সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) মানেই যেন বিতর্ক। সেই সূত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফের আরেকবার উস্কানিমূলক মন্তব্য করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন। সদ্য কংগ্রেসের পেশ করা এক তালিকায় তিনি ভারতকে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, মিয়ানমারের মতো দেশগুলোর সঙ্গে এক সারিতে বসিয়ে ফেললেন। সেখানে বলা হয়েছে, এই দেশগুলি নাকি মাদক পাচার আর অবৈধ মাদক উৎপাদনের সবথেকে বড় কেন্দ্র!
কী বলেছেন ট্রাম্প?
রিপোর্ট অনুযায়ী ট্রাম্পের বক্তব্য, এই দেশগুলি থেকে আসা মাদক এবং কেমিক্যালস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য দিনের পর দিন হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিশেষ করে ফেন্টানিল ও অন্যান্য সিন্থেটিক ওপিয়য়েডস বর্তমানে আমেরিকার জন্য ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। তালিকায় মোট 30টি দেশ রয়েছে। তার মধ্যে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ভারত, মিয়ানমার, বলিভিয়া, কলম্বিয়া, মেক্সিকো, পানামা সহ আরও কিছু নাম রয়েছে।
Trump congratulated Modi on his birthday early in the morning.
By the evening, Trump put India in Major Illicit Drug Producing Countries list.
Bhakts were celebrating that Trump & Modi are friends again🤡
B’day gift from Trump to Modi. pic.twitter.com/KFDlZWfPE8
— Tarun Gautam (@TARUNspeakss) September 17, 2025
তাহলে এই তালিকায় কেন ভারত?
হোয়াইট হাউস ব্যখ্যা দিয়েছে, তালিকায় থাকা মানেই যে ওই দেশের সরকার মাদক নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ এমনটা নয়। বরং, ভৌগোলিক অবস্থান, কিংবা বাণিজ্য বা অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে অনেক সময় পাচার রোধ করাও কঠিন হয়ে পড়ে। ফলে ভারত থেকেও কিছু অবৈধ রাস্তা দিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে মাদক পাচার হচ্ছে।
তবে আফগানিস্তান, বলিভিয়া, কলম্বিয়া, মিয়ানমার, ভেনেজুয়েলা প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেছেন, এই দেশগুলি আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হচ্ছে। আর আফগানিস্তান এখনও পর্যন্ত আফিম চাষ এবং মাদক ব্যবসা করেই চলেছে। ট্রাম্প অভিযোগ করছে, এই থেকে তালিবানসহ একাধিক জঙ্গি সংগঠন অর্থ উপার্জন করছে।
টেনেছেন চিনের প্রসঙ্গ
তবে সবথেকে আশ্চর্যের বিষয়, ট্রাম্পের সমালোচনার মাঝে চিনের ভূমিকাও তুলনামূলকভাবে হালকা করে বলা হয়েছে। রিপোর্ট বলছে, ফেন্টানিল ও অন্যান্য সিন্থেটিক ওপিয়য়েডস তৈরির জন্য যে রাসায়নিক প্রয়োজন, তার সবথেকে বড় উৎস চিন। তাই ট্রাম্প শুধু অনুরোধ করেছেন যে, চিন যেন সরবরাহ চেন বন্ধ করে কড়া ব্যবস্থা নেয়।
আরও পড়ুনঃ ফুচকা খেয়েই বমি-পায়খানা, পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণায় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ৩৫
আমেরিকার এক হিসাব অনুযায়ী, 18 থেকে 44 বছর বয়সী মানুষদের মৃত্যুর সবথেকে বড় কারণ হয়ে উঠেছে এই ফেন্টানিল ও অন্যান্য কৃত্রিম মাদকদ্রব্য। এহেন পরিস্থিতিকে ন্যাশনাল এমার্জেন্সি হিসেবেই ঘোষণা করছে মার্কিন প্রশাসন। এমনকি ট্রাম্প দাবি করছেন, একা আমেরিকার পক্ষে সংকট রোধ করা কোনওভাবেই সম্ভব নয়। এর জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতার দরকার। তিনি তালিকাভুক্ত দেশগুলোকে বলেছেন, কৌশল বদলাও, পাচার বন্ধ করো। নাহলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।