প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে একেতেই উত্তাল পরিস্থিতি রাজ্য রাজনীতিতে। শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গত ৭ এবং ১৪ সেপ্টেম্বর, দীর্ঘ নয় বছর পর এসএসসি দ্বিতীয়বার পরীক্ষা নেওয়া হল। ইতিমধ্যেই গতকাল নবম ও দশম শ্রেণীর উত্তরপত্র ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়ে গিয়েছে। আর এমন পরিস্থিতির মাঝেই ফের টেট চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠল বাঁকুড়া (Bankura)। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাঠে নামতে বাধ্য হল পুলিশ।
ঠিক কী ঘটেছিল?
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার, ২০২২ সালের টেট উত্তীর্ণদের বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছিল বাঁকুড়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ। এই ভবন ঘেরাও করে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে চরম বিক্ষোভ দেখান চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের স্লোগান ছিল, ‘নেপাল থেকে শিক্ষা নাও, ২০২২ সালের টেটের নিয়োগ দাও’। এদিন বাঁকুড়ার তামলীবাঁধ ময়দান থেকে মিছিল শুরু হয়ে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ পর্যন্ত যান টেট উত্তীর্ণরা। সেখানেই বিক্ষোভে শামিল হন তাঁরা। পুলিশের সঙ্গে বচসাও বাঁধে তাঁদের।
নেপালের মত আন্দোলনের হুঁশিয়ারি
বাঁকুড়ার আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, গত ৩ বছর ধরে লাগাতার আন্দোলন হয়েই চলেছে টেট পরীক্ষা নিয়ে। কিন্তু হাজার হাজার পরীক্ষার্থীর আবেদন-নিবেদনের পরেও নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার গড়িমসি করে চলেছে প্রতিনিয়ত। এককথায় পরীক্ষার্থীদের আবেদনে তোয়াক্কা করছেন না তাঁরা। তাই বিক্ষোভকারীরা হুঁশিয়ারি দিতে জানিয়েছেন এভাবে যদি চলতে থাকে, তাহলে নেপালের মতো এ রাজ্যেও নাকি গণআন্দোলন গড়ে উঠতে বেশি সময় লাগবে না। এদিন টেট উত্তীর্ণরা ক্রমেই দাবি করে চলেছে যে, রাজ্য সরকারের পালাবদলের পর যে কয়েকটি প্রাথমিক শিক্ষক পদে নিয়োগের টেট পরীক্ষা হয়েছে তার মধ্যে সর্বাধিক স্বচ্ছ টেট পরীক্ষা হয়েছে ২০২২ সালে। তারপরেও কেন নিয়োগ করছে না সরকার, তার উত্তর দিতেই হবে।
আরও পড়ুন: নবম-দশম নিয়োগ পরীক্ষার উত্তরপত্র প্রকাশ করল SSC! কবে থেকে শুরু হবে চ্যালেঞ্জ প্রক্রিয়া?
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগে কলকাতাতেও টেট উত্তীর্ণদের একাংশ তুমুল বিক্ষোভ করেছিল প্রাথমিকে নিয়োগ সংক্রান্ত প্রক্রিয়া নিয়ে। তুমুল বিক্ষোভ দেখা গিয়েছিল বিধানসভার সামনে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে যেতে দেখা গিয়েছিল ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়-সহ একাধিক পুলিশ আধিকারিককে। আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ যখন চরম আকার ধারণ করে, তখন তাঁদের জায়গা ছাড়তে বলা হলেও তাঁরা না শুনলে শেষ পর্যন্ত টেনে হিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয় আন্দোলনকারীদের। সেদিনও সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করতে গিয়ে উঠে এসেছিল নেপাল প্রসঙ্গ। এমতাবস্থায় বাঁকুড়াতেও সেই একই হুঙ্কার শোনা গেল।