প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বীরভূমের রামপুরহাট (Rampurhat) এলাকায় ছাত্রী মৃত্যুর ঘটনায় চরম চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি এলাকা জুড়ে। খবর অনুযায়ী প্রায় কুড়িদিন নিখোঁজ ছিল ওই ছাত্রী। শেষে জঙ্গল থেকে স্কুলছাত্রীর বস্তাবন্দি দেহ উদ্ধার। পচন ধরেছে ছাত্রীর মৃতদেহে। অভিযুক্ত এক স্কুল শিক্ষক৷ ছাত্রীকে ধর্ষণ করে প্রমাণ লোপাটের জন্য খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনা জানাজানি হতেই হুলুস্থুল শুরু হয়েছে এলাকা জুড়ে।
ছাত্রীকে বিয়ে করার প্রস্তাব শিক্ষকের!
রামপুরহাট এলাকায় গত ২৮ আগস্ট থেকে বছর ১৩-এর সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রী প্রাইভেট টিউশন পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল। এরপর দীর্ঘদিন ধরে খোঁজ চলার পর প্রায় ২০ দিনের মাথায় গত মঙ্গলবার রাতে উদ্ধার হয় তার বস্তাবন্দি পচাগলা দেহাংশ। ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন প্রাইভেট টিউটর মনোজ কুমার পাল। তিনি আবার রামপুরহাট শ্যামপাহারি শ্রী রামকৃষ্ণ বিদ্যাপীঠের ভৌত বিজ্ঞানের শিক্ষক। তদন্তের মাধ্যমে পুলিশ জানিয়েছে মৃত ছাত্রীর সহপাঠী ও বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত শিক্ষক মনোজ কুমার পাল নাকি বেশ পছন্দ করতেন সপ্তম শ্রেণীর ওই ছাত্রীকে। বিয়েও নাকি করতে চেয়েছিলেন মেয়েটিকে। কিন্তু শিক্ষকের বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় খুন করা হয় তাঁকে।
খুন করতে সার্জিকাল অস্ত্রের ব্যবহার!
রিপোর্ট অনুযায়ী, স্থানীয়দের তরফে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত শিক্ষক মনোজ কুমার পাল নাকি বারবার ছাত্রীকে বিয়ের জন্য চাপ দিতেন। উত্ত্যক্ত করতেন যাতায়াতের পথে। অন্য ছেলেদের সঙ্গেও কথা বলতে দিতেন না। কিন্তু ছাত্রী এসব কিছুতে রাজি না হওয়ায় খুনের পথ বেছে নেন ওই শিক্ষক। শেষ আপডেট অনুযায়ী বস্তাবন্দি ওই ছাত্রীর দেহের তিন টুকরো পেয়েছিল। কিন্তু এখনও দেহের নিম্নাংশের হদিশ মেলেনি। এদিকে সেই শিক্ষকের বাড়ি তদন্ত করে উদ্ধার হয়েছে ছুরি, কাঁচি, ব্যান্ডেজ। পুলিশের অনুমান, দেহ খণ্ড খণ্ড করতে সার্জিকাল অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। সূত্রের খবর, সেই অস্ত্র নাকি মনোজ পালের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে।
আরও পড়ুন: কংসাবতীর সেচ ক্যানাল ভেঙে হু হু করে ঢুকছে জল! বাঁকুড়ায় তৈরি বন্যা পরিস্থিতি
রামপুরহাট থানা ঘেরাও বিজেপির
এদিকে স্কুলের শিক্ষকের এইধরনের ঘটনার খবর জানাজানি হতেই গতকাল, বৃহস্পতিবার স্কুলের প্রধান শিক্ষককে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখায় ক্ষুব্ধ জনতা। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় রামপুরহাট থানার পুলিশ। অন্যদিকে নারী নিরাপত্তার প্রসঙ্গ তুলে রামপুরহাট থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। এমনকি এই ঘটনায় তৃণমূলের কারোর জড়িত থাকার অভিযোগও তোলে।