প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বছর ঘুরলেই রাজ্যে ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। তাই তোড়জোড় পর্ব এখন থেকেই শুরু করে দিয়েছে শাসক দল থেকে শুরু করে বিরোধী দলগুলি। অন্যদিকে নির্বাচনের সময় যত এগিয়ে আসছে ততই নির্বাচন তালিকা নিয়ে জাতীয় নির্বাচন কমিশন একের পর এক পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে। এমতাবস্থায় রাজ্যে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সমীক্ষার (Special Intensive Revision) জন্য ১৫ কোটি আবেদনপত্র ছাপার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়াল।
দ্বিগুণ সংখ্যক ফর্ম ছাপানোর নির্দেশ!
রাজ্যে ভোটার তালিকার ‘বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা’ ঘিরে জোর প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন দফতর। সমীক্ষার মাধ্যমে জানা গিয়েছে, রাজ্যে এইমুহুর্তে প্রায় ৭.৬৫ কোটি ভোটার রয়েছেন। আর তাঁদের প্রত্যেকের জন্য দ্বিগুণ সংখ্যক ফর্ম ছাপানো হবে বলে মনে করা হচ্ছে। যার মধ্যে একটি ভোটারের কাছে থাকবে এবং অন্যটি বুথ লেভেল অফিসার বা BLO-রা সংগ্রহ করবেন। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ভোটারদের তথ্য যাচাই ও আপডেটের জন্য প্রায় ১৫ কোটি আবেদনপত্র ছাপানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তবে ছাপানোর আগে প্রতিটি ভোটারের নাম ও তথ্যসহ আবেদনপত্র অনলাইনে দিল্লি থেকে পাঠানো হবে।
কোথায় হবে আবেদনপত্র ছাপানোর কাজ!
আনন্দবাজার রিপোর্ট অনুযায়ী, গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার, রাজ্যের মুখ্যনির্বাচনী সিইও মনোজ আগরওয়াল SIR বা ‘বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা’ নিয়ে আধিকারিকদের একটি প্রশিক্ষণ দেন। প্রশিক্ষণে ছিলেন ইলেকটোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার, অ্যাসিসট্যান্ট ইলেকটোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার, এডিএম এবং কয়েক জন জেলাশাসক। এছাড়াও কোন কোন জেলায় ফর্ম ছাপানো যাবে, সেই তথ্য রাজ্যের আধিকারিকদের কাছে জানতে চেয়েছে সিইও-র দফতর। যদি ছাপানোর ক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট জায়গা ঠিক না হয়, তাহলে কলকাতা থেকেই আবেদনপত্র ছাপিয়ে তা বাকি জেলায় পাঠানো হবে। যেমনটি বিহারের ক্ষেত্রে হয়েছিল। আবেদনপত্র ছাপানো হলেই পঞ্চায়েত স্তরে তা পাঠানো হবে।
বিহারের মতোই হবে ফর্মের গঠন
নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, প্রতিটি ভোটারের নাম ও তথ্যসহ আবেদনপত্রগুলি সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের ২০০২ ও ২০২৫ সালের ভোটার তালিকা মিলিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রায় দু’কোটির বেশি পরিবারের তথ্য যাচাই করা হবে এই পর্যায়ে। শনাক্তকরণের এই ধাপ শেষ হলেই এসআইআরের ৭০% কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছে সিইও-র দফতর। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মোতাবেক কিছু পরিবর্তন হতে পারে। তবে বিহারের চেয়ে আবেদনের ফর্মে খুব বেশি পরিবর্তন হবে না। বিহারের মতোই ফর্মের তথ্য প্রায় ৯৫-৯৭ শতাংশ একই থাকবে।
আরও পড়ুন: অশালীন আচরণ শিক্ষকের! বাগদার স্কুলের অ্যাসিস্টেন্ট হেড স্যারকে ধরে পেটাল ছাত্রীরা
প্রসঙ্গত, চলতি বছর পুজোর আগেই ইআরও এবং এইআরও-রা রাজ্যের প্রায় ৭৫ হাজার বিএলও-কে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আগামী ২১ ও ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই প্রশিক্ষণ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ পুজোর পরেই অক্টোবর থেকে শুরু হতে পারে রাজ্যে SIR প্রক্রিয়া। তবে এখনও নির্দিষ্ট করে কোনো দিনক্ষণ জানানো হয়নি। সেই নিয়ে খুব শীঘ্রই তথ্য পরিবেশন করা হবে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে।