সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: টানা বৃষ্টিতে জলে তলিয়ে গিয়েছিল মহানগর। রাস্তা থেকে ঘরবাড়ি, সবেতেই বুক সমান জল। এমনকি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ গিয়েছে দশজনের। স্বাভাবিকভাবেই বিরোধীরা এর দোষ চাপিয়েছে শাসকদলের উপরে। তবে বৃহস্পতিবার নিউ আলিপুরের সুরুচি সংঘের পুজো উদ্বোধনে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) জানিয়ে দিলেন, মানুষের আশীর্বাদে তিনি আবারও ক্ষমতায় ফিরলে শহরকে জল যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেবেন।
পাল্টা হুশিয়ারি মমতার
ক্লাব উদ্বোধনের মঞ্চে দাঁড়িয়ে এদিন বিরোধীদের তীব্র আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, বাংলার মানুষকে আমি পাশে পেয়েছি। আর পাবও। তোমরা যতই সমালোচনা কর না কেন, আমরা জল সরাতে পারি। বাংলা ইতিমধ্যেই ৫ লক্ষ পুকুর কেটেছে। তাই চাইলে দেখাতে পারব, কীভাবে এই সমস্যা মোকাবিলা করতে পারি। এমনকি তিনি আরও বলেন, আগামী দিনে যদি আমি আপনাদের আশীর্বাদে আবারও ফিরে আসতে পারি, তাহলে প্রমাণ করে দেব যে এর বিকল্প কী হতে পারে। তারা কিছু না করলে আমি সমাধান বাতলে দেব।
এদিকে সিপিএম থেকে বিজেপি, কেউই জল যন্ত্রণার দায়ে সরকারকে দোষারোপ করতে ছাড়েনি। তবে মমতার বার্তা ছিল সোজাসাপ্টা। তিনি বলেছেন, প্রথমে নিজেদের মুখ আয়নায় দেখে আসুন। তারপরে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপাতে আসবেন।
শহরের বর্তমান অবস্থা
আবহাওয়া দপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী, মাত্র দু’দিনে শহরে ৩০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। সোমবার গভীর রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত টানা বৃষ্টিতে পরিস্থিতি একেবারে টালমাটাল হয়ে পড়েছে। যদিও বুধবার থেকে ধীরে ধীরে জল সরতে শুরু করে। কলকাতা পুরসভার দাবি, আমহার্স্ট স্ট্রিট, সুকিয়া স্ট্রিট, ঠনঠনিয়ার মতো জায়গা ইতিমধ্যেই স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ইএম বাইপাস লাগোয়া অঞ্চল, জোকার একাংশে এখনও জল জমে রয়েছে। তবে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, খুব দ্রুত সেখানকার পরিস্থিতির স্বাভাবিক হবে।
আরও পড়ুনঃ গঙ্গাভাঙনে উদ্বিগ্ন শ্রীরামপুর! তলিয়ে যেতে পারে একাধিক বসতি, জমি
তবে এই বন্যা পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু আরও আতঙ্ক বাড়িয়ে তুলেছে। ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্ট এ বিষয়ে মামলা গ্রহণ করেছে। আর আদালতের নির্দেশের রাজ্য সরকারের তরফ থেকে কলকাতা পৌরসভা এবং সিইএসসি-কে বিস্তারিত রিপোর্টও জমা দিতে বলা হয়েছে। বিশেষ করে নিকাশি ব্যবস্থা এবং বিদ্যুৎ নিরাপত্তা নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখা চাওয়া হয়েছে। এই মামলার আগামী শুনানি ৭ নভেম্বর।