এবার কেন্দ্রের নিয়মেই বাংলায় আবাস যোজনা

Published on:

Pradhan Mantri Awas Yojana

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বছর ঘুরলেই রাজ্যে আয়োজিত হতে চলেছে ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। তাই নিজের সাম্রাজ্য বাঁচিয়ে রাখতে এখন থেকেই মমতা সরকারের একাধিক প্রকল্প নিয়ে নানা ভাবনা চিন্তা করা হচ্ছে। লক্ষ্মীর ভান্ডার থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যসাথী কোনও কিছুই বাদ যায়নি। এমতাবস্থায় এবার বাংলায় আবাস যোজনা (Pradhan Mantri Awas Yojana) নিয়ে এক বড় আপডেট সামনে উঠে এল। শোনা যাচ্ছে, বাংলার বাড়ি নির্মাণ এবং উপভোক্তা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার এবার কেন্দ্রের দেখানো পথেই হাঁটতে চলেছে। অর্থাৎ আবাসের উপভোক্তা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে কেন্দ্র এবং রাজ্যের অবস্থান কার্যত এক হতে চলেছে।

নিয়মে একাধিক পরিবর্তন কেন্দ্রের

আনন্দবাজারের রিপোর্ট অনুযায়ী, গত বছরের সেপ্টেম্বরে আবাস প্রকল্পের শর্তের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার একাধিক নিয়ম বদলেছে। কেন্দ্রের বিধি অনুযায়ী যেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছিল যে দু’-তিন বা চারচাকার মোটরচালিত গাড়ি অথবা মাছ ধরার নৌকো থাকলে আবাসের উপভোক্তা হওয়া যাবে না। এছাড়াও ৫০ হাজার টাকা বা তার বেশি মূল্যের কিসান ক্রেডিট কার্ড, পাকা বাড়ি থাকলে, পরিবারের কেউ সরকারি কর্মী হলে, মাসে ১০ হাজার টাকার বেশি পারিবারিক আয় হলে, আয়কর এবং প্রফেশনাল ট্যাক্স দিলেও মিলবে না আবাস যোজনার সুবিধা। পাশাপাশি , ফ্রিজ, ল্যান্ডলাইন ফোন, আড়াই একরের বেশি সেচযুক্ত জমি, পাঁচ একরের বেশি বহুফসলি জমি বা সাড়ে সাত একরের বেশি জমি থাকলেও আবাস প্রকল্পের সুবিধা মিলবে না। এতেই মাথায় হাত পড়েছিল একাধিক গ্রাহকের।

কেন্দ্রের পথেই হাঁটল রাজ্য সরকার

আবাস প্রকল্পের শর্তের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের এই নিয়ম পরিবর্তন প্রথম দিকে মানতে চায়নি রাজ্য সরকার। উপভোক্তা বাছাইয়ে কেন্দ্রের বিধিগুলি গ্রাহকদের অসুবিধায় ফেলতে পারে বলে শাসকদলের একাংশ জানিয়েছিলেন। কিন্তু এবার সেই পরিবর্তনে সায় দিল রাজ্য সরকার। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বিধিকেই সঠিক বলে মান্যতা দিয়ে উপভোক্তা বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে মমতা সরকার। তবে সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বিধি মানার পাশাপাশি এর বাইরে দু’চাকার মোটরচালিত গাড়ি বা মাসিক পারিবারিক আয় ১০ হাজারের বদলে ১৫ হাজার টাকাকে বিধিভুক্ত করেছে রাজ্য।

দুর্নীতি রুখতে নেওয়া হবে একাধিক ব্যবস্থা

এছাড়াও রাজ্য সরকার আবাসের ক্ষেত্রে উপভোক্তা বাছাইয়ের জন্য পৃথক মোবাইল অ্যাপ, জিয়ো-ট্যাগ, ছবি-সহ একাধিক স্তরে যাচাই বাধ্যতামূলক করেছে। পাশাপাশি, প্রত্যেক পঞ্চায়েত এলাকায় ব্লক, মহকুমা এবং জেলা-আধিকারিকদের মাধ্যমে ছবি, ভিডিয়ো রেকর্ডিং-সহ উপভোক্তার তালিকা প্রকাশ, বিডিও, যুগ্ম-বিডিও, এসডিও, জেলাস্তরের আধিকারিক, রাজ্যস্তরের নজরদারি দল, স্থানীয় পুলিশ স্তরে পুনরায় যাচাই, সোশ্যাল অডিট হবে। এমনকি প্রত্যেক উপভোক্তার আধার-নির্ভর ‘ইউনিক ডকুমেন্ট আইডেন্টিফিকেশন নম্বর’ হবে। অর্থাৎ আবাস যোজনার ক্ষেত্রে যাতে কোনো দুর্নীতি না থাকে, সেই ব্যবস্থাই রাখা হতে চলেছে।

আরও পড়ুন: প্রবল বর্ষণে ভাঙল আলিপুরদুয়ার ব্রিজের একাংশ! অল্পের জন্য বাঁচল শ্রমিকদের

প্রসঙ্গত, আবাস যোজনার ক্ষেত্রে রাজ্য এতদিন যেখানে কেন্দ্রের বিধি নিয়ম নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলেছে সেখানে শাসকদলের এমন উলাটপুরান দেখে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মধ্যে একাধিক প্রশ্ন উঠছে। অনেকের মতে কেন্দ্রের অনুমোদন থাকা প্রথম ১১ লক্ষ উপভোক্তার জন্য রাজ্যের খরচ হয়েছে প্রায় ১৪,৪০০ কোটি টাকা। সেই নিরিখে পরের ১৬ লক্ষের জন্য প্রায় ১৯,২০০ কোটি টাকা খরচ হবে। এত টাকা খরচের ক্ষেত্রে মাথায় হাত সরকারের, তাই যেখানে মোট খরচের ৬০ শতাংশ কেন্দ্রের দেওয়ার কথা, সেখানে এই বরাদ্দ যাতে পাওয়া যায়, তার জন্যই নাকি রাজ্য কেন্দ্রের দেখানো পথে হাঁটতে চলেছে। যদিও এই নিয়ে সরাসরি মুখ খুলতে নারাজ শাসকদলের একাংশ।

গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্যJoin Group
চাকরির খবরের জন্যJoin Hood Jobs
রাশিফলের জন্যJoin Hood Rashifal
খেলার খবরের জন্যJoin Whatsapp
সঙ্গে থাকুন ➥