সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: সম্প্রতি নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি পদত্যাগ করার পর দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি (Sushila Karki)। তিনি নেপালের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছেন। গতকাল রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পাওডেল প্রেসিডেন্ট অফিসে তাঁকে শপথ বাক্য পাঠ করিয়েছেন। তবে তাঁর স্বামী দূর্গাপ্রসাদ সুবেদীর (Durga Prasad Subedi) অতীত খুব একটা ভালো নয়। কারণ নেপালের ইতিহাসে প্রথমবার যে বিমান ছিনতাই হয়েছিল, সেখানে জড়িত রয়েছে তাঁর নাম।
নেপালের ইতিহাসে প্রথমবার প্রথম বিমান ছিনতাই
দিনটা ছিল 1973 সালে 10 জুন। নেপালের বিরাটনগর থেকে কাঠমান্ডু যাওয়ার জন্য রয়্যাল নেপাল এয়ারলাইন্সের একটি কানাডা নির্মিত 19 সিটের বিমান যাত্রা শুরু করেছিল। বিমানে কয়েকজন সাধারণ যাত্রী ছিল, যার মধ্যে বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী মালা সিনহা ও তাঁর স্বামী, নেপালি অভিনেতা সি.পি. লোহানিও ছিলেন। তবে মাঝ আকাশেই বিমানটিকে ছিনতাই করে নেপালি কংগ্রেসের তিন সদস্য।
Nepal में So-called Gen Z की पसंद Sushila Karki!
एक ऐसी महिला, जिनका पति था 1973 का Plane Hijacker
आखिर क्यों उन्हें Interim PM बनाने की मांग हो रही है?
जानिए उनका विवादित और ऐतिहासिक सफर – @shreya_arora22 #NepalGenZProtest #SushilaKarki pic.twitter.com/kIYUgDXhZv— The Pamphlet (@Pamphlet_in) September 11, 2025
জানা গিয়েছে, তখন নেপালের রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে নেপালী কংগ্রেস লড়াই করছিল। রাজা মহেন্দ্রর শাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আন্দোলন চালানোর জন্য প্রচুর পরিমাণে অর্থের প্রয়োজন পড়েছিল। আর সেই তহবিল জোগাড় করতেই ওই বিমান ছিনতায়ের পথ বেছে নেওয়া হয়েছিল। আসলে ওই বিমানে সরকারের 30 লক্ষ টাকা ছিল। আর সেটাই ছিল মূল টার্গেট। জানা গিয়েছিল, ওই ছিনতায়ের মূল কারিগর ছিলেন পরবর্তীতে নেপালের প্রধানমন্ত্রী হওয়া গিরিজা প্রসাদ কৈরালা। সাথে তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন সুশীলা কার্কির স্বামী দুর্গাপ্রসাদ সুবেদী, নাগেন্দ্র ধুঙ্গেল এবং বসন্ত ভট্টরাই।
কীভাবে হয়েছিল ওই ছিনতাই?
আসলে ছিনতাইকারীরা পাইলটকে জোর করে ভারতের বিহারের ফরবিসগঞ্জের ঘাসে ঢাকা রানওয়েতে বিমানটিকে নামাতে বাধ্য করে। সেখানে আরও পাঁচজন সহযোগী অপেক্ষা করছিল। মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিমানের ভেতর থেকে তিন বাক্স ভর্তি টাকা নামিয়ে নেওয়া হয়। তবে আশ্চর্যের বিষয়, যাত্রীদের কোনও ক্ষতি করা হয়নি। টাকা নামানো হয়ে গেলে আবার বিমানটিকে উড়তে দেওয়া হয় এবং বাকি যাত্রীরা নিরাপদেই গন্তব্যে পৌঁছে যায়। তারপরে ওই টাকা সরাসরি সড়ক পথে পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং-এ নিয়ে আসা হয়।
আরও পড়ুনঃ মধ্যবিত্তদের ছ্যাঁকা দিয়ে ফের চড়ল সোনার দাম, ৩০০০ টাকা ঊর্ধ্বগতি রুপো! আজকের রেট
উল্লেখ্য, ঘটনার কিছুদিন পরই অধিকাংশ ছিনতাইকারী ভারতীয় কর্তৃপক্ষের হাতে ধরা পড়েছিল। কিন্তু সুবেদী কিছুদিন আত্মগোপন করে ছিলেন। শেষ পর্যন্ত তিনিও গ্রেফতার হন এবং দুই বছরের কারাদণ্ডে দন্ডিত হন। 1975 সালে জরুরি অবস্থায় তাঁদেরকে মুক্তি দেওয়া হয়।