প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: এসএসসির একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় সরগরম নোয়া বিতর্ক। যা নিয়ে কম বিতর্ক শুরু করেনি বিরোধী দল বিজেপি শিবির। এবার সেই নোয়া বিতর্ক নিয়ে সরাসরি মুখ খুললেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee)। জানিয়ে দিলেন সোশ্যাল মিডিয়ায় নাকি পরীক্ষা নিয়ে পরিকল্পনা মাফিক ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে।
ঠিক কী ঘটেছিল?
গত রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, এসএসসি একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা ছিল। সেই পরীক্ষা দিতে কালনা হিন্দু গার্লস উচ্চ বিদ্যালয়ে এসেছিলেন মনীষা সিকদার নামে এক চাকরিপ্রার্থী। কিন্তু তাঁকে পরীক্ষা হলে ঢোকার আগে নাকি খুলতে বলা হয়েছিল হাতের নোয়া। এদিকে তিনি তা করতে অস্বীকার করেছিলেন। তাঁর সাফ কথা এক মাস আগে বিয়ে হয়েছে, কোনও পরিস্থিতিতেই নোয়া খুলবেন না। এরপর পরীক্ষাকেন্দ্র ছেড়ে চলে যান তিনি। ঘটনাটি রীতিমতো চর্চায় উঠে আসে। শেষমেশ নাকি তিনি পরীক্ষা না দিয়েই বাড়ি ফিরেছিলেন বলে রটেছিল। কিন্তু পরে SSC-র তালিকায় জানা যায় অন্য তথ্য। এসএসসি-র পরীক্ষার্থীর তালিকায় নাম রয়েছেন মনীষা সিকদারের। অর্থাৎ পরীক্ষা হলে সই করে পরীক্ষায় বসেছেন তিনি। এবার সেই নোয়া বিতর্কে সুর চড়ালেন আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
কী জানালেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়?
শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ তথা আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আজ সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন যে, “মনীষা সিকদার, রোল নম্বর ১২২২৫২৯০৩০৫৭। ১৪০০ নম্বর পরীক্ষা কেন্দ্রে সিট পড়েছিল তাঁর। চেকিংয়ের সময় তাঁর হাতে ধাতব বালা থাকায় মেটাল ডিটেক্টর বেজে ওঠে। প্রথমে সে পরীক্ষাকেন্দ্র ছেড়ে যায়। তবে স্বেচ্ছায় ফিরে এসেছিলেন তিনি। পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন।” তিনি আরও বলেন যে, “এসএসসি পরীক্ষার্থী মণীষা সিকদার প্রেসের কাছে ওসব বলেছিলেন। যাতে প্রচার হয়। কিন্তু তিনি ফিরে গিয়ে আবার পরীক্ষাও দিয়েছেন। যদি পাশ করেন, তাহলে চাকরি পাবেন।” অথচ এই বিষয়টা নিয়েই নানা মিথ্যে রটনা উঠেছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়।
আরও পড়ুন: পুরীর সৈকতের পাশে প্রেমিককে গাছে বেঁধে প্রেমিকাকে গণধর্ষণ!
বিজেপিকে কড়া জবাব কল্যাণের
পরীক্ষার্থীর নোয়া খোলা নিয়ে এদিন শাসকদলের প্রতি সুর চড়িয়েছিল বিজেপি। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি ছিল, নোয়া খুলতে বলা হচ্ছে, কিন্তু হিজাব তো খুলতে বলা হচ্ছে না। আর সেই হিজাব প্রসঙ্গেও পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “হিজাবের মধ্যে তো আর মেটাল থাকে না। সে তো ছেলেদের ক্ষেত্রেও বেল্ট খুলতে হয়।” যদিও পরীক্ষার গাইডলাইন এবং রুটিন দেওয়ার সময় এসএসসি-র তরফ থেকে আগেই স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে, কোনও পরীক্ষার্থী ধাতব জিনিস পরীক্ষা হলে নিয়ে আসবেন না, তা গ্রাহ্য করা হবে না। কিন্তু এরপরেও এই ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করায় এবার সরাসরি মুখ খুললেন কল্যাণ।