প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গতকাল অর্থাৎ সোমবার রাত থেকে একনাগাড়ে বৃষ্টি হয়েই চলেছে কলকাতা এবং শহরতলিতে। জলমগ্ন হয়ে পড়েছে কলকাতার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। বিভিন্ন গলিপথও জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। বেলা বাড়লেও বহু বাড়ি ও গাড়ি এখনও জলের নীচে। তার উপর সকাল থেকে কলকাতায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একের পর এক মৃত্যুর খবর মিলছে। আর তাই নিয়ে এবার কলকাতা মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে দুষলেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।
মেয়রের প্রতি ক্ষুব্ধ শুভেন্দু
কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার সকালে একবালপুরের হোসেন শাহ রোডে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক প্রৌঢ়ের। পাশাপাশি নেতাজিনগর, বেনিয়াপুকুর বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর খবর মিলেছে। বেহালা এবং হরিদেবপুরেও দু’জন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছেন। এ ছাড়া গড়িয়াহাটেও এক জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। গড়িয়াহাট এবং গড়ফাতেও জল জমা এলাকা থেকেও দু’জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। আর এই দৃশ্য দেখে রীতিমত প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে সরাসরি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্ন তুললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে জলমগ্ন কলকাতার ছবি পোস্ট করে জানান, “মৃতদেহ ভাসছে জমা জলে, এই দৃশ্য দেখে মন খারাপ হয়ে যায়। আজকের দিনে যখন প্রযুক্তি এত উন্নত, কখন বৃষ্টি হবে, কত পরিমাণে হবে তার আভাস আগেই পাওয়া যায় তখন কলকাতা ও বিধাননগর পুর নিগমের মেয়রদের অদক্ষতা আর উদাসীনতার ফল শহরবাসীকে ভোগ করতে হয়।”
জলমগ্ন শহরে মৃত্যুর মিছিল !!!
মৃতদেহ ভাসছে জমা জলে, সকাল সকাল এই দৃশ্য দেখে মন খারাপ হয়ে যায়। কিন্তু এই দুর্দশার জন্য দায় কার?
এক রাতের বৃষ্টিতেই কলকাতা-সল্টলেক জলমগ্ন! ভাসছে শহর, বিপন্ন শহরবাসী, চরম দুর্ভোগ অফিস যাত্রীদের। আজকের দিনে যখন প্রযুক্তি এত উন্নত যে কখন বৃষ্টি… pic.twitter.com/6Hl4Zd68oJ
— Suvendu Adhikari (@SuvenduWB) September 23, 2025
কী বলছেন শুভেন্দু?
এদিন শুভেন্দু অধিকারী জলমগ্ন কলকাতার এই ভয়ংকর দৃশ্য নিয়ে প্রশাসনকে তোপ দাগিয়ে বলেন, “রাজ্য সরকার পূর্বের অভিজ্ঞতা থেকে কোনো শিক্ষা নেননি, বারবার একই চিত্র বছরের পর বছর দেখছে সাধারণ মানুষ। বিদ্যুৎ দফতরের দোষ তো একেবারে মারাত্মক। খোলা তারের এই বিপদের ব্যাপারে কেন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি? এখন অবধি সাতজন নিরীহ মানুষ মারা গেছেন। এটা আপনাদের ব্যর্থতা নয়, এটা অপরাধ, দোষ কার তা নির্ধারণ করে উপযুক্ত শাস্তি হওয়া উচিত।” এদিকে জল জমে গিয়েছে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের নিজের পাড়া চেতলাতেও। মঙ্গলবার সকালে পুরসভার কন্ট্রোল রুম থেকে শহরের জলযন্ত্রণার পরিস্থিতির উপর নজর রাখার সময় ফিরহাদ নিজেই জানালেন, “ছোটবেলা থেকে কলকাতায় এমন বৃষ্টি তিনি দেখেননি।”
আরও পড়ুন: স্কুল ইন্সপেক্টরের সই জাল করে হোম লোন! মালদায় গ্রেফতার স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা
প্রসঙ্গত, কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ জানিয়েছে, যে সব রাস্তায় আগে কখনও জল জমেনি, সেই রাস্তাও এখন জলের তলায়। এই সব এলাকা থেকে জল বার করার চেষ্টাও শুরু হয়েছে। গোটা শহরেই একই পরিস্থিতি। তাই এই দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে কলকাতাবাসীর উদ্দেশে মেয়র অনুরোধ করে বলেন যে, “আজকের দিনটা দয়া করে বাড়ি থেকে বেরোবেন না। অনেকে বেরিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছেন।” যদিও ফিরহাদের বক্তব্য, পুরসভার বাতিগুলি আগেই বন্ধ করে দেওযা হয়েছিল। অন্য কোনও কারণে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে থাকতে পারেন নিহতেরা।