বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: আজ, শনিবার দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে কার্গিল বিজয় দিবস। আজকের দিনেই পাকিস্তানের দম্ভ ঘুঁচিয়ে নিজেদের বীরত্ব ও অদম্য সাহসের পরিচয় দিয়েছিলেন ভারতীয় সেনারা।
1999 সাল থেকে আজকের দিন অর্থাৎ টানা 26 বছর, ভারতীয় সেনা জাওয়ানদের গৌরবময় কাহিনী চর্চিত হয়ে আসছে দেশের অন্দরে। সেই মর্মে, ইতিমধ্যেই শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে 26তম কার্গিল বিজয় দিবসের সূচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু।
শুধুমাত্র একটি জয় হিন্দ বার্তায় কার্গিল যুদ্ধের সেনাদের স্মরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। বলা বাহুল্য, দীর্ঘ 26 বছর পেরিয়ে পাকিস্তানের সাথে একটানা লড়াইয়ের পর ভারতীয় সেনা জওয়ানদের আত্মত্যাগের স্মৃতি আজও ভারতীয়দের হৃদয়ে দগদগে।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতীয় সেনাদের বিজয়ের ইতিহাস
সালটা ছিল 1999। সে বছরের 3 মে, কার্গিলে অন্যান্য সময়ের মতোই শীতকালীন তাপমাত্রা ছিল মাইনাস 30 থেকে 40 ডিগ্রি সেলসিয়াস। মূলত প্রবল ঠান্ডার কারণে ওই এলাকাগুলি খালি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। আর ঠিক সেই সুযোগ নিয়েই চোরা অনুপ্রবেশ চালায় পাকিস্তান।
জানা যায়, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সহায়তায় ভারতের সীমানা পেরিয়ে প্রবেশ করেছিল দুর্বৃত্তরা। পরবর্তীতে স্থানীয় রাখালদের তরফে সেই খবর আসে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কানে। আর এর পরই শুরু হয় তুমুল সংঘর্ষ। পাকিস্তানের সাথে ভারতীয় সেনাদের ওই সংঘর্ষ দীর্ঘ 84 দিন পর্যন্ত স্থায়ী ছিল।
পুরনো ইতিহাস ঘেঁটে জানা গেল, ভারতীয় সেনাবাহিনী 5 মে, প্রথমবারের মতো অনুপ্রবেশ এলাকায় একটি সেনাদল পাঠায়। পরবর্তীতে খবর আসে, পাকিস্তান থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীরা ওই দলটির 5 জন সেনাকে হত্যা করেছে। শুধু তাই নয়, ভারতীয় সেনা জাওয়ানদের মৃতদেহ নির্মমভাবে বিকৃত করে দেওয়া হয়।
রিপোর্ট অনুযায়ী, অনুপ্রবেশকারীরা লেহ-শ্রীনগর মহাসড়ক দখল করতে চেয়েছিলেন। জানা যায়, ওই অংশের মধ্যে লেহকে তারা ভারতের বাকি অংশ থেকে আলাদা করতে চেয়েছিলেন। এরপর 9 মে, কার্গিলে পাক সেনাবাহিনীর একটি কামানের গোলা ছুটে এলে ভারতীয় গোলাবারুদ ডিপো উড়ে যায়।
পাকিস্তানের তরফে এমন ধাক্কা পেয়ে শুরুতেই সেভাবে অ্যাকশনে যায়নি ভারত। পাক হামলার ঠিক পরের দিন, দ্রাস, কাকসার, বাটালিক সেক্টরে পাকিস্তান থেকে আসা প্রায় 800 জন অনুপ্রবেশকারী নজরে আসে ভারতীয় সেনার। জানা যায়, তারা ভারতীয় পোস্টগুলির দখল নিতে চাইছিলেন।
আর এই খবর জানতে পেরেই, 26 মে কাশ্মীরের বিভিন্ন এলাকায় সেনা পাঠাতে শুরু করে ভারত। আর এই দিনই ভারতীয় বিমান বাহিনী অনুপ্রবেশকারীদের ওপর বোমাবর্ষণ করে। এরই মাঝে, পরের দিন অর্থাৎ 27 মে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী আবার দুটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করে। আর এই ঘটনার পরই 31 মে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী একটি বিবৃতি দিয়ে জানান, কাশ্মীরে যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
এরপর একে একে অ্যাকশনে নামে ভারতীয় সেনা। 4 জুলাই, প্রথমে ভারতীয় সেনাবাহিনী টাইগার হিলসে পতাকা উত্তোলন করে। এদিন অন্তত 11 ঘন্টা একটানা যুদ্ধের পর একটি গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট দখলে নিয়ে নেয় সেনারা। এরপর 5 জুলাই, দ্রাস সেক্টর দখল করে নেয় ভারতীয় সেনা। যা কৌশলগতভাবে ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এরপর একটানা অভিযান চালিয়ে 11 জুলাই বাটালিক সেক্টরের প্রায় সমস্ত পাহাড়ি শৃঙ্গ পুনরুদ্ধার করে সেনারা।
অবশ্যই পড়ুন: বিহারের সাংবাদিকদের পেনশন ৬ হাজার থেকে বেড়ে ১৫ হাজার! ঘোষণা নীতিশ কুমারের
শেষ পর্যন্ত, যুদ্ধে পরাস্ত হয়ে 12 জুলাই, পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ ভারতের সাথে আলোচনায় বসতে চেয়ে প্রস্তাব পাঠান। তবে তাতে গলেনি মোম। 14 জুলাই, ভারতীয় সেনাবাহিনী পাক সেনাদের ভারতীয় ভূখণ্ড ছাড়া করে। এরপর সবশেষে 26 জুলাই, 18 হাজার ফুট উচ্চতায় দীর্ঘ লড়াইয়ের পর বহু সেনার আত্মত্যাগের মাধ্যমে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয় ঘোষণা করে দিল্লি।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |