সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: অবসর জীবনের সবথেকে বড় হাতিয়ার বলা যায় পিএফ অ্যাকাউন্ট (PF Account)। কারণ কর্মজীবন জুড়ে বছরের পর বছর ধরে কষ্টার্জিত টাকা এই পিএফ অ্যাকাউন্টেই জমা থাকে। অবসরের পর সেই টাকা পাওয়ার জন্যই অধীর আগ্রহে বসে থাকে লক্ষ লক্ষ সরকারি কর্মচারী। কিন্তু বাস্তবে বিভিন্ন রকম প্রশাসনিক জটিলতা বা কাগজপত্রের ঝামেলার কারণে সেই টাকা আটকে যায়। কারোর অ্যাকাউন্টে নিয়মিত টাকা জমা পড়ে না, আবার কোথাও চাকরি বদলের পর পুরনো পিএফ অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফারই হয় না। ফলে যোগ্য ব্যক্তিরা তাদের প্রাপ্য টাকাটুকু পায় না।
বর্তমানের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই স্থায়ী সমস্যার সমাধান আনল এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশন (ইপিএফও)। কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আর কোনও অজুহাতে গ্রাহকদের টাকা আটকে রেখে দেওয়া যাবে না। অবসরের সময় পুরো টাকা না হলেও অ্যাকাউন্টে যত টাকা জমা রয়েছে, সেই টাকা অবিলম্বে গ্রাহককে ট্রান্সফার করতে হবে। পরে হিসাব মিলিয়ে বাকি টাকা পরিশোধ করা যাবে।
নতুন নিয়মে স্বস্তির নিশ্বাস কর্মীদের
পিএফ কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছে, বহু কোম্পানি কর্মচারীর পক্ষে নিয়মিত টাকা জমা দেয় না। কখনও নির্দিষ্ট অঙ্কের থেকে কম টাকা জমা দেয়, আবার কখনও কর্মক্ষেত্র বদলের পর পুরনো সংস্থার তথ্য পিএফ অ্যাকাউন্টে থাকে না। এর জন্য জটিলতা পোহাতে হয় সরকারি কর্মচারীদের। আর এবার সেই সমস্যার সমাধান করা হল।
সমস্ত আঞ্চলিক অফিসগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে কোনওভাবেই টাকা আটকে রাখা না হয়। পাশাপাশি অ্যাকাউন্টে বর্তমানে যত টাকা রয়েছে, সমস্ত টাকা গ্রাহককে ফেরত দিতে হবে। আর বাকি টাকা পরে দেওয়া যাবে, যখন নিয়মমাফিক হিসাব মিটবে।
ট্রান্সফার সার্টিফিকেট কর্মীদের হাতেই
প্রসঙ্গত, এবার পিএফ অ্যাকাউন্টে আরও এক পরিবর্তন আনা হয়েছে। চাকরি পরিবর্তনের সময় কর্মীর পিএফ-এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য ট্রান্সফার সার্টিফিকেট দরকার পরে। আর আগে এই ডকুমেন্ট জমা দেওয়ার দায়িত্ব থাকতো পুরনো সংস্থার হাতেই। সেখানেই তৈরি হত বিপাক। অনেক সময় পুরনো সংস্থা তা পাঠাতে পারত না। ফলে টাকা আটকে যেত।
আরও পড়ুনঃ লাগবে না মোবাইল বা QR কোড, আঙুল দিয়েই হবে পেমেন্ট! বাজারে আসছে ThumbPay
তবে নতুন নিয়মে গ্রাহক নিজেই তার মেম্বার পোর্টাল থেকে অনলাইনে এই ট্রান্সফার সার্টিফিকেট ডাউনলোড করে নিতে পারবে। এতে থাকবে সুদ সহ ব্যালেন্স, ইপিএস বা পেনশন খাতে জমা টাকা সহ সমস্ত যাবতীয় খুঁটিনাটি তথ্য। এর ফলে পেনশন সংক্রান্ত জটিলতা দূর হবে। এমনটাই মনে করছে কর্তৃপক্ষ।