সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: বিশ্বকর্মা পূজার দিন দমদম স্টেশনের ভিড়ভাট্টার মধ্যে ঘটেছিল এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। ফুটপাতে খেলা করা এক নাবালিকা হঠাৎ করেই হয়ে যায় উধাও (Dumdum Kidnap)। প্রথমে মনে করা হয়েছিল যে, সে হয়তো কোথাও হারিয়ে গিয়েছে। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর পরিবারের তরফ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয় যে, এটি কোনও অপহরণ। আর সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্ত নেমে পুলিশ সত্য উদঘাটন করল।
কীভাবে ফাঁস হল এই রহস্য?
গত ১৭ সেপ্টেম্বরের ঘটনায় সিঁথি থানায় অভিযোগ আসা মাত্রই পুলিশ প্রথমে স্থানীয় সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে। আর সেখানে দেখা যায়, এক মহিলা ও আরও দুজন মিলে শিশুটিকে নিয়ে যাচ্ছে। সেই সূত্র ধরেই তদন্ত করে পুলিশ। অবশেষে সোমবার সকালে কসবা এলাকার একটি ফ্লাট থেকে সেই পাঁচ বছরের নাবালিকাকে উদ্ধার করা হয়।
সংবাদ প্রতিদিনের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে ৫২ বছরের এক অধ্যাপিকা অরুণিমা চন্দকে, তিনি কলকাতার এক কলেজের পদার্থবিদ্যার শিক্ষিকা। আর তাঁর সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁর কন্যা অনুষ্কা চন্দ চৌধুরী এবং আত্মীয় অনুপমা চন্দকে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই তিনজনই পরিকল্পনা করে শিশুটিকে অপহরণ করেছিল।
কী বলছেন অরুণিমা?
পুলিশ জেরা করতে শুরু করলে অরুণিমা বলেন, তিনি কোনওরকম অপরাধ করেননি, বরং ফুটপাতে থাকা শিশুদের প্রতি তাঁর মায়া জন্মায়। তাই নাবালিকাদের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই নিজের কাছে আনতে চাইছিলেন। এমনকি তিনি এও দাবি করেন, শিশুটিকে আটকেও রাখা হয়নি বা অত্যাচার করা হয়নি, সে যত্নেই ছিল। তবে তাঁর এই বক্তব্য ঠিক কতটা সত্য, তা নিয়ে তদন্তকারীরা সন্দেহ করছে। কারণ শিশুটির পরিবার জানিয়েছে, কোনও অনুমতি ছাড়াই শিশুটিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে যা আইনত ভাবে অপহরণ।
আরও পড়ুনঃ পাকিস্তানে ভয়ঙ্কর এয়ার স্ট্রাইক! পড়ল একাধিক বোমা, মৃত শিশু-মহিলা সহ ৩০
শিশুটির পরিবার জানিয়েছে, হঠাৎ করে মেয়ে হারিয়ে যাওয়ার পর তাঁরা কান্নায় ভেঙে পড়েছিল। আশঙ্কা করা হয়েছিল যে, হয়তো মাদক পাচারের শিকার হয়েছে। পরে খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশ কসবার ফ্ল্যাটে হানা দিলে মেয়ের মুক্তি মেলে। পুলিশ ইতিমধ্যেই অপহরণের জন্য মামলা দায়ের করেছে। ধৃতদের উদ্দেশ্য আদৌ শিশুর ভবিষ্যৎ নাকি অন্য কোনও চক্র, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।