বিশাখাপত্তনমে নদিয়ার পরিযায়ী শ্রমিককে কুপিয়ে খুন!

Published on:

Nadia

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ফের ভিনরাজ্যে মৃত্যু বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকের! মোবাইল চোর সন্দেহে অন্ধ্রপ্রদেশে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারধর করা হয় নদিয়ার (Nadia) শ্রমিককে, এমনকি কোপানোও হয়েছিল তাঁকে। চিকিৎসার দরুন কিছুটা সুস্থ হলেও, বাড়ি ফেরার পথে ফের অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁর মৃত্যু হয়। বিগত কয়েকদিন ধরেই খবরের শিরোনামে বারংবার উঠে আসছে পরিযায়ী শ্রমিকের উপর অত্যাচারের ঘটনা। এমতাবস্থায় ফের পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় সরগরম হয়ে উঠল রাজ্য রাজনীতি।

ঘটনাটি কী?

রিপোর্ট অনুযায়ী এবং পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত পরিযায়ী শ্রমিকের নাম রাজু তালুকদার। তিনি তেহট্টের বেতাই লালবাজার মাঠপাড়া এলাকার বাসিন্দা। ৫ মাস আগে বছর ৩৭ এর রাজু তালুকদার ও তাঁর ভাই বেশ কিছু শ্রমিককে নিয়ে বিশাখাপত্তনমে নির্মাণ শ্রমিকের কাজে গিয়েছিলেন। আর সেই একই জায়গায় কাজ করতেন স্থানীয় বেশ কিছু শ্রমিক। কিন্তু গত ২৯ আগস্ট স্থানীয় শ্রমিকদের মধ্যে একজনের মোবাইল চুরি হয়ে যায়। তাঁদের সন্দেহ হয়, রাজুই ফোন চুরি করেছেন। তা নিয়েই শুরু হয় বচসা, পরে হাতাহাতি। অভিযোগ, সেই সময় কয়েক জন রাজুর উপর চড়াও হন। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয় তাঁকে। জখম হন রাজুর ভাইও।

স্টেশনে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু পরিযায়ী শ্রমিকের

রক্তাক্ত রাজু তালুকদারকে প্রথমে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানেই কয়েকদিন চিকিৎসাধীনও ছিলেন ওই পরিযায়ী যুবক। কিছুদিন পরে একটু সুস্থ হতেই তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়। আতঙ্কের পরিবেশে রাজুকে না রেখে পরিবারের লোকেরা ঠিক করেন যে, রাজুকে তেহট্টের বাড়িতে এনে চিকিৎসা করাবেন। সেইমতো তাঁকে অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে ফিরিয়ে আনা হচ্ছিল। কিন্তু বিশাখাপত্তনমের স্টেশনে আসতেই ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন রাজু। আবার তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আর সেখানেই তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।

আরও পড়ুন: ইলিশ হোক আর বোয়াল, কেজি নয়, বিক্রি হয় থালা হিসেবে! আজব বাজার রয়েছে এই বাংলায়

উল্লেখ্য, গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার রাতে রাজু তালুকদারের মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। তাঁর এইরূপ মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে গোটা পরিবার। মৃতের স্ত্রী সান্ত্বনা তালুকদার বলেন, ‘‘মোবাইল চোর সন্দেহে স্থানীয় কয়েক জন স্বামীকে মারধর করেছিল। তাতে খুবই অসুস্থ হয়ে পড়ে ও। ওকে বাড়ি ফিরিয়ে আনা হচ্ছিল। সেই সময় আবার রাস্তায় অসুস্থ হয়ে পড়ে ওর মৃত্যু হয়।’’ রাজুর জামাইবাবু দিলীপ বিশ্বাস বলেন, “শুধুমাত্র মোবাইল চোর সন্দেহে আমার শ্যালককে কোপানো হয়েছিল। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওই আঘাতের জন্যই আমার শ্যালকের মৃত্যু হয়েছে।”

সঙ্গে থাকুন ➥