৭৪ মিনিট ধরে হয়েছিল দীর্ঘতম সূর্যগ্রহণ, অসাধ্য সাধন করেছিলেন বিজ্ঞানীরাই! জানুন কীভাবে

Published on:

Solar eclipse

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: দিনটা ছিল 1973 সালে 30 জুন। সাহারা মরুভূমির আকাশ সেদিন এক বিরল দৃশ্যের সাক্ষী থেকেছিল। হ্যাঁ, সেদিন মানব সভ্যতা প্রত্যক্ষ করেছিল 74 মিনিটের এই বিরল পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ (Solar eclipse)। আর এটি শুধুমাত্র আকাশের কোনও খেলা নয়, বরং বিজ্ঞান, প্রযুক্তি থেকে শুরু করে মানব কল্যাণের এক বড় উদাহরণ। আর এই বিস্ময়কর ঘটনাকে সম্ভব করেছিল এক সুপারসনিক বিমান কনকর্ড 001।

কেন এত দীর্ঘ হয়েছিল এই সূর্যগ্রহণ?

সাধারণত পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ সর্বোচ্চ 7 মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হয়। তবে বিজ্ঞানীরা ভেবেছিল, যদি চাঁদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আকাশপথে দৌড়নো যায়, তাহলে অল্প কয়েক মিনিটের অন্ধকারকেই আরও দীর্ঘ করা সম্ভব। আর সেই ভাবনার ফলস্বরূপ কনকর্ড 001-কে রূপান্তর করা হয়েছিল একটি ভাসমান মানমন্দিরে।

আকাশেই ভাসমান মানমন্দির

আসলে প্রটোটাইপ কনকর্ড 001-কে বিশেষভাবে গবেষণার জন্য সাজানো হয়েছিল। বিমানের ছাদে বসানো হয়েছিল একটি পর্যবেক্ষণ জানলা, ও বৈজ্ঞানিক কিছু সরঞ্জাম। ঘন্টায় প্রায় 2500 কিলোমিটার গতিতে উড়তে থাকা এই বিমানের উচ্চতা ছিল মোটামুটি 16,000 মিটার, যা মেঘ ও বায়ুমণ্ডলের সমস্ত বাধার অনেক উপরে।

উল্লেখ্য, সেই 74 মিনিটে পাঁচটি আলাদা বৈজ্ঞানিক দল সূর্যের করোনা এবং ক্রোমোস্ফিয়ারের সঙ্গে একসঙ্গে গবেষণা করেছিলেন। তাঁরা সূর্যের বাহ্যিক তাপমাত্রা থেকে শুরু করে গঠন, চুম্বকত্ব, সব রহস্য খুঁজে বার করেন। এমনকি করোনা কেন সূর্যের পৃষ্ঠের থেকে শতগুণ বেশি উত্তপ্ত, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেও এই পর্যবেক্ষণ ছিল সবথেকে বড় সুযোগ।

বিজ্ঞানীদের নিখুঁত পরিকল্পনা

বিজ্ঞানীদের মতে, সময়ের সামান্য হেরফেরেই পর্যবেক্ষণ ব্যর্থ হতে পারত। কয়েক মিনিট আগে বা পরে পৌঁছলে হয়তো অর্ধেক সময় হারিয়ে যেত। তবে এই সাফল্য ছিল নিখুঁত পরিকল্পনামাফিক এবং দক্ষ পাইলটের কৃতিত্বের ফলাফল। ফরাসি বিমানকে ঘিরে ঐতিহাসিক মুহূর্ত সম্পর্কে পদার্থবিদ ডোনাল্ড লিভেনবার্গ বলেছিলেন, এটি ছিল আমার জীবনের সবথেকে অবিস্মরণীয় ঘটনা। উল্লেখ্য, তাঁর নাম আজও সবথেকে দীর্ঘ সূর্যগ্রহণ প্রত্যক্ষকারী গবেষকদের তালিকায় একেবারে শীর্ষস্থানে।

আরও পড়ুনঃ ৫০০ সিসি শক্তির সমান! চক্ষু চড়কগাছে তুলবে Honda-র নতুন ইলেকট্রিক বাইক

জানিয়ে রাখি, 1973 সালের এই অভিযান প্রমাণ করেছিল যে, আকাশ পথে বা মহাকাশ থেকে সূর্যগ্রহণ পর্যবেক্ষণ করলে এক বিরল দৃশ্যের সাক্ষী থাকা যায়। পরবর্তীতে নাসার WB-57 বিমান ব্যবহার করা হয়েছিল এই একই উদ্দেশ্যে। এমনকি ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা তৈরি করছে Proba-3 মিশন, যা কৃত্রিম সূর্যগ্রহণ ঘটিয়ে সূর্যকে আরো গবেষণার পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্যJoin Group
চাকরির খবরের জন্যJoin Hood Jobs
রাশিফলের জন্যJoin Hood Rashifal
খেলার খবরের জন্যJoin Whatsapp
সঙ্গে থাকুন ➥