প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: দেখতে দেখতে পুজো প্রায় দোরগোড়ায় এসে ঠেকেছে, হাতে বাকি আর মাত্র কয়েকটা দিন। এমতাবস্থায় পুজোর বোনাস নিয়ে ফের ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হল কর্মচারীদের মধ্যে! শুধু বোনাস নয়, মাইনেও এখনও হাতে পায়নি কর্মীরা, আর তাই নিয়ে এবার বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হল কৃষ্ণনগর পুরসভায় (Krishnanagar Municipality)।
ঘটনাটি কী?
আনন্দবাজারের রিপোর্ট সূত্রে, শহরের জঞ্জাল সাফাই, নিকাশি ব্যবস্থার রক্ষণাবেক্ষণ, জল সরবরাহ, বিদ্যুৎ বিভাগ-সহ একাধিক দফতরের প্রায় ৮০০ জন কর্মী কাজ করে। দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে এদের নিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ সেই মজুরি পাচ্ছে না কৃষ্ণনগর পুরসভার কর্মীরা। প্রতি বছর পুজোর মাসে প্রথম তারিখে বেতন-সহ ৬,৫০০ টাকা বোনাস হিসেবে দেওয়া হত অস্থায়ী পুরকর্মীদের। কিন্তু এ বছর সেপ্টেম্বরের ১৪ তারিখ পেরিয়ে গেলেও বেতন হয়নি তাঁদের। এই প্রসঙ্গে অস্থায়ী পুরকর্মচারীরা বর্তমান পুরবোর্ডকে বার বার অনুরোধ করলেও, তারা একপ্রকার বেতন দিতে অসমর্থ বলে জানিয়ে দিয়েছে। যার ফলে কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।
বেতন বোনাস নিয়ে জোর শোরগোল
এদিকে কৃষ্ণনগর পুরসভা অস্থায়ী কর্মীদের বেতন নিয়ে দাবি করেছেন যে, পুরসভায় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ইতিমধ্যে সংঘর্ষ চরমে উঠেছে। যার জেরেই বেতন দিতে অপারগ হয়েছে পুরসভা। এই পরিস্থিতি। এছাড়াও পুরসভার বর্তমান শাসক গোষ্ঠীর দাবি, তহবিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকার কারণে বেতন বোনাস দিতে দেরি হচ্ছে। আবার প্রাক্তন পুরপ্রধানের গোষ্ঠীর পুরপ্রতিনিধিদের দাবি, বর্তমান ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী এক শ্রেণির কর্মীকে ছাটাই করতে গিয়েই পরিস্থিতি জটিল করে ফেলাতেই বেতন ও বোনাস দিতে সমস্যা হচ্ছে। প্রাক্তন পুরপ্রধান রিতা দাস জানিয়েছেন, ‘‘আমার সময়ে ও পূর্বতন চেয়ারম্যানদের সময়ে নিয়মিত বেতন ও উৎসব ভাতা দেওয়া হয়েছে কর্মচারীদের। চলতি বছর মার্চ মাস থেকে একদল কাউন্সিলরের অনৈতিক আচরণে বিল্ডিং প্ল্যানে অনু্মোদন বন্ধ রয়েছে। তাতেই আয়ের একাধিক উৎস বন্ধ। তবে দ্রুত সমস্যা মিটিয়ে ফেলে বেতন দেওয়ার চেষ্টা করছি।”
আরও পড়ুন: দুর্যোগ মাথায় নিয়েই ফোর্ট উইলিয়ামে প্রধানমন্ত্রী! বৈঠকে হাজির রাজনাথ-ডোভালরাও
কৃষ্ণনগর পুরসভার অস্থায়ী কর্মচারী সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রবীর দাস বলেন, ‘‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। আমরা শহরের নোংরা পরিষ্কার করি। কোনও দিন আমাদের উৎসবের মাসের বেতন বন্ধ হয়নি। হঠাৎ বলা হচ্ছে টাকা নেই। এখন আমরা কোথায় যাব?’’ তবে এই প্রসঙ্গে পুরসভার কার্যকরি পুরপ্রধান নরেশচন্দ্র দাস বলেন, “পুরসভার নিজস্ব তহবিল থেকে এদের বেতন ও বোনাস দেওয়া হয়। সেই তহবিলে সমস্যা আছে। আমরা সেই সমস্যা মিটিয়ে দ্রুত ফেলে বেতন দেওয়ার চেষ্টা করছি।”