প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: শিক্ষকতা চালিয়ে যাওয়ার জন্য টেট উত্তীর্ণ হতেই হবে এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল শীর্ষ আদালত। আর সেই নির্দেশ মিলতেই তৎপর হয়ে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ (West Bengal Primary Education Board)। সোমবার সব জেলার ডিস্ট্রিক্ট প্রাইমারি স্কুল কাউন্সিল-এর চেয়ারম্যানদের কাছে কর্মরত প্রাথমিক শিক্ষকদের বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে তারা। কে কবে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন, আবার কারা আগামী দিনে অবসর নেবেন সবকিছুর বিস্তারিত তথ্য চেয়ে পাঠালো পর্ষদ।
টেট নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ
কয়েক দিন আগেই সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহের ডিভিশন বেঞ্চ শিক্ষক শিক্ষিকাদের টেট পরীক্ষা নিয়ে একটি বড় পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছিলেন যে শিক্ষকদের প্রাথমিক শিক্ষকতা চালিয়ে যেতে হলে টেট উত্তীর্ণ হওয়া বাধ্যতামূলক। শুধু তাই নয়, পদোন্নতির জন্যও টেট পাশ করতে হবে। আগামী দু’বছরের মধ্যে টেট উত্তীর্ণ হতে হবে কর্মরত শিক্ষকদের। যারা টেট-এ পাশ করবেন না, তাঁদের হয় চাকরি ছেড়ে দিতে হবে অথবা টার্মিনাল বেনিফিট নিয়ে বাধ্যতামূলক অবসর নিতে হবে। যদিও বাস্তবের কথা মাথায় রেখে সুপ্রিম কোর্ট এও জানিয়েছে যে যাঁদের অবসর পেতে আর পাঁচ বছর বাকি, তাঁরা টেট না পাশ করলেও চাকরি করে অবসর নিতে পারবেন কিন্তু এই সময়ে কোনো পদোন্নতি পাবেন না।
তথ্য চেয়ে পাঠাল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ
২০১১-র ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন ঘোষণা করেছিল শিক্ষকপদে নিয়োগে যোগ্য হতে টেট বাধ্যতামূলক। এরপরই শীর্ষ আদালত টেট পরীক্ষা নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নেন। আর এবার সেই নির্দেশ মেনেই বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। গতকাল অর্থাৎ সোমবার পর্ষদের তরফে এক নির্দেশিকা জারি করেছে। সেই নির্দেশিকায় সব জেলার প্রাইমারি স্কুল কাউন্সিলের চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে কর্মরত শিক্ষকদের তথ্য চাওয়া হয়েছে ১৫ দিনের মধ্যে। কী কী তথ্য চাওয়া হয়েছে তা নিয়েও স্পষ্ট জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। সংশ্লিষ্ট জেলায় কত জন শিক্ষককে টেট দিতে হবে? সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের মধ্যে কে কবে অবসর নেবেন? কবে চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন? এই সব কিছুই বিস্তারিত জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: রেকর্ড বৃষ্টি কলকাতায়! জলের নীচে গোটা রাজপথ, বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে মৃত ৪
দুশ্চিন্তায় শিক্ষক-শিক্ষিকা
এদিকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর পর্ষদের বিজ্ঞপ্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ল অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘শিক্ষার অধিকার আইন এবং NCTE-র নিয়মে কোথাও বলা নেই। তা সত্ত্বেও সুপ্রিম কোর্ট এমন রায় দিয়েছে। আমরা সঙ্গে সঙ্গে এই বিষয় নিয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী এবং রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে হস্তক্ষেপ করার অনুরোধ করেছিলাম। আজ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ কিছুটা পদক্ষেপ করলেও মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এখনও চুপ করে বসে আছে। আমরা দ্রুত পদক্ষেপের আশা করছি।’’