্গিত মিলেছে। ঘটনাসূত্রে জানা গিয়েছে, ত্রিপুরার বাসিন্দা ছিলেন স্নেহা দেবনাথ। দিল্লি ইউনিভার্সিটিতে পড়তে এসেছিলেন। ৬ দিন আগে তাঁর পরিবার পুলিশে অভিযোগ জানায় যে স্নেহা নিখোঁজ।
শেষ লোকেশন ছিল সিগনেচার ব্রিজ
তদন্ত সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৭ জুলাই স্নেহা ভোরে রুমমেটকে জানান যে তিনি এক বান্ধবী পিটুনিয়ার সঙ্গে সেরাই রোহিলা রেলওয়ে স্টেশনে যাচ্ছেন। ভোর পৌঁনে ছ’টা নাগাদ পরিবারের সঙ্গে শেষবার ফোনে কথা হয় তাঁর। এরপর থেকে হঠাৎ তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। সকাল পৌঁনে ন’টা নাগাদ পরিবারের সদস্যরা আবার ফোন করতে গেলে তাঁর ফোন বন্ধ পান।
পরে পিটুনিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারেন স্নেহা আদৌ তাঁর সঙ্গে দেখা করেননি। পরবর্তীতে একজন ক্যাব চালকের সন্ধান পান তাঁরা। পুলিশ জানিয়েছে ওই ক্যাবচালক নিশ্চিত করেন ঘটনার দিন স্নেহাকে তিনি সকালে নামিয়ে দিয়েছিলেন দিল্লির সিগনেচার ব্রিজ এলাকায়।
যমুনা নদীতে মিলল তাঁর দেহ
অর্থাৎ ওইদিন স্নেহা ক্যাবে করে উত্তর দিল্লির সিগনেচার ব্রিজে গিয়েছিলেন। কারণ দিল্লির সিগনেচার ব্রিজেই তাঁর শেষ লোকেশন পাওয়া গিয়েছিল। এরপরই প্রশাসনের তৎপরতায় দিল্লি পুলিশ ক্রাইম ব্রাঞ্চ এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী যৌথভাবে ৯ জুলাই থেকে সিগনেচার ব্রিজের আশেপাশের সাত কিলোমিটার এলাকার মধ্যে তল্লাশি অভিযান শুরু করে।
অবশেষে গতকাল অর্থাৎ রবিবার, ১৩ জুলাই গীতা কলোনির কাছে একটি ফ্লাইওভারের নীচে যমুনা নদীতে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে, স্নেহা নিজেই ব্রিজ থেকে ঝাঁপ দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: জেলা জেলা থেকে আসছে বাহিনী, উঠছে ১০ ফুট উঁচু ব্যারিকেড! নবান্ন অভিযান ঘিরে তৎপরতা
উঠছে প্রশাসনিক গাফিলতি
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, স্নেহা যেখানে থাকতেন, সেখানে একটি হাতে লেখা চিরকুট রেখে এসেছিলেন, যাতে আত্মহত্যার কথাই উল্লেখ করা ছিল। চিরকুটে লেখা ছিল, ‘‘আমার ব্যর্থ বলে মনে হচ্ছে নিজেকে। নিজেকেই নিজের বোঝা মনে হচ্ছে। এ ভাবে আর থাকা সম্ভব নয়।’’ চিরকুটে এ-ও লেখা, ‘‘অন্য কিছু নয়। এটা আমার সিদ্ধান্ত (আত্মহত্যার?)।’’ তবে সূত্রের খবর, পড়াশোনা নিয়ে কোনও অশান্তি ছিল না তাঁর, বরং মানসিক অস্থিরতা ছিল মূলত পারিবারিক কারণেই।
ত্রিপুরা-কন্যা উচ্চশিক্ষার জন্য দিল্লি গিয়েছিলেন। দিল্লির আত্মরাম সনাতন ধর্ম কলেজের অঙ্কের ছাত্রী ছিলেন তিনি। চার বছরের স্নাতক ডিগ্রির পাশাপাশি আইআইটি মাদ্রাজ থেকে ডেটা সায়েন্সের কোর্স করছিলেন। আর এত কিছুর মধ্যে মেয়ের এই অকাল মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা পরিবার।
আর এই আবহে প্রশাসনিক গাফিলতির অভিযোগও উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে। কারণ সিগনেচার ব্রিজে পর্যাপ্ত নজরদারি থাকলেও, কোনও সিসিটিভি ক্যামেরাই কাজ করে না। সেক্ষেত্রে, যদি ক্যামেরাগুলি সচল থাকত, তাহলে হয়তো দ্রুত পদক্ষেপ করা যেত।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |