কৃশানু ঘোষ, কলকাতাঃ খুব শীঘ্রই দলের নতুন জাতীয় সভাপতি বেছে নিতে চলেছে ভারতীয় জনতা পার্টি (BJP)। আর এই লক্ষ্যে জোর কদমে কাজ চলছে দলের অন্দরে। জানা গিয়েছে, বিহারের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগেই এই সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে দল। তবে, এক্ষেত্রে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে নব-নির্বাচিত উপরাষ্ট্রপতি সিপি রাধাকৃষ্ণণ। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। কিন্তু কেন? চলুন এই বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত।
আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ওবিসি সম্প্রদায়ের অন্তর্গত, পাশাপাশি আমাদের দেশের নব নির্বাচিত উপরাষ্ট্রপতি সিপি রাধাকৃষ্ণণও ওবিসি সম্প্রদায়ের অন্তর্গত। অন্যদিকে, আমাদের বর্তমান রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু একজন আদিবাসী মহিলা, এবং আমাদের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ছিলেন দলিত সম্প্রদায়ের অন্তর্গত। তাই, নতুন জাতীয় সভাপতি করার উদ্দেশ্যে বিজেপি এবং আরএসএস, একজন ব্রাহ্মণ নেতার অনুসন্ধান করছেন, যিনি দলের সভাপতি হলে সমাজের সমস্ত সম্প্রদায়ের মধ্যে ভারসাম্য বজায় থাকবে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কে হবেন সেই নতুন সভাপতি?
বিজেপি এবং আরএসএসের একজন ঘনিষ্ঠ এবং নির্ভরযোগ্য সূত্র নবভারত টাইমস অনলাইনকে দলের জাতীয় সভাপতি নির্বাচন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, নতুন সভাপতি নির্বাচন করার জন্য গত কয়েকদিন ধরে শীর্ষস্থানীয় বিজেপি নেতাদের মধ্যে কমপক্ষে দুটি বৈঠক হয়েছে। তবে, এখনও পর্যন্ত কাউকেই নির্ধারণ করা হয়নি।
কিন্তু, কারা রয়েছেন এই তালিকায়? কারা হতে পারেন পরবর্তী বিজেপি-র নতুন জাতীয় সভাপতি। চলুন দেখে নেওয়া যাক কারা এই পদের প্রবল দাবীদার।
আরও পড়ুনঃ মোদীর জন্মদিনে তাঁর সাথেই বানিয়ে ফেলুন নিজের AI ফটো! রইল প্রসেস ও প্রম্পট
জে.পি. নাড্ডা
প্রথমেই নাম রয়েছে জে.পি. নাড্ডার। তিনি বর্তমানে দলের সভাপতি এবং মোদী-অমিত শাহের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। বিজেপির একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, দলের সংবিধান একজন ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে দলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করার জন্য অনুমোদন দেয়। তবে, নাড্ডা মাত্র এক বছর এই দায়িত্ব পালন করেছেন। এর আগে তিনি ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন এবং গত দেড় বছর ধরে মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য আবেদন করে আসছেন। ওই সূত্র আরও জানিয়েছে যে, নাড্ডার পদত্যাগ করার এবং আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় সভাপতি হিসেবে পুনরায় নির্বাচণ হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
দীনেশ শর্মা
এই পদের দ্বিতীয় প্রবল দাবীদার হলেন দীনেশ শর্মা। তিনি উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যসভার সাংসদ। তিনি একজন ব্রাহ্মণ এবং RSS দিয়ে নিজের রাজনৈতিক যাত্রা শুরু করেছেন। দলের ভেতরে তাঁকেও গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থী হিসেবে ভাবা হচ্ছে। তিনি গুজরাটের মতো রাজ্যে দলের জাতীয় সহ-সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। লখনউয়ের প্রাক্তন মেয়র দীনেশ শর্মাকে পূর্বে বিজেপির সম্ভাব্য সভাপতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
দেবেন্দ্র ফড়নবিশ
এই পদের তৃতীয় যিনি দাবীদার, তাঁর নাম শুনলে হয়তো আপনি একটু অবাক হবেন। তিনি হলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ। গত বছর মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে নিরঙ্কুশ জয় এনে দেওয়া ফড়নবিশকেও দলের সম্ভাব্য জাতীয় সভাপতি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। আর এর মূল কারণ, তিনি একজন তরুণ এবং জনপ্রিয় নেতা। ওই সূত্র আরও জানিয়েছে যে যদি ফড়নবিশ সত্যিই দলের জাতীয় সভাপতি হিসাবে নির্বাচিত হন, তবে দলের সাধারণ সম্পাদক বিনোদ তাওড়েকে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচন করা হতে পারে।
সব মিলিয়ে, বিজেপি বর্তমানে এমন একজন সভাপতির খোঁজ করছে, যিনি ব্রাহ্মণ হওয়ার পাশাপাশি দলের ভেতরে একজন গ্রহণযোগ্য ব্যাক্তিত্ব।