বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: দলে নেই কোনও বিদেশি। AFC চ্যাম্পিয়নস লিগ টুয়ের মঞ্চে সেই আহাল এফকের কাছেই হারতে হল ভারতের সবচেয়ে বড় দল মোহনবাগানকে (Ahal FK Beats Mohun Bagan)। নেপথ্যে রয়েছে, সুযোগ নষ্টের রোগ। এছাড়াও একে অপরের মধ্যে বোঝাপড়ার অভাব থাকায় মঙ্গলের ম্যাচে মঙ্গলকর্ম করতে পারলেন না হোসে মোলিনার ছেলেরা। ম্যাচ শেষে ফলাফল আহাল 1, মোহনবাগান শূন্য।
ঘরের মাঠেই প্রতিপক্ষের কাছে নাক কাটাল সবুজ মেরুন
মোহনবাগানের ঘরের মাঠ। তাই দাপটটা বাগান ব্রিগেডেরই বেশি হওয়া উচিত। তবে আহালের ম্যাচে ধরা পড়ল ঠিক ভিন্ন দৃশ্য। যুবভারতীর মাঠে শুরু থেকেই বাগানের উপর চাপ বাড়াতে থাকে প্রতিপক্ষ আহাল এফকে। এদিন প্রতি আক্রমণমূলক ফুটবল খেলতে গিয়েই আহালের ফাঁদে পা দেয় সবুজ মেরুন বাহিনী। আর তাতেই মোলিনার ছেলেদের চেপে ধরে তুর্কমেনিস্তানের দলটি।
AFC চ্যাম্পিয়নস লিগের স্বার্থে জাতীয় শিবিরে প্লেয়ার ছাড়তে সরাসরি না করে দেয় সবুজ মেরুন। এমনকি অনূর্ধ্ব 23 প্লেয়ারদেরও ধরে রেখেছিল বাগান। সেসব সত্ত্বেও AFC-র মঞ্চে পুরোপুরি নিজেদের নিংড়ে দিতে পারলেন না বাগান ফুটবলাররা। কী হল কোচ মোলিনার কঠিন কৌশলের? এদিন প্রথমার্ধে অবশ্য একে অপরের বিরুদ্ধে সুযোগ তৈরি করে গোল করতে পারেনি কোনও দলই।
শুরুর 45 মিনিটে বারবার ধাক্কা খাওয়ায় দ্বিতীয়ার্ধে পরিকল্পনা বদল করেন সবুজ মেরুন কোচ। মাঠে নামানো হয় জেমি ম্যাকলারেন, অনিরুদ্ধ থাপা, রবসনদের। তাতে অবশ্য বাগান ব্রিগেডে কিছুটা জোর আসে। কিন্তু প্রতিপক্ষ যে ছাড়ার পাত্র নয়। তাই তো বিদেশিহীন দল নিয়ে সবুজ মেরুনকে একপ্রকার চেপে ধরেছিল তারা। যদিও সুযোগ নষ্টের রোগ কাটিয়ে বারবার ছন্দে ফিরতে চাইছিল মোলিনার দল। কিন্তু তাতে কাজের কাজ হয়নি।
প্রথমার্ধের মতোই 67 মিনিটে পৌঁছেও গোল করার সুযোগ নষ্ট করে গঙ্গা পাড়ের দল। এবার অবশ্য সেই ভুলটা হয়েছিল অজি বিশ্বকাপার জেসন কামিংসের হাত ধরে। যার ফলে মানসিকভাবেও খানিকটা ভেঙে পড়ছিল বাগান ব্রিগেড। আর সেই দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে বারবার বাগানের ঘরের মাঠে বাগানেই টপকে যাওয়ার চেষ্টা করেছে আহাল। শেষ পর্যন্ত সেই চেষ্টার সুফলও পেয়েছে তারা। খেলা 87 মিনিটে গড়াতেই যুবভারতীতে একটা হালকা ঝড় ওঠে। প্রত্যাশা মতোই গোল করে আহালকে এগিয়ে দেন আনায়েভ। এরপর আর গোল শোধ দিতে পারেনি শেষ ইন্ডিয়ান সুপার লিগ জয়ী মোহনবাগান। যার জেরে, ঘরের মাঠেই প্রতিযোগিতার শুরুতে বড় ধাক্কা খেয়ে গেল সবুজ মেরুন বাহিনী। ধাক্কা খেলেন মোলিনাও।
অবশ্যই পড়ুন: ম্যাচ প্রতি দেবে ৪ কোটি ৫০ লাখ, ২১ দিনের মাথায় BCCI এর নতুন স্পনসর হল অ্যাপোলো টায়ার্স
উল্লেখ্য, আহালের বিরুদ্ধে ম্যাচ শুরুর আগে অবশ্য মোহনবাগানের সফল কোচ মোলিনা কিছুটা আত্মবিশ্বাসের সুরেই বলেছিলেন, মোহনবাগানকে এশীয় তরে উন্নীত করাই আমার বড় লক্ষ্য। তবে মঙ্গলবারের ম্যাচের সাথে মিলল না সেই বক্তব্য। যে প্রতিযোগিতাকে পাখির চোখ করে এতদিন প্রস্তুতি সেরে এসেছেন কামিংসরা, এবার সেই যাত্রার শুরুতেই ধাক্কা খেল ময়দানের এই প্রধান।