প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: দীর্ঘদিন ধরে সেতু নির্মাণের আর্জি জানানো হলেও পাত্তা দেয়নি প্রশাসন! তাই সরকারের উপরে ভরসা না করে, কয়েকটি গ্রামের মানুষ নিজেরাই চাঁদা তুলে সেতু তৈরির উদ্যোগ নেন। কিন্তু, তাতেও বাধা দিচ্ছে প্রশাসন। এবার তারই প্রতিবাদে টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করে তীব্র বিক্ষোভ দেখালেন খানাকুলের (Khanakul) বালিপুর এলাকার গ্রামবাসীরা। চরম উত্তেজনা এলাকা জুড়ে।
সেতু তৈরির দাবিতে বিক্ষোভ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার, খানাকুলের কনকপুর, দুর্গাপুর, কুড়কুড়ি, অমরপুর-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ সেতু নির্মাণের দাবিতে চিলাডাঙি-২৪পুর প্রধান সড়ক বাঁশ দিয়ে আটকে, টায়ার জ্বালিয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের অভিযোগ, এই এলাকায় তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে শাখা হরিনাখালী নদীতে সেতু নির্মাণের দাবি করে এসেছে প্রশাসনের কাছে। কিন্তু কোনও আবেদনই তোয়াক্কা করেনি প্রশাসন। শেষে সরকারের ওপর ভরসা না করে, কয়েকটি গ্রামের মানুষ নিজেরাই চাঁদা তুলে সেতু তৈরির উদ্যোগ নেন। কিন্তু সেই কাজেও বাঁধা দেয় খানাকুল ব্লক প্রশাসন। আর তাই সেই ঘটনার প্রতিবাদে রণমূর্তি ধারণ করল গ্রামবাসী। টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করলেন বাসিন্দারা।
গ্রামবাসীদের বিক্ষোভে মাথা নত প্রশাসনের!
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রথমদিকে গ্রামবাসীদের লোহার সেতু নির্মাণের উদ্যোগকে খানাকুল ১ বিডিও অরিন্দম মুখোপাধ্যায় অনুমতি দিয়েছিলেন। তাই তাঁরা সেতু তৈরির সব সরঞ্জাম ইতিমধ্যেই কিনে নিয়ে আসেন। কিন্তু এ দিন হঠাৎই খানাকুল ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেই সেতুর কাজ করতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। আর তাই এর প্রতিবাদে ও সেতু নির্মাণের দাবিতে পথ আটকে বিক্ষোভে নেমে পড়েন গ্রামের মহিলা, পুরুষ সবাই। তিন ঘণ্টা বন্ধ থাকে বালিপুরের রাস্তা। বিক্ষোভ সামাল দিতে ঘটনাস্থলে আসেন খানাকুল ১ বিডিও অরিন্দম মুখোপাধ্যায়-সহ স্থানীয় পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির আধিকারিকরা। এছাড়াও ঘটনাস্থলে আসে খানাকুল থানার পুলিশ। শেষে বিডিও গ্রামবাসীদের কাছে লিখিত ভাবে জানিয়ে দেন যে, তাঁরাই সেতু নির্মাণ করবেন।
আরও পড়ুন: SSC-র পর দুর্নীতির অভিযোগ মৎস্য দফতরেও! CBI এর হাতে চাঞ্চল্যকর তথ্য
স্থানীয় বাসিন্দা তথা সেতু তৈরির উদ্যোক্তাদের মধ্যে অন্যতম রামচন্দ্র সামন্ত বলেন, “গোটা গ্রামের মানুষ যেখানে এক হয়ে কাজ করছেন, সেখানে প্রশাসন কেন বাধা দিচ্ছে? আমরা আন্দোলন না করলে, বিডিও নরম হতেন না। এবার দেখা যাক কবে থেকে শুরু হয় সেতু নির্মাণ।” এক মহিলা বিক্ষোভকারী জানান, “আমরা নিজেরা মেরামত করব তাতেও আপত্তি? ওঁরা কেমন অফিসার। নিজেরা তো পারবেনই না, আমাদেরও কাজ করতে দেবেন না। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতেই এই বাধা ওঁদের। আমরাই সেতু নির্মাণের কাজ করে দেবো। সরকারের কোনও প্রয়োজন নেই।”