সহেলি মিত্র, কলকাতা: একদিকে যখন আসন্ন দুর্গাপুজোর আনন্দকে ঘিরে মেতে উঠেছেন ঠিক তখনই বাংলায় এক বিরাট বড় দুর্ঘটনা ঘটে গেল। মৃত্যু হল বহু মানুষের। ঘটনাস্থল বীরভূম (Birbhum)। জানা গিয়েছে, খাদানে কাজ করতে গিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন কমপক্ষে ৬ শ্রমিক। ঘটনার পেছনে নেপথ্যে কোন কারণ রয়েছে? কে বা কারা দায়ী?
পাথর খনি ধসে ৫ শ্রমিকের মৃত্যু
শুক্রবার বিকেলে বাংলার বীরভূম জেলার নলহাটির বাহাদুরপুরে একটি পাথর খনিতে ভূমিধসের কারণে ছয় শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া তিন শ্রমিককে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। খনিতে পাথর সরানোর সময় এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় খনিতে ১২ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বিকেলে শ্রমিকরা খনি থেকে পাথর সরানোর কাজ করছিলেন। হঠাৎ ভূমিধসের কারণে খনির একটি অংশ ধসে পড়ে। শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সেই সময় খনিতে ১০-১২ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে যান নয়জন শ্রমিক।
খবর পেয়ে এলাকার অন্যান্য পাথর খনির শ্রমিকরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার কাজ শুরু হয়। সকল শ্রমিককে চিকিৎসার জন্য রামপুরহাট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে চিকিৎসকরা তাদের মধ্যে পাঁচজনকে মৃত ঘোষণা করেন। আরও চারজন শ্রমিক গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসা চলছে। তাঁদের মধ্যেও একজন মৃত বলে খবর।
কী বলছে পুলিশ?
এদিকে খবর পেয়ে নলহাটি পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পাথর খনি কীভাবে ধসে পড়ল তা পুলিশ তদন্ত করছে। নিয়ম মেনে খনি থেকে পাথর তোলা হচ্ছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, বর্ষাকালে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে অনেক পাথর খনিতে জল জমেছিল। এলাকার মাটিও নরম হয়ে গিয়েছিল। এটিও জমি তলিয়ে যাওয়ার একটি কারণ হতে পারে।
বীরভূমের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের অফিসের তরফে জানানো হয় ‘সবেমাত্র ঘটনাটি ঘটেছে। আমরা স্থানীয় থানার থেকে এই বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করছি। বেআইনি কি না তাও খতিয়ে দেখা হবে।’ সঠিক নিয়ম মেনে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছিল কি না সেই ব্যাপারে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। শ্রমিকদের নিরাপত্তাও যথাযথভাবে মানা হচ্ছিল কি না সেটা নিয়েও এখন প্রশ্ন উঠছে। এহেন ঘটনার ফলে অন্যান্য শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। শেষ পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, গোটা ঘটনায় থানায় FIR দায়ের হয়েছে এবং খাদান মালিক পলাতক।