প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: হরিদেবপুর (Haridevpur) রিজেন্ট কলোনিতে এক পরিচিত লোকের জন্মদিনের পার্টির নাম করে ডেকে ২০ বছরের তরুণীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল প্রাক্তন প্রেমিক চন্দন মল্লিক ও তাঁর বন্ধু দেবাংশু বিশ্বাসের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই হরিদেবপুর থানা এলাকায় তৈরি হয়েছে এক চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি। এদিকে নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে গণধর্ষণের মামলা রুজু করেছে পুলিশ। প্রথমে প্রাক্তন প্রেমিক চন্দন মল্লিককে গ্রেফতার করা হলেও খোঁজ মিলছিল না আরেক অভিযুক্তের। অবশেষে আজ ভোররাতে গ্রেফতার করা হল দেবাংশু বিশ্বাসকে।
ঘটনাটি কী?
দ্য ওয়ালের রিপোর্ট অনুযায়ী, গত, ৫ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার রাতে রিজেন্ট পার্ক এলাকার একটি ফ্ল্যাটে প্রাক্তন প্রেমিক চন্দন মল্লিকের সঙ্গে জন্মদিনের পার্টিতে গিয়েছিলেন তরুণী। অভিযোগ, সেখানে তাঁকে চন্দন ও তাঁর বন্ধু দেবাংশু বিশ্বাস ধর্ষণ করেন। শুধু ধর্ষণই নয়, ঘটনার পর দীর্ঘক্ষণ ধরে তাঁকে নির্যাতন করা হয়। অবশেষে কোনওরকমে সেখান থেকে বেরিয়ে এসে পরিবারের সদস্যদের সব জানান তিনি। পরিবারের সঙ্গে পরামর্শে পরেরদিনই হরিদেবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এদিকে পুলিশের ভয়ে গা ঢাকা দিয়েছিলেন চন্দন। কিন্তু পরে বর্ধমান স্টেশন থেকে তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে তখনও পলাতক ছিলেন আরেক অভিযুক্ত দেবাংশু বিশ্বাস ওরফে দীপ। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। ধরা পড়তেই হল পুলিশের জালে।
গ্রেফতার করা হল দেবাংশুকে
অভিযুক্ত চন্দন মল্লিককে গ্রেফতারের পর দেবাংশু বিশ্বাসকে ধরার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল হরিদেবপুর থানার পুলিশ, বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়েছিল। এদিকে ধৃত চন্দনকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় জানা গিয়েছিল, হরিদেবপুরের ঘটনার পর সে ও দেবাংশু প্রথমে বারাণসী চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে থাকেননি তাঁরা। ফেরার পথে নাকি দেবাংশু শান্তিনিকেতনে চলে যান। সেই তদন্তের সূত্র ধরে অবশেষে আজ, ভোররাত প্রায় ২টো ২০ নাগাদ কলকাতার টালিগঞ্জ থানার অন্তর্গত ২৪বি দেশপ্রিয় পার্ক রোড এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জানা গিয়েছে, আজ দেবাংশুকে আদালতে পেশ করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হবে, যাতে তদন্ত সম্পূর্ণ করা যায়।
আরও পড়ুন: মমতার ভাতৃবধূ কাজরীরর বিরুদ্ধে মামলাকারী প্রিন্সিপাল শ্রাবন্তীর নামে FIR
পুলিশ সূত্রে খবর, দেবাংশু বিশ্বাস ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের কর্মী। এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। শাসকদলের সঙ্গে জড়িত একের পর এক কর্মীর এই অপকাণ্ডকে ঘিরে স্বাভাবিকভাবেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে। কয়েক মাস আগেই শহরে আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল কসবা কাণ্ড। তারও এক বছর আগে শিরোনামে উঠে এসেছিল আরজি কর হাসপাতালে ছাত্রীর ধর্ষণ ও খুন কাণ্ডের ঘটনা। সমাজে একের পর এক এমন ঘটনায় নারী সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে সরকারের উদ্দেশে। এমতাবস্থায় হরিদেবপুরের এমন ঘটনা বেশ সাড়া ফেলে দিয়েছে প্রশাসনিক মহলে।