প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ভিনরাজ্যে বাংলাভাষীদের উপর বাড়তে থাকা অত্যাচার নিয়ে বেশ সরগরম রাজ্য রাজনীতি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে পরিচয় শ্রমিকদের ওপর অত্যাচারের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। এমনকি অনেকের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে। বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে আক্রান্ত বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য শ্রমশ্রী প্রকল্প (Shramashree) শুরু করার ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই নির্দেশ কার্যকর হতেই এবার এই প্রকল্প নিয়ে বড় অভিযোগ উঠে এল তামিলনাড়ুতে আটকে পড়া মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের তরফ থেকে।
ঘটনাটি কী?
টিভি ৯ বাংলার রিপোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলা লালগোলা নবগ্রাম সহ একাধিক এলাকার পরিযায়ী শ্রমিকরা তামিলনাড়ুতে কাজের উদ্দেশে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে তাঁরা স্থানীয়দের কাছে আক্রমণের শিকার হন। মারধরের কারণে গুরুতর আহত হন তাঁরা। সেই কারণে কয়েকদিন আগে হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন ওই পরিযায়ী শ্রমিকরা। এদিকে পরিযায়ী শ্রমিকদের মারধরের পাশাপাশি তাঁদের সমস্ত কিছু কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। যার ফলে বঙ্গে ফিরতে পারছেন না পরিযায়ী শ্রমিকেরা।
বাড়ি ফিরতে পারছেন না আটকে পড়া শ্রমিকরা
বিগত কয়েক মাস ধরে ভিনরাজ্যে বাঙালি শ্রমিকদের ‘অত্যাচরিত’ হওয়ার ঘটনা বারংবার ঘটতে থাকায়, সেখান থেকে তাঁদের ফিরে আসার নিদান অনেকদিন আগেই ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি ঘোষণার পর থেকেই পরিযায়ী শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চালাচ্ছিল রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ বোর্ড। চালু করা হয়েছিল শ্রমশ্রী প্রকল্প। এদিকে সেই প্রকল্প নিয়ে এবার বড় অভিযোগ তুলল তামিলনাড়ুতে আটকে পড়া বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরা। তাঁদের অভিযোগ, শ্রমশ্রী প্রকল্পে, পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরার জন্য ট্রেনের টিকিট করে দেওয়াও প্রতিশ্রুতি দিলেও তা মানেনি জেলাশাসক।
বড় অভিযোগ পরিযায়ী শ্রমিকদের
পরিযায়ী শ্রমিক মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, “আমাদের কেউ সাহায্য করছে না। আমাদের উপর অত্যাচার হচ্ছে। জেলাশাসক বলছে টিকিট কেউ কেটে দেবে না। নিজের টাকা দিয়ে কাটতে হবে ট্রেনের টিকিট। আমাদের কাছে টাকা থাকলে নিজেরাই চলে আসতাম। খাবার পয়সাটুকু নেই। সামিরুল ইসলাম ফোন করেন। কিন্তু এখন আর ফোন ধরেননি।” এদিকে প্রথমে জেলাশাসকের তরফে ট্রেনের টিকিট কেটে দেওয়ার কথা জানানো হলে তাঁরা আধার কার্ড পাঠিয়েছিল কিন্তু তবুও নাকি টিকিট কেটে দেওয়া হয়নি। আর সেই খবর প্রকাশ্যে আসতেই শাসকদলের প্রতি কটাক্ষ গেরুয়া শিবিরের।
আরও পড়ুন: মোদির ৭৫ তম জন্মদিনে দ্বিতীয় বায়োপিক ‘মা বন্দে’র ঘোষণা! কে হচ্ছেন রিল লাইফের প্রধানমন্ত্রী?
তামিলনাড়ুতে আটকে পড়া বাঙালি পরিচয় শ্রমিকদের ফেরানো নিয়ে মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “টিকিট কেটে দিতে হবে এইরকম কোনও আবেদন আসেনি, বা আমরা বলিনি। বাড়ি ফিরলে শ্রমশ্রী যেসব বিষয়গুলো আছে সেগুলো করে দেওয়া হবে। কোথাও একটা ভুল প্রচার হচ্ছে।” এমনকি সামিরুল ইসলাম বলেন, “শ্রমশ্রী প্রকল্পে অ্যাপ্লিকেশন করতে হবে। ডকুমেন্ট দিয়ে করতে হবে। কিন্তু ওরা তো করেননি।”