প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: দেখতে দেখতে আরজি কর ঘটনার গোটা একটা বছর কেটে গিয়েছে। কিন্তু এখনও মেলেনি কোনও সুবিচার, তাইতো এখনও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে নির্যাতিতার পরিবার। এমতাবস্থায় আরজি কর হাসপাতালের ছায়া দেখা গেল পাঁশকুড়ার (Panskura) একটি সরকারি হাসপাতালে! হাসপাতালের মধ্যেই এক মহিলা সহকর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল আরেক পুরুষ কর্মীর বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পাঁশকুড়া থানার পুলিশ। তদন্ত জারি রেখেছে পুলিশ।
আরজি করের ছায়া এবার পাঁশকুড়ায়!
রিপোর্ট সূত্রে, ঘটনাটি ঘটেছে পাঁশকুড়ার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের। ওই হাসপাতালেই একটি বেসরকারি সংস্থার অধীনে ওয়ার্ড গার্ল হিসেবে কাজ করতেন তমলুক থানার অন্তর্গত এলাকার এক তরুণী। এদিকে ওই হাসপাতালেরই ফেসিলিটি ম্যানেজার হলেন অভিযুক্ত শেখ জাইর আব্বাস খান। তিনিও ওই একই বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে কাজ পেয়েছিলেন বলে খবর। অভিযোগ, গত ১৪ সেপ্টেম্বর, রবিবার কোনও এক ছুতোয় ওই মহিলা কর্মীকে ডেকেছিল ওই যুবক। কাজ থেকে বরখাস্ত করে দেওয়ার হুমকি দেওয়ার ছলে নির্যাতিতাকে হাসপাতালের মধ্যেই ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। কাউকে কিছু না জানানোর ভয় দেখানো হয়! কিন্তু সেই হুমকি উপেক্ষা করে গতকাল অর্থাৎ সোমবার পাঁশকুড়া থানায় ওই তরুণী লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযুক্তকে
নির্যাতিতা এদিন অভিযোগ জানিয়ে বলেন যে, মাঝেমধ্যেই হাসপাতালের ফেসিলিটি ম্যানেজার অভিযুক্ত শেখ জাইর আব্বাস খান তাঁকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন। জানা গিয়েছে, হাসপাতালের স্টোররুমের মধ্যেই নির্যাতিতাকে অত্যাচার করে যুবক। দিনের পর দিন এই অত্যাচার মেনে নিতে না পারায় পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে বাধ্য হন তিনি। এরপরেই হাসপাতালের মধ্যে ক্ষোভ ছড়ায়। অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই হাসপাতালের কর্মরত বহু মহিলাকর্মী অভিযুক্তের বিরুদ্ধে নির্যাতনের নালিশ ঠোকে।
আরও পড়ুন: প্রাথমিক শিক্ষকের বদলি অবৈধ ঘোষণা হাইকোর্টের! প্রভাব পড়বে ৩২০০০ চাকরিতে?
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের এক অস্থায়ী কর্মী অভিযুক্তের বিরুদ্ধে জানিয়েছেন, “যে এই নির্যাতন চালাত তার একমাত্র আড্ডা খানা ছিল হাসপাতাল। সকালে আসত রাত ১১টায় চলে যেত। কোনও স্টাফ এতক্ষণ থাকে? দীর্ঘদিন ধরে এই সব করেছে। আমরা তো সাত-আট হাজার টাকার কাজ করি। সেই কাজ চলে যায় কীভাবে পেট চলবে তাই চুপ থাকতাম। কিন্তু ওই লোকটা দিনের পর দিন অত্যাচার করত।” এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি শেখ সমীরুদ্দীন বলেন, “এটা একটা বিকৃত মানসিকতার প্রভাব। এ ধরনের জঘন্য ঘটনার তীব্র ধিক্কার, নিন্দা জানাই। অভিযুক্তের কঠোর শাস্তি হোক।”