সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ফের আরজি করের ডাক্তারি পড়ুয়ার রহস্যমৃত্যু (RG Kar Doctor Death)। হ্যাঁ, অনিন্দিত সোরেন নামের এক ছাত্রী যিনি চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে পড়াশোনা করছিলেন, হঠাৎ করেই তাঁর মৃত্যুকে ঘিরে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। জানা গিয়েছে, দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের মেয়ে তিনি। আরজি কর মেডিকেল কলেজের চতুর্থ বর্ষে পড়তেন। শনিবার সকালে মালদহ মেডিকেল কলেজে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ হয় তাঁর।
তবে এই ঘটনার পর তাঁর পরিবার সরাসরি অভিযোগের তীর তুলেছিল অনিন্দিতার প্রেমিক উজ্জ্বল সোরেনের দিকে। তিনি মালদহ মেডিকেল কলেজের ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র। অবশেষে শনিবার রাতে তাঁকে মালদহ থেকে পুলিশ আটক করেছে।
পরিচয় থেকেই প্রেম, তারপর অশান্তি
মৃতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, অনিন্দিতা এবং উজ্জ্বলের সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পরিচয় হয়েছিল। দুজনেই ডাক্তারি পড়ুয়া। ফলে আলাপ জমতে সেরকম সময় লাগেনি। তাঁদের বন্ধুত্ব পরে প্রেমের সম্পর্কে গড়ায়। এমনকি তারা পুরীতে গিয়ে বিয়েও সেরে নেয়, যা সকলের অজানা ছিল। তবে এর পর অন্তঃসত্ত্বা হন অনিন্দিতা। তবে তাঁর পরিবার সামাজিক নিয়ম মেনে বিয়ে করার পরামর্শ দেয়। কিন্তু তাঁর প্রেমিক উজ্জ্বল তাঁকে গর্ভপাত করতে জোর করে এবং সেখান থেকেই শুরু হয় তুমুল বচসা।
পরিবার সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছে, অনিন্দিতা সোমবার জানিয়েছিল যে সে কলকাতায় ফিরবে। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যে বাবা-মায়ের কাছে ফোন আসে যে তাঁর মেয়ে নাকি মালদহ মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়েছে। কীভাবে হঠাৎ কলকাতার পরিবর্তে মালদহে পৌঁছলেন অনিন্দিতা, তাও তাঁর পরিবার বুঝে উঠতে পারছিল না।
শুক্রবার রাতে অনিন্দিতার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজে রেফার করা হয়। তবে মাঝপথে পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে ফের মালদহ মেডিকেলে ফিরিয়ে আনা হয় তাঁকে। তবে শেষ পর্যন্ত শনিবার সকালে সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
আরও পড়ুনঃ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর রহস্যমৃত্যু, উপাচার্য এবং সিপিকে চিঠি পাঠাল মহিলা কমিশন
মৃতার পরিবার দাবি করছে, প্রেমিক উজ্জ্বলই তাঁকে বিষ খাইয়ে খুন করেছে। কারণ, তাঁর মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা বেরোতে দেখা গিয়েছিল। এমনকি তাঁরা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তদন্তকারীরা জানাচ্ছে, প্রেমিক উজ্জ্বলকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে আর অনিন্দিতার মৃত্যুর নেপথ্যে আসল কারণ কী, তা নিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এমনকি অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার রহস্যও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।