সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: স্বঘোষিত গডম্যান খ্যাত স্বামী চৈতন্যানন্দ সরস্বতীকে (Swami Chaitanyananda Saraswati) নিয়ে চাঞ্চল্যকর অভিযোগে উত্তাল গোটা দিল্লি। কয়েকদিনের মধ্যেই পর্দা ফাঁস হয়েছে তাঁর একের পর এক কুকীর্তির। 17 জন ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে ইতিমধ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। এরপরেই সামনে এসেছে আরও ভয়াবহ রিপোর্ট।
ভর্তি নেওয়ার পর থেকেই ছাত্রীদের হয়রানি
এক ছাত্রী জানিয়েছে, 2024 সালের অক্টোবর মাসে ইনস্টিটিউটে ভর্তি নেওয়ার পর তাঁকে জোর করে একটি ফর্মে স্বাক্ষর করিয়েছিল ওই স্বামী চৈতন্যানন্দ সরস্বতী। কয়েক মাস পর ডিসেম্বর মাসে হোস্টেলের সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে তাঁর কোমরে হালকা চোট লেগেছিল। আর সেসময় এক্স-রে রিপোর্ট দেখার নাম করে স্বামী চৈতন্যানন্দ তাঁর ব্যক্তিগত ফোন নম্বর হাতিয়ে নেন। আর সেখান থেকেই আপত্তিকর মেসেজ শুরু হয়। “বেবি আই লাভ ইউ”, “তুমি আজ খুব সুন্দর সেজেছ”, এমনকি তাঁর কোঁকড়ানো চুল নিয়েও তিনি অশালীন মন্তব্য করেছিলেন।
India TV এর রিপোর্ট অনুযায়ী ওই ছাত্রী দাবি করছে, স্বামী চৈতন্যানন্দকে মেসেজের উত্তর না দেওয়ায় তাঁকে নোটিশ দেওয়া হয়। এমনকি অভিযোগ আরও গুরুতর হয় যখন জানা যায় যে, নতুন বিএমডব্লিউ গাড়ির পুজোর নাম করে কয়েকজন ছাত্রীকে রাতে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। আর এরপর স্বামী চৈতন্যানন্দ কিছু ছাত্রীকে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করার জন্য মেসেজও পাঠান।
শুধু তাই নয়, ওই ছাত্রীর ফোন থেকে সেই সমস্ত চ্যাট জোর করে মুছে ফেলে ইনস্টিটিউটের কর্মীরা। শ্বেতা, ভবনা এবং কাজল, এই তিনজনই এই চক্রান্তে জড়িত। এমনকি একটি ক্ষমাপত্রও লিখিয়ে নেন বলে অভিযোগ।
হোলির দিনেও কুকীর্তি
এদিকে 2025 সালের হোলির দিন আরও এক অমানবিক ঘটনার অভিযোগ উঠেছিল স্বামী চৈতন্যানন্দের বিরুদ্ধে। ছাত্রীদের সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে তাঁদের সঙ্গেই রং খেলায় মাতেন স্বামী চৈতন্যানন্দ। পরে এক ছাত্রী অভিযোগ করে, তাঁকে অফিসে ডেকে নিয়ে গিয়ে জোর করে ভিডিও রেকর্ড করা হয়। এমনকি কুরুচিকর কথাও বলা হয়।
আরও পড়ুনঃ সাগদিঘিতে মুখোমুখি সংঘর্ষ দুই লরির, দাউদাউ করে জ্বলে উঠল আগুন! মৃত দুই
এফআইআর-এ আরও উল্লেখ করা হয় যে, 2025 সালের জুন মাসে ঋষিকেশ সফরের সময় একাধিক ছাত্রীকে স্বামী চৈতন্যানন্দ শরীর স্পর্শ করেন। এমনকি যে ছাত্রী প্রতিবাদ করার সাহস দেখিয়েছিল, তাঁর পরীক্ষায় বসতেও বাধা দেওয়া হয় আর নম্বরও কেটে নেওয়া হয়। সবথেকে বড় ব্যাপার, তিনি তাঁর ভাইকে অপহরণেরও হুমকি দেন। ছাত্রীর মোবাইল থেকে বাবা-মায়ের নম্বর ব্লক করে দেওয়া হয়, যাতে তাঁরা যোগাযোগ না করতে পারে। আর গোটা ঘটনার পিছনে ইনস্টিটিউটের কর্মী শ্বেতা, ভবনা এবং কাজলের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে বলেই অভিযোগ।