বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: সিন্ধু জল বন্টন চুক্তি স্থগিত হয়ে গিয়েছে আগেই। পাকিস্তানের ভাগের জল যে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে সে কথাও শুরুতেই বোঝা গিয়েছিল। এবার সেটাই করে দেখাতে চলেছে নয়া দিল্লি (Indus Waters Diverted To Delhi)।
শুক্রবার, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর পরিষ্কার জানালেন, সিন্ধু জল বন্টন চুক্তি স্থগিত হয়ে যাওয়ায় পাকিস্তানের দিকে যে বিপুল পরিমাণ জল যেত, তা আগামী দেড় বছরের মধ্যে রাজধানী দিল্লি সহ উত্তর ভারতের রাজ্যগুলিতে ঘুরিয়ে দেওয়া হতে পারে। যার জেরে দিল্লির পাশাপাশি উপকৃত হবে উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, রাজস্থানের মতো একাধিক রাজ্যের মানুষ।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বক্তব্য
পহেলগাঁও জঙ্গি হামলায় নিহতদের কথা মাথায় রেখে পাকিস্তানের সাথে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করেছে ভারত। স্থগিত হয়ে যায় সিন্ধু জলবন্টন চুক্তিও। পশ্চিমের দেশ থেকে বারবার নরমে গরমে হুঁশিয়ারি এলেও তাতে কর্ণপাত করেনি নয়া দিল্লি। এবার তা নিয়েই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী খট্টর জানালেন, পাকিস্তানের দিকে যাওয়ার যে জল এখন আমাদের হাতে রয়েছে, তা খুব শীঘ্রই দিল্লির পাশাপাশি উত্তর ভারতের একাধিক রাজ্যে সরবরাহ করার কাজ শুরু হবে। এর জন্য তৈরি হবে এক বিশেষ ব্যবস্থা।
রাজধানীর দীর্ঘমেয়াদী জলের চাহিদা মেটাতে তৈরি হবে বাঁধ
হিন্দুস্থান টাইমসের রিপোর্ট অনুযায়ী, শুক্রবার পাকিস্তানের ভাগের জল ভারতে ঘোরানোর পাশাপাশি দিল্লির দীর্ঘমেয়াদী জলের সমস্যা মেটাতে একাধিক বাঁধ তৈরির পরিকল্পনাও জানিয়ে দিলেন খট্টর। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কথায়, দিল্লির জলের চাহিদা মেটাতে একাধিক বাঁধ তৈরির পরিকল্পনা করছে কেন্দ্র। হাথনিকুন্ড ব্যারেজের কাছেই নতুন বাঁধের প্রস্তাব তৈরি হয়েছে। এই বাঁধে বিপুল পরিমাণ জল সঞ্চয় করে তা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করাও সম্ভব হবে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরও বলেন, হিমাচল প্রদেশের রেনুকা ড্যাম এবং উত্তরাখান্ডের লাখওয়ার ড্যামের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। এছাড়াও কিশাউ ড্যাম নিয়েও সমঝোতা হবে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দাবি, এই বাঁধগুলি চালু হয়ে গেলে দিল্লির পানীয় জলের চাহিদা অনেকটাই মিটবে। সেই সাথে অতিরিক্ত জলও পাওয়া যাবে।
অবশ্যই পড়ুন: কলকাতা লিগের গত মরসুমের চ্যাম্পিয়ন ইস্টবেঙ্গলই! হাইকোর্টে ধাক্কা খেলো ডায়মন্ড হারবার
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের অপকর্মকে সামনে রেখে 1960 সালের সিন্ধু জল বন্টন চুক্তি স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই থেকে আজ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত বদলায়নি নয়া দিল্লি, আগামীতেও পরিস্থিতির বদল না হলে সিদ্ধান্ত যে বদলাবে না তা বলাই যায়। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাকিস্তানের ভাগের জল ভারতে ঘোরানো হলে পশ্চিমের দেশে যেমন তীব্র জল সংকট দেখা দেবে তেমনই ভারতের উত্তরের রাজ্যগুলিও চরম জল সংকট থেকে রেহাই পাবে।