সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: বর্তমানে উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, তেলেঙ্গানার মতো একাধিক রাজ্যের শহরগুলিতে চলছে ‘I Love Muhammad’ আন্দোলন। হায়দ্রাবাদ, কাশিপুর, লখনৌ থেকে মহারাজগঞ্জ, সব জায়গাতেই একের পর এক মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষরা আন্দোলনে শামিল হয়েছে। এমনকি কোথাও কোথাও এই মিছিলের ভিড়ে তৈরি হয়েছে অশান্তি আর পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ। তবে এই অসন্তোষের নেপথ্যে আসল কারণ কী?
ঘটনা সূত্রপাত কীভাবে?
আসলে এই আন্দোলন শুরু হয় কানপুরে। 5 সেপ্টেম্বর এক ধর্মীয় মিছিলে মুসলিম সম্প্রদায়ের তরফ থেকে ‘I Love Muhammad’ লেখা একটি সাইনবোর্ড ব্যবহার করা হয়েছিল। আর সেই ব্যানার ঘিরেই হিন্দুদের তরফ থেকে আপত্তি জানানো হয়। এরপর থেকে শুরু হয় ধর্মীয় আন্দোলন। প্রশাসন বিষয়টি থামানোর চেষ্টা করে। কানপুর পুলিশের ডিসিপি দীনেশ ত্রিপাঠী জানিয়েছিলেন, ধর্মীয় মিছিলের ক্ষেত্রে পুরনো নিয়মই মানতে হবে। নতুন কোনও প্রথা যুক্ত করা যাবে না। এমনকি ওইদিন ‘আই লাভ মহম্মদ’ সাইনবোর্ডটি পুরনো জায়গা থেকে সরিয়ে অন্যত্র বসানো হয়েছিল। আর সেখান থেকেই শুরু বিরোধ। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে সেটি আবারও আগের জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়।
लखनऊ विधानसभा के सामने मुस्लिम महिलाओं ने कानपुर मे हुई FIR के विरोध मे ज़बरदस्त विरोध प्रदर्शन किया , प्रदर्शन के दौरान सभी महिलाओं को पुलिस ने डिटेन कर लिया ,
कानपुर पुलिस की नज़र मे #ILoveMuhammad लिखना गुनाह है ,#ILoveMuhammadﷺ pic.twitter.com/6zo3i5uUBb
— Mohammed Naseeruddin (@naseerCorpGhmc) September 21, 2025
পুলিশের উপরে ইটবৃষ্টি
জানা যাচ্ছে, উন্নাওয়ে এই মিছিল সবথেকে বেশি উত্তপ্ত হয়েছে। মিছিলকারীরা পুলিশের উপরেই ইট ছুঁড়েছে। এমনকি ঘটনাস্থলে মোতায়েন মহিলা পুলিশ কর্মীদের হাত থেকে লাঠিও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ফলত হঠাৎ ঘটা এই উত্তেজনা সামলাতে কার্যত হিমশিম খেতে হয়েছে প্রশাসনকে।
এদিকে 9 সেপ্টেম্বর কানপুর পুলিশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে নষ্টের অভিযোগে 20 জনের বেশি ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। রাওয়াতপুর থানায় আরও 15 জন অজ্ঞাত পরিচয়ের দুষ্কৃতির নামে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। এই ঘটনাকে ঘিরে সরব হয়েছে AIMIM প্রধান আসাউদ্দিন ওয়াইসি। তিনি বলেছেন, ‘I Love Muhammad’ বলা কোনও অপরাধ নয়। যদি কেউ তা প্রমাণ করতে পারে, তাহলে আমি মাথা পেতে শাস্তি নেব। তিনি অভিযোগ করছেন, পুলিশ রাজনৈতিক চাপে পড়েই মুসলিমদের সঙ্গে এরকম দুর্ব্যবহার করছে।
তবে পুলিশ দাবি করছে যে, ‘I Love Muhammad’ বলার জন্য কারও বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়নি, বরং মিছিলে অন্য ধর্মের পোস্টার ও ব্যানার ছিড়ে ফেলার জন্যই আইনি ব্যবস্থার পথে হাঁটা হয়েছে। এমনকি এই আন্দোলনকে ঘিরে রাজনৈতিক জলঘোলাও সৃষ্টি হয়েছে। সমাজবাদী পার্টির মুখপাত্র আমিক জামাই প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আবার বিজেপির মুখপাত্র রাকেশ ত্রিপাঠী বলেছেন, কেউ যদি পুলিশের উপর হামলা করে, তাহলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।