সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের 80 তম অধিবেশনের বৈঠকে এক ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসলেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো (Prabowo Subianto)। বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির রাষ্ট্রপতি নিজের মুখে বললেন, “ওম শান্তি, শান্তি ওম।” হিন্দুধর্মের এই প্রার্থনা মন্ত্র উচ্চারণ করেই তিনি ধর্ম, বর্ণ, জাতি নির্বিশেষে শান্তির বার্তা ছড়ালেন গোটা বিশ্বজুড়ে।
জাতিসংঘে শান্তির ডাক
এদিন 19 মিনিটের ভাষণে প্রাবোও বলেছেন, ভয়, বর্ণ, বিদ্বেষ, ঘৃণা আর ধর্ম বৈষম্যের মতো মানবিক মূর্খতা আমাদেরকে ভবিষ্যতে বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। তাই তিনি বিশ্ববাসীকে ন্যায়, সমতা আর শান্তির পথেই এগিয়ে যেতে আহবান জানিয়েছেন।
নিজের ভাষণে প্রেসিডেন্ট প্রাবোও বলেছেন, ইন্দোনেশিয়া প্রয়োজনে গাজা কিংবা ফিলিস্তানের অন্যান্য অঞ্চলে 20 হাজার কিংবা তারও বেশি শান্তিরক্ষা সেনা পাঠাতে প্রস্তুত। তিনি বলেছেন, ইন্দোনেশিয়া জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনীর সবথেকে বড় অবদানকারী দেশ। আর আমরা শুধুমাত্র কথায় নয়, বরং বাস্তবে করে দেখাই। আর বিশ্ব শান্তি প্রতিরক্ষায় আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
🇮🇩President Prabowo Subianto of Indonesia the largest Muslim-majority country spoke at the United Nations on the necessity of ensuring security for Israel to achieve real peace, and ended his speech with the word: “Shalom.”
God bless this President. 🙏🏼 pic.twitter.com/O9EFKKwR4v
— Loay Alshareef لؤي الشريف (@lalshareef) September 23, 2025
প্রেসিডেন্ট আরও স্পষ্ট করে দেন যে, ইন্দোনেশিয়া দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানকে সমর্থন করে। তিনি বলেছেন, ফিলিস্তান ও ইসরাইল উভয় দেশকেই স্বাধীন নিরাপদ এবং সন্ত্রাসমুক্ত হতে হবে। এমনকি গাজার বিপর্যস্ত পরিস্থিতির প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, এই জাতিসংঘ যদি এখনই অবস্থান না নেয়, তাহলে বিশ্ব ভয়াবহ যুদ্ধের ভিতর প্রবেশ করবে।
ভাষণের শুরুতে প্রাবোও এও বলেছেন, রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান কখনও কখনও শুধুমাত্র সহিংসতার মাধ্যমে হয় না। কারণ সহিংসতা আরও সহিংসতা ডেকে আনে। আর এর একমাত্র সমাধান ইব্রাহিমের দুই বংশধর আরব এবং ইহুদি। মুসলিম এবং খ্রিস্টানরা সেখানে মিলেমিশে শান্তিতেই বসবাস করছে। এমনকি তিনি জানিয়েছেন, ইন্দোনেশিয়া এই ঐক্য প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় ভূমিকা নিতে বদ্ধপরিকর। আর বিশ্বের সমস্ত দেশকেই এই লক্ষ্য পূরণে এগিয়ে আসতে হবে।
আরও পড়ুনঃ ১৭ ছাত্রীকে যৌন হেনস্থা দিল্লির ভণ্ড বাবার! কে এই স্বামী চৈতন্যানন্দ সরস্বতী? খুলল মুখোশ
ধর্মীয় বার্তার মাধ্যমেই ভাষণের সমাপ্তি
বক্তৃতা শেষে তিনি এক বিরল কীর্তি ঘটালেন। তিনি বিভিন্ন ধর্মের মানুষজনদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেছেন, “আসসালামু আলাইকুম, ওয়ালাইকুম আসসালাম। শালোম, সালভে, ওম শান্তি শান্তি শান্তি ওম।” এই ধর্মীয় বার্তার মাধ্যমেই তিনি গোটা বিশ্বের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন।