সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: টাকা পয়সার বড়সড় লেনদেন হলে অনেকেই মনে করে যে, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট (CA) রয়েছে তো, সে ঠিকই বাঁচিয়ে নেবে। তবে বাস্তব এতটা সহজ নয়। কিছু কিছু আর্থিক লেনদেন রয়েছে, যেখানে সামান্য গলদ মিললেই CA-ও আপনাকে বাঁচাতে পারবে না।
আপনি হয়তো জানেনও না যে, আয়কর দপ্তর প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার লেনদেনে কড়া নজরদারি করে। আর সেই ডেটা সরাসরি চলে আসে তাদের সিস্টেমে। ফলে কোনও অসঙ্গতি দেখতে পেলেই সরাসরি আসবে নোটিশ (Income Tax Notice)। আজকের প্রতিবেদনে জেনে নিন, কোন কোন লেনদেন করলে এরকম বিপাকে পড়তে পারেন।
বিদেশ ভ্রমণে 2 লক্ষ টাকার বেশি লেনদেন
যদি আপনি বছরে বিদেশ ভ্রমণে 2 লক্ষ টাকার বেশি খরচ করে ফেলেন, তাহলে সেই তথ্য সরাসরি আয়কর দপ্তরের কাছে চলে যাবে। তাই ভ্রমণের খরচের তথ্য গোপন রাখার কোনও সুযোগ নেই।
ক্রেডিট কার্ডে বছরে 2 লক্ষ টাকার বেশি লেনদেন
যদি ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বছরে 2 লক্ষ টাকার বেশি খরচ করেন, তাহলে তাও আয়কর দপ্তরের নজরে চলে আসে। হঠাৎ করে বড়সড় খরচ করলে বা পুরোনো লেনদেনের সঙ্গে খরচের হিসাব না মিললে নোটিশ আসতে পারে।
নগদে ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধ
যদি ক্রেডিট কার্ডের বিল নগদে 1 লক্ষ টাকা বা তার বেশি মেটান, তাহলেও সতর্ক থাকতে হবে। কারণ এই ধরনের নগদ লেনদেন কালো টাকার সঙ্গে যুক্ত কিনা, তাও খতিয়ে দেখে আয়কর দপ্তর। সন্দেহজনক লেনদেন ধরা পড়লেই নোটিশ আসতে পারে।
মিউচুয়াল ফান্ডে 10 লক্ষ টাকার বেশি বিনিয়োগ
যদি বছরে মিউচুয়াল ফান্ড, শেয়ার কিংবা বন্ডে 10 লক্ষ টাকার বেশি বিনিয়োগ করে ফেলেন, তাও নজরে আসে আয়কর দপ্তরের। বিনিয়োগের টাকার উৎস যদি স্বচ্ছ না হয়, তাহলে আয়কর দপ্তর আপনাকে নোটিশ পাঠাতে পারে।
30 লক্ষ টাকার বেশি দামের সম্পত্তি কেনা
যদি আপনি 30 লক্ষ টাকা বা তার বেশি মূল্যের কোনও সম্পত্তি কেনেন, তার তথ্য অটোমেটিক্যালি আয়কর দপ্তরের কাছে চলে যাবে। যদি সঠিক কাগজপত্র বা উৎসের প্রমাণ না থাকে, তাহলে সমস্যায় পড়তে পারেন।
ব্যাঙ্কে 10 লক্ষ টাকার বেশি নগদ জমা
আপনার অ্যাকাউন্টে নগদ যদি 10 লক্ষ টাকার বেশি জমা পড়ে, তাহলে তাও নজরদারির আওতায় চলে আসে। নিয়মিত আয়ের সঙ্গে যদি ব্যাঙ্কের টাকার সামঞ্জস্য না থাকে, তাহলে তৎক্ষণাৎ নোটিশ আসতে পারে।
আরও পড়ুনঃ একাদশ-দ্বাদশের নিয়োগ পরীক্ষাতেও ভিন রাজ্যের পরীক্ষার্থীদের ঢল, কী বলছে SSC-র পরিসংখ্যান?
ব্যবসায়িক নগদ লেনদেন
ব্যবসার ক্ষেত্রে যদি নগদ 50 হাজার টাকার বেশি লেনদেন করেন, তাহলে আয়কর দপ্তর নোটিশ দিতে পারে। সেক্ষেত্রে বিস্তারিত তথ্য না দিলে ঝামেলাও পড়তে পারেন।
এক কথায় বলতে গেলে, নিয়ম ভেঙ্গে বা অতিরিক্ত নগদ ব্যবহার করে কোনওরকম বড় লেনদেন করলেই তার জবাব সরকারকে দিতে হবে। তাই আজ থেকেই খেয়াল রাখুন, প্রতিটি খরচ আর জমার নথি যাতে পরিষ্কার থাকে। নাহলে কোনওদিন হঠাৎ করেই আয়কর দপ্তরের নোটিশ আপনার রাতের ঘুম কেড়ে নিতে পারে।