প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বিবেক দংশনে ভুগছিলেন তৃণমূল কাউন্সিলর (TMC Leader)! তাই ভুল সংশোধন করতেই হঠাৎ কান ধরে ওঠবস করার ভিডিও প্রকাশ্যে নিয়ে এলেন তিনি, তাও আবার সোশ্যাল মিডিয়ায়! গত শনিবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ‘অযোগ্য’দের তালিকা সামনে এনেছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন। সেখানে একাধিক শাসক নেতা এবং শাসক ঘনিষ্ঠের নাম ছিল, যা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক। এমতাবস্থায় ফের তৃণমূল কাউন্সিলরের কান ধরে ওঠবসের ভিডিও ভাইরাল হল জনসমক্ষে।
‘দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ড শুভেন্দু অধিকারী!’
সম্প্রতি বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীকে তীব্র আক্রমণ করেছিল তমলুক পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পার্থসারথি মাইতি। তিনি বলেছিলেন, “ ২০২৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের চাকরি চুরির ঘটনায় সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু আজ সে-ই নন্দীগ্রামে বড় বড় কথা বলছে।” অর্থাৎ তাঁর স্পষ্ট দাবি ছিল, ২০১৬ সালের SSC প্যানেলের সময় শুভেন্দুই ছিলেন আসল ‘দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ড’। এদিকে এই কথা প্রকাশ্যে আসতেই বিরোধী দলের পাশাপাশি শাসকদলও বেশ চাপের মুখে পড়ে। এমতাবস্থায় জনসাধারণের কাছে অন্য ভঙ্গিতে ক্ষমা চেয়ে ফের ভাইরাল হয়ে গেলেন এই কাউন্সিলর।
কান ধরে ওঠবস পার্থসারথি মাইতির
SSC দুর্নীতি ঘটনায় উথাল পাথাল রাজ্য রাজনীতি। এদিকে এই অশান্ত আবহাওয়ার মাঝেই গত শনিবার, ৩০ আগস্ট, স্কুল সার্ভিস কমিশন অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করে, যেখানে ১৮০৬ জনের নাম উঠে এসেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তৃণমূল ঘনিষ্ঠের নাম উঠে এসেছিল। যা নিয়ে বিতর্ক এক চরম আকার ধারণ করে। আর এই সব ঘটনার মধ্যেই দাগি তালিকা প্রকাশ হতেই তমলুক পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পার্থসারথি মাইতির কান ধরে ওঠবস-এর ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। বিবেক দংশনে কান ধরে ওঠবস করে জনগণের কাছে ক্ষমা চাইলেন তিনি। ভাইরাল সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, পার্থসারথি বাবু বলছেন—”জেলার অনেক নেতা টাকা নেওয়ার পরও মুখ খুলছেন না। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী যে বড় বড় ভাষণ দিচ্ছেন তারও প্রতিবাদ করছেন না। নীরবতা বজায় রাখছেন। তার জন্য সাধারণের সামনে ক্ষমা চাইছি”
কটাক্ষ বিজেপির
তমলুক পুরসভার কাউন্সিলরের কান ধরে ওঠবস করার ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই ক্রমশ চড়ছে রাজনৈতিক পারদ। এই নিয়ে পাল্টা কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তমলুক সাংগঠনিক জেলা বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তথা রাজ্য কমিটির সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “শুভেন্দু অধিকারী এই ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত নন। এই ধরনের অভিযোগ মিথ্যা। তৃণমূলের মূল মাথারাই চোর। শুভেন্দু অধিকারী উপর দায় চাপানোর চেষ্টা চলছে।” তবে এই বিষয়ে তমলুক সাংগঠনিক জেলার তৃণমূলের সভাপতি সুজিত কুমার রায়ের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি। তবে এইধরনের ঘটনা এর আগেও ঘটিয়েছিলেন তৃণমূল কাউন্সিলর পার্থসারথি মাইতি।
আরও পড়ুন: ‘বাবার নাম ভুলিয়ে দেব, দম থাকলে …!’ বাংলা পক্ষকে হুমকি কংগ্রেস নেতা নীলাভ ব্যানার্জীর
প্রসঙ্গত, গত ১৭ আগস্ট, রবিবার বিকেলে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে তৃণমূল নেতা পার্থসারথি মাইতি একটি ছবি শেয়ার করেন, যেখানে দেখা যায় তিনি কান ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। সেই ছবির ক্যাপশনে তিনি লেখেন— “কান ধরে ভুল স্বীকার করছি— সত্য কথা বলা একটি পাপ।” আর তারপরেই তমলুক পুরসভার প্রায় ২ কোটি টাকার ট্যাক্স বকেয়া ঘটনাটি উঠে আসে। এমন কার্যকারিতায় শাসকদলের একাংশ বেশ অস্বস্তিতে পড়ে, কিন্তু সেই সময় ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি একাধিক ভুয়ো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। তাই এই পরিণতি। যদিও এখনও এই সমস্ত অভিযোগের বিষয়ে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব মুখ খোলেননি।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |