প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: কলকাতার আনন্দপুর থানা এলাকার গুলশন কলোনিতে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব এবং গুলি চালানোর ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে ধরতে না পারার কারণে প্রশ্ন উঠেছিল পুলিশের ভূমিকা নিয়ে। বহু কটুক্তির পর এবার সেই মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police)। ধৃতের নাম মহম্মদ ফিরোজ খান ওরফে ‘মিনি ফিরোজ’। ঘটনার পর থেকেই তাঁর খোঁজ চালাচ্ছিলেন তদন্তকারীরা। এমনকি পশ্চিমবঙ্গের বাইরেও পাড়ি দেন আধিকারিকেরা। শেষে রবিবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে এক পুলিশি অভিযানে পাকড়াও করা হয় ফিরোজকে।
গ্রেপ্তার করা হয়েছে মিনি ফিরোজকে!
রিপোর্ট অনুযায়ী বহুদিন ধরে নাকানি চুবানি খাওয়ার পর অবশেষে আনন্দপুরের গুলশন কলোনিতে তাণ্ডবের ঘটনায় বড়সড় সাফল্য পেল কলকাতা পুলিশের টিম। ১০ দিনের মাথায় তাণ্ডবের মূলচক্রী ৩৭ বছর বয়সি মিনি ফিরোজকে গ্রেপ্তার করা হল। পুলিশের তরফে পাওয়া খবর অনুযায়ী, গতকাল অর্থাৎ রবিবার সন্ধে ৬টা নাগাদ নয়াদিল্লি রেলস্টেশন সংলগ্ন এলাকায় দিল্লির আজমের গেট থেকে মিনি ফিরোজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিমানে করে জরুরি ভিত্তিতে কলকাতা গোয়েন্দা দফতরের আধিকারিকরা বাংলায় ফিরিয়ে নিয়ে আসছে তাঁকে। আজই তাঁকে আদালতে পেশ করা হবে বলেও জানা গিয়েছে। তারপর সেখানেই ফিরোজকে হেফাজতে নেওয়া হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
ঠিক কী ঘটেছিল?
উল্লেখ্য, গত ১১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় গুলশন কলোনিতে বন্দুক নিয়ে তাণ্ডব চালিয়েছিল কয়েক জন দুষ্কৃতী। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে আচমকা সংঘর্ষ শুরু হয়। কয়েক রাউন্ড গুলি চলে বলেও অভিযোগ। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকাবাসীরা। ওই দিন সন্ধ্যাতেই এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিন জনকে এন্টালি এবং নারকেলডাঙা থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছিল লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল আগ্নেয়াস্ত্রও। ঘটনার দু’দিন পরে আরও এক সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত ফিরোজকে নাগালে পাচ্ছিলেন না তদন্তকারীরা। এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়ালেও সমাজমাধ্যমে বেশ সক্রিয় ছিলেন ফিরোজ। মাঝেমধ্যে হুমকি হুঁশিয়ারির ভিডিয়ো আপলোড করতেন। তবে শেষে পুলিশের জালে ফাঁসতে হল তাঁকে।
আরও পড়ুন: ইলিশ-পমফ্রেট, চিলি চিকেন! পশ্চিম মেদিনীপুরের স্কুলে মিড-ডে মিলে এলাহি আয়োজন
প্রসঙ্গত, কলকাতায় একের পর এক অপরাধের ঘটনায় বার বার জড়িয়েছে আনন্দপুরের গুলশন কলোনির নাম। ঘন জনবসতি এবং ঘিঞ্জি ওই এলাকায় দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য নিয়ে লালবাজারের পুলিশ প্রশাসন সহ রাজ্য সরকার বেশ উদ্বিগ্ন। এর আগেও একাধিক বার কখনও ভরসন্ধ্যায় যুবককে রাস্তায় ফেলে কুপিয়ে খুন করা হচ্ছে, কখনও আবার দুই গোষ্ঠীর বিবাদে প্রকাশ্যেই বোমা-গুলির বৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ। এই মুহূর্তে গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকে থমথমে গোটা এলাকা। সেখানে যাতে নতুন করে কোনও অশান্তি না হয়, তাই এলাকায় নজরদারি শুরু করেছে পুলিশ।