সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: পুজোর আগে বাংলায় ফের বন্যা আতঙ্ক। জানা গিয়েছে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার মাইথন ও পাঞ্চেত বাঁধ থেকে ৪৯ হাজার কিউসেক জল ছেড়ে দিয়েছে (DVC Water Release)। আর এতেই বাড়ছে বন্যার আশঙ্কা! গত বছরের মত কি এবারও পুজো মাটি হবে? এ বছরও কি পুজোর দিনগুলিতে দক্ষিণবঙ্গ ভাসবে?
ক্ষোভ প্রকাশ রাজ্য সরকারের
এই বিষয় নিয়ে ক্ষুব্ধ রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। তিনি বলেছেন, পুজোর ঠিক আগেই এইভাবে জল ছেড়ে বাংলাতে বিপর্যস্ত করতে চাইছে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ নিয়ে আগেও অনেকবার সতর্কবার্তা দিয়েছেন। তবুও DVC কোনও কথা শুনতে নারাজ। পাশাপাশি ঝাড়খণ্ডের তেনুঘাট বাঁধ থেকেও জল ছাড়া হয়েছে। আর সেই জল ধীরে ধীরে পাঞ্চেত জলধারের দিকে এগোচ্ছে। ফলে পরিস্থিতি হয়তো আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।
ডিভিসি কী বলছে?
রিপোর্ট অনুযায়ী, দামোদার ভ্যালি কর্পোরেশন রেগুলেটর কমিটির সদস্য সচিব সঞ্জীব কুমার জানিয়েছেন, মাইথন থেকে ২৪ হাজার কিউসেক এবং পাঞ্চেত থেকে ২৬ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। কারণ বাঁধগুলির জলের উচ্চতা বর্তমানে বিপজ্জনক সীমার খুবই কাছাকাছি। তিনি দাবি করেছেন, এটা আমাদের প্রটোকলেরই অংশ। নিয়ম মেনে প্রতিবার জল ছাড়া হয়। এমনকি আগেভাগে জানানোও হয়। আর এবার পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে বিষয়টি আগে থেকেই জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বছর প্রায় একই সময়ে অর্থাৎ ১৭ ও ১৮ সেপ্টেম্বর ২.৫ লক্ষ কিউসেক জল ছেড়েছিল দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন। আর এর ফলে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় প্রবল বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সে সময় সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ক্ষোভ জানিয়ে চিঠিও লিখেছিলেন। আর এবারও আবহাওয়া দপ্তর বলছে, মহালয়ার দিন ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। এমনকি পুজোর সময়ও নিম্নচাপের জেরে বৃষ্টি নামতে পারে।
আরও পড়ুনঃ এ বছর মহালয়ার দিন হবে সূর্যগ্রহণ, তর্পণ কখন করবেন? কী কী সরঞ্জাম লাগবে জানুন
সঞ্জীব কুমার এও জানিয়েছেন, এবার পুজোটা বর্ষার মধ্য দিয়েই কাটবে। অক্টোবরের ১০ তারিখ পর্যন্ত বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর সে কারণেই জল ধরে রাখার মতো রিস্ক নেওয়া যায়নি। তবে সেচমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন, সবকিছু পরিকল্পনা করেই করা হচ্ছে। ঝাড়খণ্ড, বিহার আর পশ্চিমবঙ্গকে নিয়ে সম্প্রতি বৈঠক করা হয়েছিল। আর সেখানে ডিভিসি-কে অনুরোধ করা হয়েছিল যে পুজোর মুখে যেন কোনওভাবে জল ছাড়া না হয়। তবে তারা তা শুনতে নারাজ।