বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: গত দুবছর ইন্ডিয়া আউট স্লোগান তোলা মালদ্বীপে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র ধরা পড়ল। দ্বীপরাষ্ট্রটিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পদধূলি পড়তেই একেবারে কপাল খুলে গেল এক সময়ে চিনের সাথে হাত মিলিয়ে ভারতের বিরোধিতা করা প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মইজ্জুর।
যে মালদ্বীপ এতদিন ভারতের বিরুদ্ধাচারণ করে এসেছে, এবার সেই দেশেই ভেসে উঠলো বন্দে মাতরম ধ্বনি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে পৌঁছেছিলেন স্বয়ং মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মইজ্জু। এদিন মোদির সাথে সাক্ষাতে তাঁকে বুকে টেনে নেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট।
আসলে দাদা চিনের সাথে সখ্যতা বাড়িয়ে ভারতের বিরোধিতা করলেও, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মইজ্জু বুঝতে পেরেছেন ড্রাগনের দেশের সাথে বেশি ঘনিষ্ঠতা ভাল নয়। আদতে চিনা সঙ্গে ক্ষতি হবে তাঁদেরই। বদলে পরোপকারী ভারতের সাথে সম্পর্ক বাড়ালে লোকসান তো নেই, বরং উপরি লাভ হবে।
আর এসব চিন্তা করেই দিল্লির সাথে সখ্যতা বাড়াতে চাইছে মালে। আর সেই সম্পর্ককে কাজে লাগিয়েই মোদি-মইজ্জুর বৈঠকের পরই দ্বীপরাষ্ট্রটিকে সমস্ত রকমের সহযোগিতা করার পাশাপাশি 4850 কোটি টাকার ঋণ দেওয়ার ঘোষণা করল ভারত।
ভারত থেকে কী কী পেল মালদ্বীপ?
শুক্রবার মালদ্বীপের মাটিতে পা রাখার পরই দু’দেশের সম্পর্ক আরও জোরদার করতে প্রেসিডেন্ট মইজ্জুর সাথে বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর এর পরই, দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার হাত ধরে মালদ্বীপকে প্রতিরক্ষা থেকে শুরু করে আর্থিক দিক সহ সমস্ত রকমের সাহায্যের অঙ্গীকার করেন প্রধানমন্ত্রী।
বলা বাহুল্য, চিনের মদত ভুলে, ভারতের সাথে সখ্যতা বাড়াতে চাওয়ায় মালদ্বীপকে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার প্রতীক হিসেবে 72টি সামরিক যান এবং একাধিক প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। একই সাথে, প্রধানমন্ত্রী এও বলেন, ভারত-মালদ্বীপের আমাদের শিকড় ইতিহাসের চেয়েও পুরনো। এই দুই দেশ প্রতিবেশীর থেকেও অনেক বেশি কিছু।
এরপরই প্রধানমন্ত্রী বলেন, অত্যন্ত আনন্দের সাথে ঘোষনা করতে যাচ্ছি যে, ভারত এবং মালদ্বীপের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। মালদ্বীপের উন্নতিতে সাহায্য করতে পেরে আমারা সত্যিই আনন্দিত। এছাড়াও শুক্রবার মালদ্বীপের সামরিক শক্তি নিয়ে কথা বলতে শোনা গিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী মোদিকে।
এদিন দেশের চৌকিদার বলেন, মালদ্বীপের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে এই সহায়তা অব্যাহত রাখবে ভারত। ভারত এবং মালদ্বীপের লক্ষ্য অভিন্ন। আমাদের উদ্দেশ্য ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধি বজায় রাখ। এদিন প্রেসিডেন্ট মইজ্জুর সাথে বৈঠকের পরই মোদি সিদ্ধান্ত নেন, দ্বীপরাষ্ট্রটির উন্নতিতে আর্থিক সাহায্য করা হবে। আর ঠিক তারপরই মালদ্বীপকে 565 বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় 4,850 কোটি টাকা ঋণ হিসেবে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন মাননীয়।
অবশ্যই পড়ুন: বিহারের সাংবাদিকদের পেনশন ৬ হাজার থেকে বেড়ে ১৫ হাজার! ঘোষণা নীতিশ কুমারের
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর আচমকা, ভারতের সাথে মালদ্বীপের এমন ঘনিষ্ঠতা চিনের জন্য যে চিন্তার কারণ হবে সেটা বলাই যায়। বহু কূটনীতিকের মতে, এতদিন মালদ্বীপকে ঋণের টোপ দিয়ে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছিল ড্রাগন। সেই টোপ গিলে, ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ভারতের সাথে কু ব্যবহার শুরু করেন মইজ্জু। দেশ থেকে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহার হোক বা ভারত বিরোধী স্লোগান, সবেতেই শিরোনামে ছিলেন মইজ্জু। তবে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে মালদ্বীপে ভারতের ক্ষমতাবৃদ্ধি চিনের ভাগ্যাকাশে হাওয়া বদলের মতোই নতুন চিন্তার জন্ম দেবে এ কথা বলাই যায়।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |