প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গুলশন কলোনিতে অস্ত্র হাতে তাণ্ডবের ঘটনায় এখনও অধরা মূল অভিযুক্ত মিনি ফিরোজ (Mini Feroz)! দেখতে দেখতে আজ চার দিন পার, কিন্তু এখনও পুলিশের নাগালে নেই না মূল অভিযুক্ত ফিরোজ খান ওরফে মিনি ফিরোজ। এদিকে অবাক করা বিষয় হল ফেসবুকে সে সক্রিয়। প্রায় প্রতিদিনই আসছে নতুন নতুন পোস্ট। খোদ কাউন্সিলরকে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে ভিডিও পোস্ট করছে ফিরোজ। এমতাবস্থায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে জনসমক্ষে। বাড়ছে রাজনৈতিক তরজাও।
এখনও অধরা মিনি ফিরোজ!
গত বৃহস্পতিবার ভর সন্ধ্যায় জনসমক্ষে গুলশন কলোনিতে সিনেমার কায়দায় গুলি-বোমা ছুড়েছিল একদল দুষ্কৃতী। সেই ঘটনায় নাম উঠে আসে স্থানীয় দাপুটে মুখ ফিরোজ খানের। অনেকেই তাঁকে ‘মিনি ফিরোজ’ নামে চেনে। কিন্তু পুলিশে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে দেখে ওই চত্বরেই নেই ফিরোজ। ঘটনার পর থেকেই সে নাকি বেপাত্তা। কিছুতেই অভিযুক্তকে খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ। এদিকে অবাক করা বিষয় হল সামাজিক মাধ্যমে প্রায় প্রতিদিনই সে রিল-ভিডিও পোস্ট করছেন। কখনও কাউন্সিলরকে উদ্দেশ্য করে হুমকি দিচ্ছেন, তো কখনও নিজের অবস্থান ঘিরে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছেন প্রশাসনকে। এদিকে এত সক্রিয় থাকলেও পুলিশ প্রশাসন কিছুতেই ধরতে পারছে না তাঁকে। আর তাতেই শোনা যাচ্ছে এসবই নাকি ফিরোজকে না ধরার প্রশাসন এবং পুলিশের পূর্ব পরিকল্পনা।
ঘনঘন পরিবর্তন করছে জায়গা!
এদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, ফিরোজ সড়কপথ দিয়েই বিহারে গিয়েছেন। সেখানে একাধিক অস্ত্র ব্যবসায়ীর সঙ্গে তার যোগাযোগ রয়েছে। এমনকি সেখানেও ঘন ঘন জায়গা বদল করে গা-ঢাকা দিচ্ছে। কোথাও ঘণ্টা দু’এক বেশি থাকছেন না। সিম ছাড়াই ওয়াইফাই জোন থেকে ফেসবুকে সক্রিয় থেকে প্রশাসনকে ঘোল খাওয়াচ্ছেন। ফলে তার লোকেশন ট্র্যাক করা খুব কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে কলকাতার কিছু পরিচিত মুখের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে তিনি এখনও রাজ্য রাজনীতির ‘ছায়ায়’ রক্ষা পাচ্ছেন কি না, তা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা।
আরও পড়ুন: মাঝরাতে আচমকাই বোমা বিস্ফোরণ মুর্শিদাবাদে! গুরুতর আহত ১, উচ্চমাধ্যমিক পড়ুয়া-সহ গ্রেপ্তার ৩
ফিরহাদকে কটাক্ষ সজল ঘোষের
সম্প্রতি গুলশন কলোনিতে অস্ত্র তাণ্ডব নিয়ে পুর-নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম সংবাদমাধ্যমে কটাক্ষ করে বলেন যে, “এদের গ্রেফতার হওয়া উচিত। এর সভ্য সমাজের মানুষ নয়। এদের জেলের ভিতরে থাকা উচিত। আমাদের রাজ্যে, এত পুলিশ নেই যে প্রতিটা গলিতে, গলিতে পুলিশ দাঁড় করিয়ে দেওয়া যায়। কিন্তু, এক্ষেত্রে আদালত যদি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়, তাহলে একজনকে শাস্তি দিয়ে, অন্য মানুষ ভয় পাবে, অপরাধ করতে ভয় পাবে।” তবে ফিরহাদ এর এই মন্তব্য কে কটাক্ষ করেছে বিজেপি নেতা সজল ঘোষ। তিনি বলেন, “Enough is Enough, It’s time to Act, তিন-চার লাইন ইংরাজি বললে দায় সাড়া যায় না। আপনার সহকর্মী ..আপনার বোরো চেয়ারম্যানের নামের আগে চন্দ্রবিন্দু যোগ হয়ে যেত, যদি বন্দুকটা কাটমানির না হত।” এমতাবস্থায় ফিরোজকে ধরা নিয়ে রাজনৈতিক শিবিরে শুরু হয়েছে গুঞ্জন।