প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: দেখতে দেখতে চলেই এল আরও এক পুজোর মরশুম। হাতে গুনে গুনে বাকি আর মাত্র কটা দিন। তাই চারিদিকে শুরু হয়ে গিয়েছে সাজো সাজো রব। এমতাবস্থায় গত মঙ্গলবার ভারতে ইলিশ রপ্তানির বিজ্ঞপ্তি জারি করে বাংলাদেশের (Bangladesh) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্রতি বছরের মতো এবারও সৌজন্যমূলক ইলিশ ভারতে রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রক। তবে অন্যান্য বারের তুলনায় এবার পরিমাণ অনেকটাই কম, মাত্র ১২০০ টন। কিন্তু তার মাঝেই ঘটল আরও এক বিপত্তি। পুজোর আগেই নাকি বন্ধ হয়ে যাবে ইলিশ রপ্তানি।
১,২০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন বাংলাদেশের
এ বছর বাংলাদেশের মোট ৩৭টি সংস্থাকে ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ৩০ থেকে সর্বাধিক ৫০ টন পর্যন্ত এক একটি সংস্থা ইলিশ রপ্তানি করতে পারবে। তবে এই রপ্তানির মেয়াদ ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত রাখা হয়েছে। আর এই সময়ের মধ্যে সরকার অনুমোদিত ১,২০০ টন ইলিশ ভারতে আসতে পারবে। সেই অনুযায়ী গত বুধবার থেকে ভারতে বাংলাদেশের ইলিশ রপ্তানি শুরু হয়েছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার থেকেই নাকি রপ্তানিকারকরা আর ইলিশ কিনতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। কারণ হিসেবে তাঁদের বক্তব্য, চড়া দামে ইলিশ কিনে কম দামে রপ্তানি করতে গিয়ে লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁদের।
ইলিশ পাঠাতে চাইছে না জেলেরা
মানিকতলা ও লেক মার্কেটের মতো বাজারে প্রায় এক কেজি ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ২০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১.৫ কেজির বেশি ওজনের বড় মাছ প্রতি কেজি ২,৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভারতে এখনও পর্যন্ত ৬৩ মেট্রিক টন ইলিশ রফতানি হয়েছে। কিন্তু এবার শোনা যাচ্ছে বাংলাদেশের ইউনূস সরকার ১,২০০ টন ইলিশ রফতানির সিদ্ধান্ত নিলেও তা ভারতের বাজারে নাও পাঠাতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ তাঁদের দাবি, ভারতে রফতানি মূল্যের তুলনায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে দর বেশি থাকায় জেলেরা ইলিশ পাঠাতে চাইছে না। ইতিমধ্যেই প্রতিমণ ইলিশে প্রায় ৫০০ টাকা লোকসানের কারণে বরিশাল থেকে ভারতে ইলিশ রফতানি বন্ধ হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: ঘনঘন জ্ঞান হারাচ্ছিলেন, ‘মস্তিষ্কখেকো’ অ্যামিবার থাবা এবার হুগলির শ্রীরামপুরে
কেন এমন সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের?
বাংলাদেশের রপ্তানিকারকদের দাবি, ভারতে মাছ পাঠানোর ক্ষেত্রে মাছ প্যাকেজিং এবং পরিবহন খরচ বাড়ছে। জানা গিয়েছে বেনাপোল পর্যন্ত পরিবহণ খরচ যুক্ত করে কেজিতে আরও প্রায় ১০০ টাকা খরচ বেড়ে যায়। ফলে বাণিজ্য মন্ত্রকের নির্ধারিত ১ হাজার ৫২৫ টাকা কেজি দরে রফতানি করলে বড় লোকসান হবে ব্যবসায়ীদের। এদিকে ভারতের বাজারে নিজস্ব ইলিশ যথেষ্ট থাকায় সেখানকার বাজারে দাম কম। তাই পদ্মার ইলিশের প্রতি আগ্রহ না দেখানোয় নাকি বেশিরভাগ রপ্তানিকারকরাই ইলিশ রপ্তানি বন্ধ রেখেছে। অর্থাৎ পুজোর আগেই বাংলাদেশের পদ্মার ইলিশের অস্তিত্ব থাকবে না বললেই চলে।