বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: নেপাল, ফ্রান্স ইন্দোনেশিয়ার পর এবার দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারের বিরুদ্ধে পথে নামলেন ফিলিপাইনের জনসাধারণ (Philippines Public Protests)। সোমবার, দেশটির রাষ্ট্রপতি ফার্দিনান্দ মার্কোস অবশ্য জানিয়েছেন, রাস্তার বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী সাধারণ মানুষকে আমি একটুও দোষারোপ করছি না। কারণ, দুর্নীতি এবং কেলেঙ্কারির ঘটনায় তাদের বিক্ষোভ ন্যায্য। তবে, দেশের আমজনতাকে শান্তিপূর্ণভাবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। সেই সাথে, দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে কঠোর তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন মার্কোস।
শীঘ্রই গণআন্দোলনের দেখা মিলতে পারে ফিলিপাইনে
দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছেন ফিলিপাইনের মানুষজনও। সোমবার, দেশটির একাধিক এলাকায় বিভিন্ন কেলেঙ্কারি ও দুর্নীতির ঘটনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন স্থানীয় জনতা। যদিও রয়টার্সের রিপোর্ট অনুযায়ী, আগামী 21 সেপ্টেম্বর ফিলিপাইনের ম্যানিলার কিছু আবাসিক এলাকায় বিপুল সংখ্যক মানুষ জড়ো হয়ে বড়সড় বিক্ষোভের পরিকল্পনা করছেন। যদিও সে খবর জানতে বাকি নেই দেশটির রাষ্ট্রপতি মার্কোসের।
গোটা ঘটনা নিবিড় ভাবে পর্যবেক্ষণের সাথে সাথেই ফিলিপাইনের রাষ্ট্রপতি জানিয়েছেন, আমি যদি রাষ্ট্রপতি না হতাম, তাহলে আমি সম্ভবত তাদের সাথে রাস্তায় নামতাম। তাঁর কথায়, ফিলিপাইনের মানুষ যে বিক্ষোভে নেমেছে তা একেবারেই যথাযথ। এই প্রতিবাদ ন্যায্য। তারা তাদের হকের দাবি বুঝে নিতে পথে নেমেছেন। দুর্নীতি দেখলে তার প্রতিবাদ অবশ্যই করা উচিত, তবে তা শান্তিপূর্ণভাবে। দেশজুড়ে যাতে বিশৃংখল পরিচিতি তৈরি না হয়, সেজন্য সকলকে শান্তির পথে থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন ফিলিপাইনের রাষ্ট্রপতি মার্কোস।
অবশ্যই পড়ুন: পাকিস্তান বধ করে পয়েন্ট তালিকার চেহারাই বদলে দিল ভারত, সুপার ফোরে যাচ্ছে এই ২ দল!
কোন দুর্নীতির বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন ফিলিপাইনের মানুষ?
ব্লুমবার্গের রিপোর্ট অনুযায়ী, ফিলিপাইনের সরকার গত তিন বছরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে 545 বিলিয়ন পেসো অর্থাৎ প্রায় 9.6 বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে। অভিযোগ, বন্যার দোহাই দিয়ে এই প্রকল্পগুলিতে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। শুধু তাই নয়, এমন অনেক প্রকল্প রয়েছে যেগুলিতে আজও হাত দেয়নি সরকার। এদিকে, বন্যা নিয়ন্ত্রণের নাম করে নানান প্রকল্প থেকে বিপুল অর্থ পকেটে পুরেছে সরকারি আমলারা।ফিলিপাইনের জনগণের বক্তব্য, ক্ষমতাসীন সরকারের একাধিক এমপি এবং সেনেটার প্রকল্পের নাম করে কোটি কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন। আর এইসব ঘটনাকে সামনে রেখে প্রকল্প নিয়ে আর্থিক কেলেঙ্কারি অর্থাৎ দুর্নীতির বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন ফিলিপাইনের জনসাধারণ।
যদিও ইতিমধ্যেই দেশটির রাষ্ট্রপতি মার্কোস আশ্বাস দিয়েছেন, যারা জনসাধারণের অর্থ চুরি করেছে, আদতেই যারা দুর্নীতিগ্রস্ত, তদন্তের হাত থেকে তারা কেউ রেহাই পাবে না। একই সাথে এদিন মার্কোস বলেন, সরকার 2026 সালের জন্য সমস্ত বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প বাতিল করেছে এবং যে অর্থ বেঁচে রয়েছে সেগুলি মূলত শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং কৃষি কাজের ক্ষেত্রে ব্যয় করা হবে।